পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(ক)—হাওড়া-খড়গপুর-দাতম রামরাজাতলা—হাওড়া হইতে ৪ মাইল দূর। এখানে প্রতি বৎসর চৈত্র মাসের রামনবমী তিথি হইতে শ্রাবণ মাসের শেষ রবিবার পর্য্যন্ত মহাসমারোহেরামরাজার পূজা হইয়া থাকে। রাম, সীতা, লক্ষ্মণ, ভরত, শক্রয় ও হনুমান প্রভৃতি সমন্বিত রামরাজা প্রতিমূৰ্ত্তি অতি বৃহৎ আকারে মিম্মিত হয়। এত বড় প্রতিমা সচরাচর দেখা যায় না। রামরাজাতন্ত্রার মেলায় প্রত্যহ বহু যাত্রীর সমাগম হইয়া থাকে। তবে দশহরা, অম্বুবাচী, স্নানযাত্রা ও রথযাত্রা উপলক্ষে যাত্রীর ভিড় কিছু आश्रेिक-इग्न ! রামরাজাতলা স্টেশনের নিকটে অবস্থিত “শঙ্কর মঠ" একটি স্রষ্টব্য বস্তু। একটি মনোরম উদ্যান মধ্যে এই মঠটি অবস্থিত। ইহার নাটমন্দিরের প্রাচীর গাত্রে বিষ্ণুর দশাবতার ও অন্যান্য পৌরাণিক চিত্রাবলী উৎকীর্ণ আছে। মঠে জগদগুরু শঙ্করাচার্য্য ও সাবিত্রী দেবীর মুক্তি প্রতিষ্ঠিত। প্রতি বৎসর বৈশাখ মাসের শুক্ল পঞ্চমীর দিন শঙ্করাচার্য্যের জন্ম তিথির পূজা হয় এবং ঐ দিন রবিবার না হইলে পরবর্তী রবিবারে মহোৎসব অনুষ্ঠিত হইয়া থাকে। সাবিত্রী চতুর্দশী তিথিতে সাবিত্রী দেবীকে দর্শন করিবার জন্য বহু মহিলার সমাগম হয়। শঙ্কর মঠের সংলগ্ন একটি চতুষ্পাঠী আছে। তথায় বেদান্ত ও দর্শন শাস্ত্র পড়ান হয়। রামরাজাতলার নিকটবর্তী বাকসাড়া নামক পল্লীতে বৈশাখী পূর্ণিমার দিন হইতে শ্রাবণ মাসের শেষ রবিবার পর্য্যস্ত “নবনারীকুঞ্জর ” নামে আর একটি বারোয়ারি অনুষ্ঠিত হয়। আটজন প্রধান সখীসহ শ্রীরাধিক একটি হস্তীর আকার ধারণ করিয়া শ্ৰীকৃষ্ণকে পৃষ্ঠে ধারণ করিয়াছিলেন,— ইহাই হইল নবনারীকুঞ্জরের পরিচয়। এই প্রতিমাটি একটি দেখিবার বস্তু। এখানেও বহু লোকের সমাগম হয়। শ্রাবণ মাসের শেষ রবিবারে মহাসমারোহে রামরাজা ও নবনারীকুঞ্জর প্রতিমাদ্বয় শোভাযাত্রাসহ গঙ্গায় বিসর্জন দেওয়া হয়। এই শোভাযাত্রা দেখিবার জন্য রামরাজাতলায় অলংখ্য যাত্রীর সমাগম হইয়া থাকে। সাঁতরাগাছি-হাওড়া হইতে ৫ মাইল দূর। ইহা একটি বদ্ধিষ্ণু পল্লী। এখানে বাংলা নাগপুর রেলপথের প্রধান ইয়ার্ড অবস্থিত। এখান হইতে একটি শাখা লাইন ৭ মাইল দূরবর্তী হাওড়া শহরের দক্ষিণস্থ শালিমার পর্য্যন্ত গিয়াছে। এই স্থান রঙের কারখানার জন্য বিখ্যাত। শালিমার ও খিদিরপুরের মধ্যে বি, এন, আর-এর খেয়া জাহাজে করিয়া মালগাড়ী পার করা হয়। মৌড়িগ্রাম—হাওড়া হইতে ৭ মাইল দূর। স্টেশনের নিকটে একটি কাপড়ের কল আছে। স্টেশন হইতে মহীয়াড়ি বা মৌড়িগ্রাম প্রায় দেড় মাইল দূর। মৌড়িগ্রামের সরস্বতী নদী তীরস্থ শ্মশানেশ্বর শিবের মন্দির অতি প্রাচীন। স্থানীয় জমিদার কুণ্ডুবাবুদের গৃহদেবতা ^ লক্ষ্মী-জনাৰ্দ্দনের রাসযাত্রা উপলক্ষে এখানে বিশেষ ধুমধাম হয় ও সপ্তাহকালব্যাপী একটি মেলা বসে। এই মেলায় নানাস্থান হইতে বহযাত্রীর সমাগম হয়। 9a. ...,