পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\ \. >8及 बां२जांग्न बनचं বঙ্কিমচন্দ্র যখন কাথি মহকুমার সদর-আলা তখন নেগুয়াতে কাছারি ছিল। পরে উহা উঠিয়া কাথি শহরে যায় । - কাথি মহকুমার অন্তর্গত হিজলী একটি বিখ্যাত স্থান। ইহা রসুলপুর নদীর তীরে অবস্থিত। কাথি হইতে এই স্থানের দূরত্ব ১৯ মাইল। ইহা একটি বিশেষ স্বাস্থ্যকর স্থান। এই স্থানটি দেখিতে একটি দ্বীপের মত ও ইহার সৌন্দৰ্য্য অতি মনোরম। হিজলীর অনতিদূরে রসুলপুর নদীর অপর পারে দরিয়াপুর ও দৌলতপুর নামক দুইটি গ্রাম আছে। গ্রাম দুইটির নৈসৰ্গিক শোভা অতি সুন্দর। সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের কল্যাণে এই নগণ্য পল্লী দুইটি ও রসুলপুর নদী বঙ্গ সাহিত্যে অমরত্ব * লাভ করিয়াছে। “ কপাল কুণ্ডলার " পরিকল্পনা ক্ষেত্র বলিয়া দরিয়াপুরে একখানি প্রস্তর ফলক স্থাপিত হইয়াছে। প্রতি বৎসর বঙ্কিমচক্সের মৃত্যু তিথি ২৬এ চৈত্র উপলক্ষে এখানে একটি সাহিত্য সভার অনুষ্ঠান হয় ও কয়েক দিনব্যাপী মেলা বসে। মেদিনীপুর জেলাকে বিচ্ছিন্ন করিয়া হিজলীকে একটি স্বতন্ত্র জেলায় পরিণত করিবার কথাও এক সময়ে হইয়াছিল এবং জেলার সদরের উপযোগী কতকগুলি ভবনও নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। বর্তমানে এই বাড়ীগুলি বন্দী-নিবাসৰূপে ব্যবহূত হইতেছে। পূবেৰ্ব হিজলী একটি প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র ছিল। তমলুক বন্দরের পতনের পর হিজলী বন্দর বড় হইয়া উঠে। ১৫৮৬ খৃষ্টাব্দে লিখিত রালফু ফিচের বর্ণনা হইতে জানা যায় যে তৎকালে সুমাত্রা, মালাক্কা প্রভৃতি দূরবর্তী স্থান হইতে হিজলীতে বাণিজ্য পোত আসিত এবং এখান হইতে কাপড়, পশম, চিনি, লঙ্কা, চাউল প্রভূতি লইয়া যাইত । যুরোপীয় বণিকগণের মধ্যে সবৰ্বপ্রথম পর্তুগীজেরা এখানে আসেন এবং বাণিজ্যকুঠি ও গির্জা নিৰ্ম্মাণ করেন। তাঁহাদের পর আসেন ওলন্দাজ, ইংরেজ ও ফরাসীরা । বঙ্গোপসাগরের উপকূলবৰ্ত্তী স্থানসমূহ হইতে মগ বোম্বেটেগণের অত্যাচার নিবারণের জন্য সম্রাট শাহজাহান নিয়ন বঙ্গের স্থানে স্থানে “ ফৌজদারী ” স্থাপন করেন। হিজলীতেও এইরূপ একটি ফৌজদারী স্থাপিত হইয়াছিল। হিজলীর ফৌজদার উপকূলভাগ পাহারা দিবার জন্য “ সরবোল৷ ” নামক এক শ্রেণীর রক্ষী নিযুক্ত করিয়া ছিলেন। কোম্পানির আমলের প্রথম ভাগেও হিজলীতে কতকগুলি “সরবোলা ” ছিল। কিন্তু পরে তাহারা নিজেরাই লুন্ঠন বৃত্তি অবলম্বন করায় " সরবোলার " কাৰ্য্য বন্ধ করিয়া দেওয়া হয় । - - মুসলমান রাজত্বের পূর্ব হইতেই নিমনবঙ্গ বিশেষত: হিজলী লবণের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। সুলতান সুজার রাজস্ব বন্দোবস্তে নিমক মহালের উল্লেখ আছে। নবাবের অধীনে জমিদারগণই এই কারবার চালাইতেন। তৎকালে কাশ্মীরি, শিখ, মুলতানী ও ভাটিয়া প্রভূতি ব্যবসায়ীরা এই অঞ্চল হইতে লবণ খরিদ করিত। সে সময়ে প্রধান লবণ ব্যবসায়ীর “ফকবৃ-উল-তজজব ’ বা “ মালিক-উল-তজজব " ব্যবসায়ীগণের গৌরব বা রাজা উপাধি পাইতেন । ১৭৬৫ খৃষ্টাব্দে বাংলার দেওয়ানী লাভের পর হিজলীর লবণের কারবার কোম্পানির একচেটিয়া অধিকারে আসে। পরে এই কারবার উঠাইয়া দেওয়া হয় । ১৫৪৪ খৃষ্টাব্দে লিখিত মুকুলরামের চর্তীকাব্যে উল্লেখ আছে যে শ্ৰীমন্ত সদাগরের নৌকা কলিকাতা ও বেতড় ছাড়িয়া কালীঘাটে যাইবার সময় "ডাছিনে ছাড়িয়া যায় হিজলীর পথ,”।