পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

あゲ वां२लांग्न थगर्थ्यं ত্রিবেণী তাহার পূর্ব সমৃদ্ধি হারাইলেও তীর্থ গৌরব হারায় নাই। যাহারা প্রয়াগের যুক্ত বেণীতে স্নান করেন, তাহারা ত্রিবেণীর মুক্ত বেণীতে স্নান করাও অবশ্য কৰ্ত্তব্য মনে করেন। দশহরা, বারুণী, মকরসংক্রাস্তি, মাঘীপূর্ণিমা, বিষ্ণুপদী সংক্রান্তি ও গ্রহণ উপলক্ষে সহস্ৰ সহস্র যাত্রীর সমাগম হয়। এখানকার বেণীমাধবের মন্দিরে বহু যাত্রী দেবদর্শন ও দেবাচৰ্চনা করিয়া থাকেন। ত্ৰিবেণীর মহাশ্মশানে লোকে বছর হইতে শাহ করতে আসে। নবদ্বীপের ন্যায় ত্রিবেণীও এককালে সংস্কৃত চচর্চার জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। দেশবিশ্রুত শ্রুতিধর পণ্ডিত জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন ত্রিবেণীর অধিবাসী ছিলেন। তাহার অসাধারণ সমৃতিশক্তি সম্বন্ধে এইরূপ গল্প প্রচলিত আছে, যে একদিন গঙ্গার ঘাটে বসিয়া তিনি সন্ধ্যা করিতেছেন এমন সময় নৌকাযোগে দুইজন গোরা সেখানে উপস্থিত হইয়া প্রথমে বচসা ও পরে মারামারি করে। জগন্নাথ ইংরেজী আদৌ জানিতেন না, কিন্তু এই ব্যাপারে আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়া গোরা দুইটির ইংরেজী বাদানুবাদ অবিকল বলিয়া দিতে সক্ষম হইয়াছিলেন। ত্রিবেণীর নিকটস্থ বাঘাটি গ্রাম হিন্দুকলেজের খ্যাতনামা ছাত্র বাগমীপ্রবর রামগোপাল ঘোষের পৈতৃক বাসস্থান। রামগোপাল ১৮১৫ খৃষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ ও ১৮৬৮ খৃষ্টাব্দে পরলোকগমন করেন। তাহার সমসাময়িককালে তিনি ইংরেজী শিক্ষিত সমাজের অন্যতম নেতা ছিলেন এবং দেশের হিতকর বহু প্রতিষ্ঠানর সহিত তাহার ঘনিষ্ঠ সংযোগ ছিল। অপূবৰ বক্তৃতাশক্তির জন্য লোকে তাঁহাকে সুবিখ্যাত বাগীি এডমণ্ডবার্কের সহিত তুলনা করিত। এক সময়ে কলিকাতার নিমতলাস্থ শ্মশান ঘাটে শবদাহ বন্ধ করিবার জন্য সরকার কর্তৃক প্রস্তাব হয়। রামগোপাল বাকৃপটুতা ও যুক্তিতর্কের সাহায্যে গঙ্গাগর্ভে হিন্দুর শব সৎকারের এই অধিকার অক্ষুন্ন রাখেন। নিমতলার শ্মশান ঘাটে তাহার একটি মৰ্ম্মর নিৰ্ম্মিত স্মৃতি-ফলক আছে। - বাঘাটি গ্রামে “ ডাকাতে কালী ” নামে এক প্রাচীন কালী আছেন। প্রবাদ, ডাকাতের এই কালীর নিকট নরবলি দিয়া ডাকাতি করিতে বাহির হইত। বলাগড়—ব্যাণ্ডেল জংশন হইতে ১৬ মাইল দূর। ইহাও একটি প্রাচীন স্থান। এখানে পঞ্চমৰ্ত্তী আসন সংযুক্ত এক চণ্ডীমন্দির আছে। উহা বলয়োপপীঠ নামে প্রসিদ্ধ। বলাগড়ের রাধাগোবিন্দ মন্দির একটি দ্রষ্টব্য বস্তু। এখানকার চণ্ডী মন্দিরের প্রাচীর গাত্রে ইষ্টকের উপর অতি সুন্দর কারুকার্য্য আছে। নিত্যানন্দের দুহিতা vগঙ্গাগোস্বামিনীর বংশধরগণ এই স্থানে বাস করেন বলিয়া ইহা বৈষ্ণবগণের নিকট শ্রীপটি বলিয়া সম্মানিত। বাংলার বরণ্যে সস্তান পরলোকগত স্যর আশুতোষ মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের পৈতৃক নিবাস ছিল বলাগড়ে। গুপ্তিপাড়া—ব্যাণ্ডেল জংশন হইতে ২২ মাইল দূর। অনেকে অনুমান করেন যে ইহার পূবর্বনাম গুপ্তপল্লী। এই স্থানে বহু প্রাচীন দেবালয় আছে। তন্মধ্যে বৃন্দাবনচন্দ্র, কৃষ্ণচন্দ্র, রামচন্দ্র ও চৈতন্যদেবের মন্দির সমধিক প্রসিদ্ধ। বৃন্দাবনচন্দ্রের মন্দির সবর্বাপেক্ষা সুন্দর এবং ইহার কারুকার্য্য অতি অপূবৰ। লাল ইটে নিৰ্ম্মিত মন্দির গাত্রে দেব দেবীর মুক্তি, রামায়ণ, মহাভারত প্রভূতির ঘটনাবলী ও বৈষ্ণবদিগের আখ্যান উৎকীর্ণ আছে। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগে