পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SSR বাংলায় ভ্রমণ কোলাঘাট-হাওড়া হইতে ৩৫ মাইল দূর। এই স্থান হইতে মেদিনীপুর জেলার আরম্ভ। স্থানটি রূপনারায়ণ নদের তীরে অবস্থিত। এই স্থানে রূপনারায়ণ নদের উপর বাংলা নাগপুর রেলপথের এক প্রকাণ্ড সেতু আছে। বর্ষাকালে রূপনারায়ণের রূপ অতি সুন্দর হইয় উঠে। কোলাঘাট একটি বিখ্যাত বাণিজ্য কেন্দ্র । পাশকুড়া—হাওড়া হইতে ৪৪ মাইল। ইহা মেদিনীপুর জেলার একটি প্রসিদ্ধ বাণিজ্যকেন্দ্র ও সমৃদ্ধস্থান। এখান হইতে আখের গুড়, বেগুন, মুলা ও কপি প্রভূতি নানাবিধ দ্রব্য কলিকাতা, টাটানগর ও খড়গপুর প্রভৃতি স্থানে রপ্তানি হইয়া থাকে। কেনাল বা কাটাখালের জল সরবরাহের জন্য এখানে একটি “ এনিকটু ” আছে। এখানে ডাক্‌বাংলা, দাতব্য চিকিৎসালয়, উচচ ইংরেজী বিদ্যালয়, বালিক বিদ্যালয় ও একটি বয়ন বিদ্যালয় আছে। স্টেশনের অনতিদূরে “ জানুখণ্ডী" নামে একটি বৃহৎ দীঘি আছে। পাঁশকুড়া হইতে দুই মাইল উত্তরে মহৎপুর নামক গ্রামে তারকেশ্বরের ন্যায় শ্মশানেশ্বর শিবের মন্দির ও তৎপাশে একটি পুষ্করিণী আছে। রোগ আরোগ্য কামনায় বহু ব্যক্তি এই মন্দিরে আসিয়া ধর্ণ দেয়। চড়কের সময় এইস্থানে একটি মেলা হয়। পাশকুড়া হইতে ৪ মাইল দক্ষিণ-পূবর্ব দিকে রঘুনাথবাড়ী গ্রামে রঘুনাথজীউ বা রামচন্দ্রের একটি মন্দির আছে। . প্রতি বৎসর বিজয়া-দশমীর দিন হইতে এখানে সপ্তাহব্যাপী একটি মেলা হয়। রঘুনাথজীর মন্দির প্রাঙ্গনে একটি ছোট কামান আছে। উহা কাশীজোড়ার ক্ষত্রিয়রাজগণের প্রাচীন কামা বলিয়া বিখ্যাত। রঘুনাথবাড়ী হইতে ৩ মাইল দূরে হরশঙ্কর গ্রামে এই রাজবংশের গড়ের চিহ্ন ও একটি বৃহৎ কামান দেখা যায়। রঘুনাথবাড়ীতে অতি সুন্দর ও মূল্যবান মছলন্দ বা মাদুর প্রস্তুত হয়। পাঁশকুড়া স্টেশন হইতে এক মাইল দূরে প্রতাপপুর নামে একটি মুসলমানপ্রধান গ্রাম আছে। এখানকার হাটে প্রতি বৃহস্পতিবার অসংখ্য গরু, ছাগল, ভেড়া ও হাস প্রভৃতি বিক্রয় হয়। এখানে প্রচুর পরিমাণে র্তীতের কাপড় পাওয়া যায় । - তমলুক পাঁশকুড়া হইতে মোটরযোগে মেদিনীপুর জেলার সবর্বাপেক্ষা প্রাচীন স্থান তমলুকে যাইতে হয়। পাশকুড়া হইতে তমলুক ১৬ মাইল দূর। ইহা রূপনারায়ণ নদের পশ্চিম তটে অবস্থিত। প্রাচীনকালে তমলুক বহু নামে পরিচিত ছিল, যথা, তাম্রলিপ্তি, তাম্রলিপ্ত, তমোলিপ্তি, দামলিপ্তি, বিষ্ণুগৃহ, বেলাকুল ইত্যাদি। চৈনিক পৰ্য্যটকগণ ইহাকে তেমোলিতি ও “তম্মোলিক্তি" বলিয়া বণনা করিয়াছেন। ঐতিহাসিকগণ অনুমান করেন পুরাকালে বাংলাদেশে দ্রাবিড় জাতির বিশেষ প্রাধান্য ছিল এবং তমলুক তাহাদেরই একটি প্রধান নগর ছিল। তামিল-জাতি যে বাংলাদেশ হইতে দক্ষিণদেশে গিয়াছিলেন এবং তৎকালীন বাংলার রাজধানী তমোলিক্তি বা তাম্রলিপ্ত হইতে তামিলজাতির নামকরণ হইয়াছে, অনেকেই পণ্ডিত কনকসভাই পিলের এই মত গ্রহণ করিয়াছেন। দ্রাবিড়, দামল বা তামল তামিল জাতির আবাসস্থল তাম্রলিপ্তির আদি নাম সম্ভবত: