পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/২২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আসাম বাংলা রেলপথে ১৬৫ নীলগঞ্জ—ময়মনসিংহ জংশন হইতে ৩৬ মাইল। প্রাচীন কবি দ্বিজবংশী ভট্টাচার্যের জন্মস্থান পাতীপতুিয়ারী গ্রাম স্টেশন হইতে মাত্র আধ মাইল দূর। দ্বিজবংশীকৃত মুবৃহৎ পদ্মাপুরাণ আজও পূর্ব ময়মনসিংহে সামাজিক অনুষ্ঠানে গীত হয়। তিনি একজন মুগায়কও ছিলেন, এবং দলবল লইয়া তাহার করুণ সুললিত মনসার ভাসান বা বেহুলার গান গাহিয়া বেড়াইয়া লোকশিক্ষার সাহায্য করতেন। কথিত আছে, একবার তিনি এক ভীষণ নরঘাতক দস্তুর কবলে পড়িলে দস্থ্য তাহার গান শুনিয়া নিজকৃত্তি ত্যাগ করিয়া তাহার চরণে লুটাইয়া পড়ে। আজও বহু লোক তাহার পদ্মাপুরাণ গাহিয়া জীবিকা উপার্জন করেন এবং সারা গ্রন্থখানি তাঁহাদের কন্ঠস্থ হইয়া আছে। “রামায়ণ ” কেনারামের উপাখ্যান, মসূয় প্রভৃতি গ্রন্থ রচয়িত্রী ময়মনসিংহের প্রসিদ্ধ মহিলা কবি চন্দ্রাবতী কবি দ্বিজবংশীর কন্যা । - ?४ কিশোরগঞ্জ—ময়মনসিংহ জংশন হইতে ৫২ মাইল দূর। ইহা ময়মনসিংহ জেলার অন্যতম মহকুমা। বল্লালসেন যখন বিক্রমপুর ও পশ্চিম বঙ্গে প্রতিষ্ঠিত, সেই সময়ে কিশোরগঞ্জের নিকট জঙ্গলবাড়ীতে হাজংদের একটি ক্ষুদ্র রাজ্য ছিল। ভৈরববাজার জংশন—ময়মনসিংহ জংশন হইতে ৮৩ মাইল দূর। ইহা মেঘনা নদীর তীরে অবস্থিত ও ময়মনসিংহ জেলার একটি বিখ্যাত বন্দর। এখানে বহু মহাজনের গদি, আড়ত ও ব্যাঙ্ক আছে। এখান হইতে একটি শাখা লাইন ৪১ মাইল দূরবর্তী ঢাকা শহরের নিকটস্থ পূর্ববঙ্গ রেলপথের টঙ্গী স্টেশন পর্য্যন্ত গিয়াছে। এই শাখার জিনারদি স্টেশন বস্ত্রশিল্পের জন্য বিখ্যাত । দৌলতকান্দী—টঙ্গী জংশন হইতে কিঞ্চিদধিক ৩৭ মাইল দূর। স্টেশন হইতে ২ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে রায়পুর থানার অধীন অশ্রফপুর গ্রাম। এই গ্রামে রাজা দেবখড়েগর ত্রয়োদশ রাজ্যাব্দে উৎকীর্ণ দুইখানি তাম্রশাসন, পিতল ও অষ্টধাতু নিৰ্ম্মিত ৪০টি চৈত্য আবিষ্কৃত হইয়াছিল। চৈত্যগুলির চারিদিকে বুদ্ধমূৰ্ত্তি উৎকীর্ণ, একটি চৈত্য কলিকাতার যাদুঘরে রক্ষিত আছে। তাম্রশাসন দুইটির বিশেষ ঐতিহাসিক মূল্য আছে, কারণ উহা হইতে বঙ্গের খড়গ বংশীয় রাজাদের কথা জানিতে পারা যায়। এই বংশের প্রতিষ্ঠাতা খড়েগাদ্যম তাহার পুত্র জাতখড়গ, পৌত্র দেবখড়গ ও প্রপৌত্র রাজা রাজভটের নাম উল্লিখিত আছে। অনুমিত হয়, পালবংশীয় রাজা দেবপালদেবের রাজত্বের শেষভাগে খড়েগাদ্যম এই রাজ্য স্থাপন করেন। তাম্রশাসন হইতে আরও জানা যায় যে রাজা দেবখড়েগর সময়ে অশ্রফপুরের নিকটে "বুদ্ধ-মণ্ড৷ ” ও “বিহার-বিহারিকা-চতুষ্টয় ” প্রতিষ্ঠিত দৌলতকান্দী ও ভৈরববাজার জংশন এই স্টেশনদ্বয়ের মধ্যে রেলপথ পুরাতন ব্ৰহ্মপুত্র পার হইয়াছে। - আশুগঞ্জ—ময়মনসিংহ জংশন হইতে ৯৬ মাইল দূর। এই স্থান হইতে ত্রিপুর জেলার আরম্ভ। ইহা একটি প্রসিদ্ধ বাণিজ্য কেন্দ্র। সুবিখ্যাত মেঘনা সেতু আশুগঞ্জ ও ভৈরব বাজারের মধ্যে অবস্থিত। . . . . . . . * . * . . ." ব্ৰাহ্মণবাড়িয়া-ময়মনসিংহ জংশন হইতে ১০৬ মাইল দূর ও ত্রিপুর জেলার অন্যতম মহকুমা। ইহা তিতাস নামক নদীর তীরে অবস্থিত এবং একটি প্রসিদ্ধ কারবারের স্বাম। ।