পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/২১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>@br बां९लांग्न वमनं চাকুলিয়া—খড়গপুর জংশন হইতে ৩৪ মাইল দূর। এই স্থান হইতে সিংহভূম জেলার আরম্ভ। ১৭৬৮ খৃষ্টাব্দে ক্যাপ্টেন মর্গ্যান্‌ নামে জনৈক ইংরেজ সেনাপতি চাকুলিয়ার তদানীন্তন সর্দারকে পরাস্ত করিয়া ধলভূম পরগণার এই অংশ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন। এখানে একটি পুরাতন ঘাটোয়ালী দুর্গ ও নীলকুঠির ধবংসাবশেষ দেখা যায়। চাকুলিয়া হইতে ৬ মাইল পূবেৰ্ব বেন্দ নামক গ্রামে সরস্বতী পূজার সময় সপ্তাহকাল স্থায়ী একটি মেলা হয়। ধলভূমগড়—খড়গপুর জংশন হইতে ৫৩ মাইল দূর। ইহা সিংহভূম জেলার একটি মহকুমা। ১৮৩৩ খৃষ্টাব্দ পর্য্যন্ত ধলভূম মেদিনীপুর জেলার জঙ্গল মহালের অধীন ছিল। জঙ্গলমহাল উঠিয়া যাওয়ার পর ইহা সিংহভূম জেলার অন্তর্ভুক্ত হইয়াছে। ধলভূমগড়ে একটি প্রাচীন রাজবংশের বাস, এই বংশের উপাধি ধবলদেব। ধলভূম বা ধবলভূম পূবেৰ্ব একটি স্বাধীন রাজ্য ছিল। ধলভূমের রাজবংশ রাজপুত বলিয়া পরিচিত। কথিত আছে রঙ্কিনী দেবীর বরে জনৈক রজক (ধল) এই পরগণার অধীশ্বর হইয়া এক ব্রাহ্মণ কুমারীকে বিবাহ করে। এই ধল বা রজকের বংশধরগণের আখ্যা হয় ধবলদেব। স্বাধীন ধলভূম রাজ্যের অধীনে কয়েকটি সামন্তরাজ্য ছিল। উহাদের মধ্যে সেরাইকেল ও খারসোয়ানের নাম উল্লেখ যোগ্য। বৰ্ত্তমানে এই দুইটি রাজ্য ওড়িষ্যা প্রদেশের অন্তর্গত। ধলভূম পরগণার অধিবাসিগণের মধ্যে ভূমিজ, কোল, মুণ্ড প্রভৃতি প্রধান। ভূমিজগণ বিশেষ প্রতিপত্তিশালী। ইহাদের মধ্যে “ ঘাটওয়াল ” উপাধিধারী এক শ্রেণীর জমিদার বা জায়গীরদার আছেন। এই উপাধি ও জায়গীর প্রথা স্বাধীন ধলভূম রাজগণ কর্তৃক প্রবত্তিত হইয়াছিল। ঘাটওয়ালগণ লোকলস্কর ও পাইক রাখিয়া রাজ্যের সীমান্ত রক্ষা করিতেন। বর্তমানযুগেও সিংহভূম জেলায় ঘাটওয়ালগণের বিশেষ প্রাধান্য আছে। এই মহকুমার অধিকাংশ অধিবাসী বাংলাভাষা ভাষী । 婚姻 ১৭৬৭ খৃষ্টাব্দে ধলভূমের রাজা ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। কিন্তু যুদ্ধে উহার পরাজয় ঘটে। অত:পর ব্রিটিশ সরকার তাহার ভ্রাতুপুত্র জগন্নাথ সিংহ ধবলদেবকে রাজপদে অভিষিক্ত করেন। ধলভূমের বর্তমান রাজবংশ এই জগন্নাথ সিংহের উত্তরাধিকারী। ঘাটশিলা—খড়গপুর হইতে ৬১ মাইল দূরে পাবর্বত্য নির্বারিণী সুবর্ণরেখার তীরে অবস্থিত ঘাটশিলার নাম স্বাস্থ্যকামী মাত্রেরই নিকট সুপরিচিত। এখানকার জলহাওয়া স্বাস্থ্যকর বলিয়৷ বহু সম্পন্ন বাঙালী ভদ্রলোক এখানে গৃহ নিৰ্মাণ করিয়াছেন এবং প্রত্যেক ছুটির সময় এখানে আসিয়া অবসর যাপন ও স্বাস্থ্য সঞ্চয় করিয়া থাকেন। পূবৰ্বকালে ঘাটশিলাতে ধলভূম রাজ্যের রাজধানী ছিল । ঘাটশিলায় রঙ্কিনী দেবীর মন্দির বিদ্যমান। পূবেৰ্ব এই দেবীর সম্মুখে নরবলি হইত। প্রতি বৎসর আশ্বিন মাসে রঙ্কিনীদেবীর মন্দির চত্বরে বিলু-উৎসব নামে একটি উৎসব মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হইয়া থাকে। বহু দূরদেশাগত সাঁওতালগণই এই উৎসবের হোতা। একটি মহিমকে তীর বিদ্ধ করিয়া হত্যা করাই এই উৎসবের প্রধান অঙ্গ ।