পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/২৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ꮌbr8 বাংলায় প্রমণ । حصقطع. হয়। এই সময় ন্যায় বিচার প্রার্থী জয়সিংহও নজরবন্দী অবস্থায় দিল্লীতে ছিলেন এবং তিনি তাহার অপর নাম গোবিন্দ সিংহ নামে লাউড়ের রাজা বলিয়া পরিচিত ছিলেন। ভুলক্রমে গোবিন্দ খাঁর স্থলে গোবিন্দ সিংহ বা জয়সিংহ নিদিষ্ট দিনে ঘাতকের হস্তে প্রাণ হারাইলেন। এই ভুল ধরা পড়িলে, ইহাতে ঈশ্বরের ইচছা আছে মনে করিয়া সম্রাট গোবিন্দ খার প্রাণদণ্ডের আদেশ রহিত করিলেন। গোবিন্দ’র্থী মুসলমান ধৰ্ম্ম গ্রহণ করিয়া হবিব খাঁ নাম লইয়া নিজ রাজ্যে ফিরিয়া আসিলেন। কথিত আছে বাণিয়াচঙ্গের ব্রাহ্মণ রাজবংশ এই সময় হইতেই মুসলমান হন। তাহার স্ত্রী মৰ্ম্মাহর্ত হইয়া রাজবাটী ছাড়িয়া অন্য একটি বাড়ীতে বাস করিতে লাগিলেন। সেই বাড়ীর সম্মুখের দীঘি “ঠাকুরাণীর দীঘি ” নামে আজও পরিচিত। ধৰ্ম্মান্তর গ্রহণের পর রাণীর মনঃকষ্ট লাঘবের জন্য রাজা অধিকাংশ সময়ে বাণিয়াচঙ্গ হইতে দূরে লাউড়েই বাস করিতেন। লাউড়ের জঙ্গলে বহু প্রকোষ্ঠ সহ একটি বৃহৎ দুগের ধবংসাবশেষ আছে। ইহা বানিয়াচঙ্গের “ হাবিলি ’ নামে পরিচিত। উত্তর দিকে খাসিয়া আক্রমণ নিবারণের জন্য গোবিন্দ খা বা হবিব খার পৌত্র আনওয়ার র্থ ইহা নিৰ্ম্মাণ করেন। ইহাতে প্রায় ৫০০ সৈন্য থাকিতে পারিত। আনওয়ার র্থ মুর্শিদকুলি খাঁর নিকট হইতে দেওয়ান উপাধি পান। তখন হইতে বানিয়াচঙ্গের অধিপতির দেওয়ান উপাধিতে পরিচিত। এই বংশের দেওয়ান উমেদরাজার সময়ে লাউড় রাজ্য তাঁহাদের হস্তচু্যত হয়। উমেদরাজা অত্যন্ত দানশীল ও জনহিতৈষী ছিলেন ; এখনও পর্য্যন্ত এ অঞ্চলের কৃষকের বিপদে আপদে দেওয়ান উমেদ রাজার "দোহাই ” দিয়া থাকে। দেওয়ান উমেদ রাজার পুত্র দেওয়ান আলমরাজা সরল প্রকৃতি এবং অমিতব্যয়ী ছিলেন। তাহার বিষয়ে নানারূপ গল্প শুনা যায়। এখনও বোকা এবং অপব্যয়ী লোককে এ অঞ্চলে “ আলম বেঢপ ” আখ্যা দেওয়া হয়। বাণিয়াচঙ্গের মকরদ রায় ও নরনারায়ণ ভট্ট ব্রজবুলিতে সুন্দর সুন্দর কবিতা লিখিতেন। এখনও স্থানীয় লোকে এই সকল কবিতা আগ্রহের সহিত শোনে। সাতগাও—আখাউড়া জংশন হইতে ৫০ মাইল দূর। স্টেশনের উত্তরেই সাতগাও ও বিষগায়ের পাহাড়ে অনেক চা বাগান আছে। এই স্টেশন হইতে প্রায় তিন মাইল দক্ষিণে নিৰ্ম্মাই দীঘি নামে একটি সরোবর ও নিৰ্ম্মাই শিব বা বাণেশ্বর শিব নামক একটি শিবমন্দির আছে। এখানে বারুণী, শিবরাত্রি ও অশোকাষ্টমীর সময় মহামেলা হয়। নিৰ্ম্মাই ও হিৰ্মাই নামক দুইজন রূপবতী ত্রিপুর রাজকুমারী পিতার নিবৰ্বাচিত পাত্রকে বিবাহ করিতে অস্বীকৃত হওয়ায় রাজ্য হইতে নিবৰ্বাসিত হন। কথিত আছে, খৃষ্টাব্দের পঞ্চম শতকে উহারা দুই ভগিনী শ্রীহট্ট জেলার বলিশিরা পবর্বতে আসিয়া বাস করেন ও এই শিবমন্দির ও সরোবর , প্রতিষ্ঠা করেন। স্থানটি অতি সুরম্য। বারুণী ও অশোকাষ্টমীতে বহুলোক শিব দর্শনে আসেন। বলিশিরা বা বড়শীজোড়া পাহাড় উত্তর-দক্ষিণে প্রায় ২২ মাইল ও প্রস্থে ৪ মাইল। ইহার শৃঙ্গের নাম চূড়ামণি টিলা এবং উহা ৭০০ ফুট উচচ। এই পাহাড়েও অনেক চা বাগান আছে। ষ্ট্রীমঙ্গল-আখাউড়া জংশন হইতে ৫৫ মাইল দূর। ইহা একটি প্রসিদ্ধ কারবারের স্বান। এখানে স্বচ্ছ মহাজদের অতৃিত ও ব্যাঙ্ক আছে|” ” - . -