পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/২৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ծԳՆ तां६लांग्न वशG চট্টগ্রামের প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ী পরলোকগত রায় সাহেব প্রসন্নকুমার সেন মহাশয় বহু অর্থব্যয়ে শহরের মধ্যে একটি সপ্ততল বিশিষ্ট নবগ্রহ মন্দির নির্মাণ করিয়া দিয়াছেন। এখানে নবগ্রহের প্রস্তর নিৰ্ম্মিত মুক্তি প্রতিষ্ঠিত আছে। এই মন্দিরের উপর হইতে শহর ও কর্ণফুলী নদীর দৃশ্য অতি সুন্দর। - - -- শহরের অন্দরকিল্লা পল্লীতে অবস্থিত “ জামে মসৃজিদ ” অপর একটি দ্রষ্টব্য বস্তু। লালদীঘি নামক একটি সরোবরের উত্তর তীরে একটি পাহাড়ের উপর ইহা অবস্থিত। ১০৭৮ হিজিরায় নবাব শায়েস্তা খার পুত্র নবাব খাপ্পা উমেদ খাঁ কর্তৃক ইহা নিৰ্ম্মিত হয়। এই মসজিদটি দেখিতে একটি দুর্গ বা কেল্লার মত বলিয়া এই স্থানের নাম হইয়াছে অন্দর কিল্লা । চট্টগ্রামের শহরতলীতে একটি পাহাড়ের সানুদেশে সুবিখ্যাত পীর সুলতান বায়েজিদৃ বস্তানী সাহেবের দরগাহ অবস্থিত। এই দরগাহ ও হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায় কর্তৃক সম্মানিত। এখানকার মসৃজিদের সম্মুখস্থ পুষ্করিণীর মধ্যে বহু কচ্ছপ দেখিতে পাওয়া যায়। উহারা নিৰ্ভয়ে দর্শকগণের হস্ত হইতে খাদ্যাদি গ্রহণ করে। চট্টগ্রাম শহরের অপরাপর দ্রষ্টব্যের মধ্যে চট্টগ্রাম কলেজ, মাদ্রাসা, মেডিক্যাল স্কুল, বৌদ্ধবিহার ও বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের চট্টল শাখার নাম উল্লেখযোগ্য। চৈতন্যদেবের সমসাময়িক মুকুন্দ দত্ত, পুণ্ডরীক বিদ্যানিধি প্রমখ বহু বৈষ্ণব ভক্তের চট্টগ্রাম জেলায় জন্ম হইয়াছিল। আধুনিক যুগে চট্টগ্রাম স্বপ্রসিদ্ধ কবি নবীনচন্দ্র সেন, জীবেন্দ্র কুমার দত্ত ও শশাঙ্কমোহন সেন এবং স্বৰ্গীয় জননায়ক দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্তের জন্মভূমি বলিয়া বাঙালীর নিকট সুপরিচিত। ' - . ১৮৫৭ খৃষ্টাব্দে সিপাহী বিদ্রোহের সময় ৩৪ সংখ্যক পদাতিক সৈন্যের তৃতীয় ও চতুর্থ দল চট্টগ্রামে সীমান্ত রক্ষায় নিযুক্ত ছিল। এই সিপাহীদলকে অবিশ্বাস করিবার কোনও কারণ কর্তৃপক্ষ পান নাই। বস্তুত: ১৩ই জুন তারিখের রিপোর্টে বিভাগীয় কমিশনার চ্যাপম্যান সাহেব লিখিয়াছিলেন যে যদিও দিল্লীতে বিদ্রোহের জন্য সাধারণের মনে অত্যন্ত ভয়ের সঞ্চার হইয়াছিল, তখনও পর্য্যন্ত চট্টগ্রামের সিপাহীরা অবিশ্বাসের কোনও কাৰ্য্য করে নাই। বরং তাহারা দিল্লী যাইয়া বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অস্ত্ৰধারণ করিতে ব্যগ্র ছিল। ম্যাজিষ্ট্রেট হেন্‌ডাৰ্বসন সাহেবের ১৯এ জুন তারিখের রিপোর্টে দেখা যায় যে যদিও তাঁহার মতে বিদ্রোহের ভয় অমূলক, তথাপি নাগরিকের বিশেষতঃ পর্তুগীজের অত্যন্ত ভীত হইয়া পড়িয়ছিল এবং অনেকেই ভয়ে সমুদ্রে জাহাজে যাইয়া অবস্থান করিতেছিল। অবশেষে ১৮ই নবেম্বর রাত্রি ১১টার সময়ে সত্যই সিপাহীরা বিদ্রোহী হইয়। কারাবাসীদের মুক্তি দিয়া রাজকোষ লুন্ঠন করিয়া নিবিবপ্নে গোলাগুলিসহ উত্তরদিকে পাবর্বত্য ত্রিপুর অঞ্চলে চলিয়া যায়। বিভাগীয় কমিশনারের রিপোর্ট হইতে জানা যায় যে তাহার কোথাও কোনরূপ অত্যাচার করে নাই এবং অরক্ষিত অবস্থায় স্থানীয় লোকের দ্রব্যাদিও অপহৃত হয় নাই। কারামুক্ত কয়েদী ও স্ত্রী পুত্রসহ তাহারা সংখ্যায় প্রায় পাঁচ শত ছিল। তাহাদিগকে ধরিবার জন্য ৩৫৪ জন গোরা সৈন্য ৩রা ডিসেম্বর ঢাকায় পৌছিয়া ত্রিপুরা অভিমুখে যাত্রা করে। কিন্তু সিপাহীর জঙ্গলে স্ত্রাশ্রয় লওয়ায় তাহারা ঢাকায় ফিরিয়া আসে। সিপাহীদের ধরিবার জন্য ৫ পাউণ্ড করিয়া পুরস্কার ঘোষিত হয়। যাহারা ধরা পড়িয়াছিল চট্টগ্রামে তাহাদের ফাঁসী দেওয়া হয়।