পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/২৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আসাম বাংলা রেলপথে סף כי বিৰুপাক্ষ ও চন্দ্রনাথ মন্দির হইতে দিগন্ত বিস্তৃত সমুদ্রের দৃশ্য উদার ও মনোরম। বিশেষ করিয়া চন্দ্রনাথ মন্দির হইতে যে দৃশ্য চোখে পড়ে তাহার তুলনা বাংলাদেশে নাই। এক দিকে ৪ মাইল দূরের বঙ্গোপসাগর ও সন্দ্বীপ দ্বীপটি ও অপর দিকে তরুরাজি শোভিত পবর্বতমালার গম্ভীর রূপটি অতি অপূর্ব ও মহান্ত। পবর্বত ও সমুদ্রের এই সম্মিলিত রূপ সকলকেই মুগ্ধ করবে। বিরূপাক্ষ হইতে চন্দ্রনাথ শিখরের পথ হইতে পাতালপুরী তীর্থে যাওয়া যায়, পথ ছাড়িয়া প্রায় দুই তিন মাইল পাবর্বত্য পথ ও সিড়ি অতিক্রম করিয়া যাইতে ভূয়। এখানে বৃষেশ্বর শিব, গোপেশ্বর শিব, পঞ্চানন শিব, বুদ্রেশ্বর শিব, পাতাল কালী, হরগৌরী, স্বাদশ শালগ্রাম, পাতাল গঙ্গা, মন্দাকিনী প্রভৃতি অনেক দেবদেবী আছেন। সকল তীর্থযাত্রী পাতালপুরী দর্শন করেন না। শিবরাত্রির সময়ে চন্দ্রনাথে মহামেলা হয়। তখন বাংলা তথা ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল হইতে এখানে প্রায় লক্ষাধিক যাত্রীর সমাগম হয়। - অন্যান্য তীর্থের ন্যায় চন্দ্রনাথেও বহু পাণ্ড আছেন; সীতাকুণ্ড স্টেশনের নিকটেই অনেকের বাড়ী। . . . - . চন্দ্রনাথ পাহাড় বৌদ্ধগণের নিকটেও বিশেষ পবিত্র। প্রবাদ বুদ্ধদেবের অঙ্গুলির অস্থি এই পবর্বতের শিখরে সমাহিত আছে। চন্দ্রনাথ মন্দিরের পিছন দিকে একটি প্রস্তরখণ্ডে বুদ্ধদেবের পদচিহ্ন অঙ্কিত আছে বলিয়া দেখানো হয়। অনেকে অনুমান করেন পূবেৰ্ব এই স্থানে একটি বৌদ্ধ মন্দির ছিল। চৈত্রসংক্রাস্তিতে চন্দ্রনাথে বৌদ্ধগণের একটি মেলা হয়। বুদ্ধকূপ নামে একটি কুণ্ডের মধ্যে মৃত আীয় স্বজনের অস্থি নিক্ষেপ করিবার জন্য বৌদ্ধগণ এখানে আগমন করিয়া থাকেন। . . . . . . . . . . বাড়বকুণ্ড—সীতাকুণ্ডের পরের স্টেশন। ইহা লাকসাম জংশন হইতে ৬১ মাইল দূর। স্টেশন হইতে প্রায় দেড় মাইল পূবর্বদিকে বাড়বানল পাহাড় অবস্থিত। এখানে শিব, কালী, ভৈরব ও ব্রহ্মাকে দর্শন করিতে হয়। এখানকার বাড়বকুণ্ড নামক কুণ্ডের জলের উপর সতত একটি অগ্নিশিখা ক্রীড়া করিতেছে দেখা যায়। উহা মহাদেবের তৃতীয় নেত্র বা জ্যোতিক্ষয় নামে বিখ্যাত। বাড়বকুণ্ডের জল উষ্ণ। নিকটেই বাসিকুণ্ড নামে একটি কুণ্ড আছে। বাড়বকুণ্ডের বাড়তি জল । উপচাইনী গিয়া এই কুণ্ডে সঞ্চিত হয়। ইহার জল শীতল। বাড়বকুণ্ডের আয়তন ৪ × 4 ×৩ হাত। ইহা অতলস্পশী এবং ইহার তলদেশ লোহার পাত দিয়া বাধানে । শিবরাত্রির সময় বহু যাত্রী বাড়বানল দর্শন করিয়া থাকেন। কুমির —লাকসাম হইতে ৬৬ মাইল। স্টেশন হইতে পার্বত্য পথে এক মাইল দূরে কুমারীকুও অবস্থিত। ইহা চারি হস্ত পরিমিত একটি ক্ষুদ্র কুণ্ড এবং বাড়বাকুণ্ডের ন্যায় অতলস্পশী। ইহার উপরও মাঝে মাঝে অগ্নি খেলিয়া যায়, বাড়বের অগ্নির ন্যায় উহা অবিশ্রান্ত নয়। নিকটে কুমারী দেবী অবস্থিতা। । - কুরির সম্মুখেই বঙ্গোপসাগর ও সীপ দ্বীপ। পর্তুগীজদের অত্যাচারের সময় বছলোক এই স্থান হইতে পলাইয়া যায়। - এই গ্রামের প্রধান জমিদার “নানক সাহাজী ’’ ও তাঁহার বংশীয়ের গুৰু নামকের বংশ সস্তুত বলিয়া দাৰী করিয়া থাকেন। . . . . .