পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূবৰ্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ & রায়গঞ্জ-কলিকাতা হইতে ২৮৪ মাইল দূর। ইহা দিনাজপুর জেলার একটি প্রসিদ্ধ কারবারের স্থান এবং ধান ও পাটের একটি বড় গঞ্জ । এখানে একটি মুনসেফী আদালত আছে। রায়গঞ্জ হইতে ১৪ মাইল দক্ষিণে মহানন্দাকুলে চূড়ামন গ্রামে একঘর বন্ধিষ্ণু ও প্রাচীন জমিদাৰ বংশের বাস। নদীতীরে তাঁহাদের বাড়ীটি অতি সুন্দর। বারসোই জংসন—কলিকাতা হইতে ২৯৭ মাইল দূর। রায়গঞ্জের ঠিক পরের ও ইহার আগের স্টেশন কাচনা হইতে পুণিয়া জেলা তথা বিহার প্রদেশ আরম্ভ। মহানন্দার পূর্ব তীরে বারসোই একটি বাণিজ্য কেন্দ্র। স্টেশন হইতে নদীর তীরের মালগুদাম পর্য্যন্ত একটি সাইডিং চলিয়া গিয়াছে। এখান হইতে একটি শাখা লাইন ৩৫ মাইল দূরবর্তী কিষণগঞ্জ জংশন পর্য্যস্ত গিয়াছে। ডালকোলহা—বারসোই জংশন হইতে ১৮ মাইল দূর। স্টেশনের প্রায় ৪ মাইল উত্তরে মহানন্দার পূর্বকূলে অসুরগড় নামে একটি প্রাচীন উচচ দুগের ভগ্নাবশেষ দৃষ্ট হয়। কথিত আছে, রাজা বিক্রমাদিত্যের রাজত্বকালে অসুর, বেণু, বারজান, নানহা ও কানুহ নামে পাঁচ ভাই নিজেদের বাসের জন্য রাতারাতি পাঁচটি দুর্গ নিৰ্ম্মাণ করেন। কিষণগঞ্জ মহকুমার উত্তর অংশে ৰেণু ও বারজানের নামে দুটি দুর্গের ভগ্নাবশেষ দৃষ্ট হয়। অসুর গড়ে এক জন মুসলমান পীরের সমাধিতে দিনাজপুরের নেকমরদের মেলার পর বহু লোক আসিয়া থাকে। কিষণগঞ্জ জংশন—বারসোই জংশন হইতে ৩৫ মাইল দূর। ইহা পুণিয়া জেলার একটি মহকুমা । সীমান্ত ভূমিতে যেরূপ হইয়া থাকে এই মহকুমার স্থানীয় মিশ্র ভাষা কিষণগঞ্জিয়া বা সিরিপুরিয়া প্রধানত: বাংলা হইলেও উহাতে মৈথিলীর কিছু কিছ মিশ্রণ আছে এবং সাধারণত: কায়ের্থী অক্ষরে ইহ। লিখিত হয়। দাজিজলিং রেলপথের একটি শাখা শিলিগুড়ি হইতে এখানে আসিয়া পূবর্ববঙ্গ রেলপথের সহিত মিশিয়াছে। কিষণগঞ্জ মিউনিসিপ্যালিটির অন্তর্গত খাগড়া গ্রামে একটি পুরাতন নবাববংশের বাস আছে, ইহারা পুণিয়া জেলার প্রসিদ্ধ জমিদার। এই বংশের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ খা দস্তুর শের শাহের বিরুদ্ধে যুদ্ধে হুমায়ুনকে সাহায্য করায় তাহার সনদ বলে ১৫৪৫ খৃষ্টাব্দে সূৰ্য্যপুর পরগণার জমিদারী প্রাপ্ত হন। খাগড়ার নবাবদিগকে দেশ রক্ষার জন্য নেপালী প্রভৃতি আক্রমণকারীদের সহিত বহু বার যুদ্ধ করিতে হইয়াছে। খাগড়ার প্রসিদ্ধি এখানকার বৃহৎ মেলার জন্য। ১৮৮৩ খৃষ্টাব্দে নবাব আতাহলেন । এই মেলার আরম্ভ করেন। তদবধি শীতকালে একমাস ব্যাপী এই মেলায় ৰহ লোক যোগ দিয়া আসিতেছেন। অসংখ্য গোরু, ঘোড়া, হাতী, উট এবং নানারূপ কৃষিজাত দ্রব্য এই মেলায় বিক্রয় হয় । কাটিহার জংশন-কলিকাতা হইতে পাবর্বতীপুর জংশন হইয়া ৩৪০ মাইল ও লালগোলা ঘাট হইয়৷ ২৬৪ মাইল দূর। ইহা পুণিয়া জেলার অধীন একটি বিখ্যাত বাণিজ্য স্থান। এখানকার গল্পটি বেশ বড়। আটা, ময়দা, তৈল ও পাটের কয়েকটি কল এখানে আছে এবং এখান হইতে প্রচুর পরিমাণে চাউল, ময়দা ও তৈলবীজ (সরিষা, তিল প্রভৃতি) চালান যায়। এই স্থানের পুরাতন