পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> 、、 बांदलांम्न बभ* গৌড়পতি হুসেন শাহের জনৈক উচ্চ কর্মচারী বলিয়। কথিত রাজা মৰল সেনের বাটির ভগ্নাবশেষ দৃষ্ট হয় ; এই স্থান হইতে হুসেন শাহের রজত মুদ্রা পাওয়া গিয়াছে। মহেশাল হইতে ৩ মাইল পশ্চিমে জীয়ৎকুড়ি গ্রাম, এই স্থানের একটি অতি প্রাচীন জলাশয়ের নাম “ জীবৎকুণ্ড ”। এই জলাশয়ের নাম হইতেই গ্রামের নাম জীয়ৎকুণ্ড বা জীয়ৎকুড়ি হইয়াছে। এই জলাশয়ের চতুঃপাশ্বে অনেক ইষ্টকস্তুপ ও দেবদেবীর ভগ্নমূত্তি দৃষ্ট হয়। জলাশয়টির মধ্যে একটি অৰ্দ্ধ প্রেথিত দেবমুত্তি কুণ্ডের অধিষ্ঠাত্রী দেবী বলিয়া অভিহিত হন। জীয়ৎকুড়ি গ্রামটি যে এককালে একটি সমৃদ্ধ নগর ছিল তাহা ইহার বর্তমান অবস্থা হইতেও অনেকটা উপলব্ধি করিতে পারা যায়। এইরূপ কথিত আছে যে হুসেন শাহ যখন গৌড়ের অধীশ্বর তখন এই স্থানে একজন পরাক্রমশালী ব্রাহ্মণ জমিদার বাস করিতেন। তাঁহার এক তিওর জাতীয় ভূত্য ছিল। ভূত্যটি অত্যন্ত বুদ্ধিমান ও প্রভুর প্রিয়পাত্র ছিল এবং জমিদারী পরিচালনা বিষয়ে অনেক সময়ে প্রভুকে পরামর্শ প্রদান করিত। উক্ত ব্ৰাহ্মণ জমিদার নিঃসস্তান ছিলেন। সস্ত্রীক তীর্থ পর্য্যটনে বাহির হইবার সময় তিনি তিওর-ভৃত্যকে জমিদারী পরিচালনার ভার অর্পণ করিয়া যান। ব্ৰাহ্মণের প্রত্যাগমন করিতে বিলম্ব হয়। ইতিমধ্যে ভূত্য রটাইয় দেয় যে তাহার প্রভুর মৃত্যু হইয়াছে এবং দানসূত্রে সেই এখন সমস্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকারী। তীর্থকৃত্য করিবার পর ফিরিয়া আসিয়া ব্ৰাহ্মণ এই ব্যাপার দেখিয়া বিলিত হইলেন। তিনি ভূত্যকে ডাকিয়া সম্পত্তি পুন: প্রত্যপণ করিতে বলিলে সে উত্তর দিল, “প্ৰভু, আপনি তীর্থযাত্রায় বাহির হইবার সময় আমার নিকট সম্পত্তি ন্যাস রাখার সাক্ষ্যস্বরূপ চবিবত তামুল রাখিয়া গিয়াছিলেন। যদি ফিরাইয়া লইতে হয় উহাশুদ্ধই লউন। " প্রবাদ, এই কথার পর ব্রাহ্মণ সস্ত্রীক সেই স্থান চিরদিনের জন্য পরিত্যাগ করিয়া চলিয়া যান। ব্রাহ্মণের বিপুল ঐশ্বৰ্য্যলাভে তিওরের মনে দম্ভের সঞ্চার হয় এবং সে নিজেকে “রাজা ’ বলিয়া প্রচার করে ও অত্যাচারী হইয়া উঠে। তাহার দমনের জন্য ছসেন শাহ একদল সৈন্য প্রেরণ করেন, কিন্তু তিওররাজকে তাহারা পরাজিত করিতে অসমর্থ হয়। প্রবাদ, যে নিকটস্থ একটি কুণ্ডের জলস্পর্শে মৃত তিওর সৈন্যগণ পুনর্জীবন লাভ করায় বাদশাহী ফৌজ তাহাদিগের সহিত আটিয়া উঠিতে পারে না। এই কুণ্ডই “ জীয়ৎকুণ্ড” নামে খ্যাত। অবশেষে মুসলমান সেনাপতি গোরক্তের দ্বারা কুণ্ডের জল অপবিত্র করিয়া দিলে উহার সঞ্জীৰনী শক্তি লোপ পায় এবং তিওররাজের পতন ঘটে । কথিত আছে যে তিওররাজ কুণ্ডের সুড়ঙ্গ পথ দিয়া পাতালে গিয়া এখনও অবস্থান করিতেছেন। খিদিরপুর হল্ট্ স্টেশনের এক মাইলের কিছু অধিক পূর্বদিকে ভাগীরথীর পশ্চিম কূলে সূতী একটি প্রসিদ্ধ গ্রাম। সূতীর নিকটেই গঙ্গার প্রধান ধারা হইতে ভাগীরথী বিচিছন্ন হইয়াছে। সূতীর পার্শ্বে বাজিতপুর গ্রামে সবের্ধশ্বর মহাদেবের মন্দিরের গাত্রে একটি যুদ্ধের ছবি অঙ্কিত আছে; প্রবাদ ইহা সূতীর যুদ্ধের (গিরিয়ার দ্বিতীয় যুদ্ধের) সারণে অঙ্কিত। - সূতীর নিকট ছাপঘাট গ্রামে প্রসিদ্ধ ফকির সৈয়দ মর্তুজা হিন্দ ও আনন্দময়ীর সমাধি এ অঞ্চলের সকলেরই দ্রষ্টব্য। জঙ্গীপুর রোড স্টেশনের প্রসঙ্গে ইহাদের কথা বলা হইয়াছে। ধুলিয়ান গ্যান্‌জেস—ৰ্যাণ্ডেল জংশন হইতে ১৪৯ মাইল দূর। ইহা মুর্শিদাবাদ জেলা তথা বাংলার শেষ স্টেশন। ইহার নিকট দিয়া ভাগীয়ৰী ও পদ্মা এই উভয় নদী প্রবাহিত। ইহা একটি উন্নতিশীল বাণিজ্যপ্রধান স্থান। এখানকার তাল ও জাতি অতি উৎকৃষ্ট। এখানে একটি মিউনিসিপ্যালিটি আছে।