পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/২৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ww বাংলায় ভ্রমণל কথিত আছে, গৌড়-গোবিন্দের রাজত্বকালে শ্রীহট্টের বুলটিকর নিবাসী বুরহানউদ্দীন নাৰক এক ব্যক্তি পুত্রজন্মোপলক্ষে গোঁহত্যা করেন ; দুর্ভাগ্যক্রমে একটি চিল একখণ্ড মাংস রাজগৃহে নিক্ষেপ করে। রাজা ক্রুদ্ধ হইয়া বুরহান উদ্দীনের হাত কাটিয়া দেন ও তাহার শিশুপুত্রকে নিহত করেন। এই সময়ে তরফেও গোবধের জন্য নুর উদ্দীন নামক এক ব্যক্তি নিহত হন বলিয়া কথিত । বুরহান উদ্দীন প্রতিশোধের জন্য সুবর্ণগ্রামের রাজা প্রতাপশালী শামস্থ উদ্দীন ইলিয়াস খাজের শরণ লইলেন; তিনি এক দল সৈন্য গৌড়-গোবিন্দের বিরুদ্ধে প্রেরণ করিলেন। এই সৈন্যদল পরাজিত হইয়া পলায়ন করে। তখন বুরহান উদ্দীন ও নুর উদ্দীনের ভ্রাতা দিল্লী গিয়া তোগলক বংশীয় সম্রাট আলাউদ্দীন ফিরোজ শাহের নিকট সমস্ত ঘটনা নিবেদন করিলেন। সম্রাট নিজ ভাগিনেয় সিকন্দর শাহ গাজীর অধীনে একদল সৈন্য গৌড়-গোবিন্দের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেন। বর্ষাগমে শ্রীহট্টে পৌছাইলে এই সৈন্যদল পীড়িত হইয়া পড়ে। তাহারা ভয় পাইয়া মনে করে ইহা গৌড়-গোবিন্দের যাদুবিদ্যার কাজ। সিকন্দর আর একদল সৈন্য আনিলে তাহারাও গৌড়-গোবিশের বাদুবিদ্যার প্রভাব শুনিয়া ভীত হইয়া পড়িল। সম্রাট ভাগিনেয় তখন শ্রীহট জয়ের আশা ত্যাগ করিলেন। বুরহান উদ্দীন বিষন্ন মনে দেশ ত্যাগ করিয়া মদিন যাইবার পথে দিল্লীতে উপস্থিত হইলে প্রসিদ্ধ দরবেশ হজরত শাহজলালের সহিত তাহার সাক্ষাৎ হইল। বুরহান উীরে মুখে পৃষ্ঠ"ঘটনা শুনিয়া হজরত শাহজলাল ইহার প্রতীকারকল্পে বুরহান উদ্দীনের সহিত নিজ বললেই শ্রীহট্টের দিকে যাত্রা করিলেন। ইতিমধ্যে সম্রাট সিকদর সাহের পরাজয়ের কীলিঙ্গরোপা হইতে আগত নসীরুদ্দীন নামক একজন পীরকে সিপাই সালার বা সেনাপতি নিযুক্তরঞ্জি এক সহয়, অশ্বারোহী ও তিন সহস্র পদাতিক সৈন্যসহ শ্রীহট্টে প্রেরণ করিলেন। পঞ্চিী"াহাবাদে উভয়দলের সাক্ষাৎ হইল, পরাজিত সিকদার গাজীও এইখানে তাঁহাদের সঙ্গে ইলেক্ট্রঃ স্থিতি দল ব্রহ্মপুত্র তীরে পৌছাইলে তাহারা যাহাতে পার হইতে না পারেন সেই ** ীেক চলাচল বন্ধ করিয়া দিলেন। কথিত আছে শাহজলালের অলৌকিক প্লীর সকলে সমাজ পড়িবার জন্য ব্যবহুত নিজ নিজ চৰ্ম্মাসন জলে ভাসাইয় তাহ ধরিয়া ইলেন। গৌড়-গোবিন্দ জানিতে পারলেন না, কেমন করিয়া তাহারা পার হইলেনঃ হবিগঞ্জের নিকটবৰ্ত্তী দিনাজপুর পরগণায় অবস্থিত চৌকি নামক স্থানে শত্রুপক্ষকে বাধা দিবার জন্য গৌড়-গোবিন্দ অগ্নিবাণ প্রয়োগ প্রভৃতি কৌশল অবলম্বন করেন। কিন্তু ইহাতে তাহার দল অনায়াসে নদী পার হইতে সক্ষম হন ; এই উপায়ে তাহারা সুরমা নদীও পার হইলেন। অনায়াসেই শ্রীহট্ট বিজিত হইল এবং গৌড়-গোবিন্দ পলায়ন করিলেন। ইনিই শ্রীহট্টের শেষ হিন্দু রাজা। শাহজলাল সম্রাট-ভাগিনেয় সিকন্দর গাজীর উপর শ্রীহট্টের শাসন ভার অর্পণ করিলেন। . হজরত মহম্মদ যে বংশে জন্মগ্রহণ করেন, শাহজুলাল সেই কুরেশী বংশীয় এবং হজরত মহম্মদ হইতে গুরু পরম্পরায় অষ্টাদশ স্থানীয়। “এমন” তাহার জন্মভূমি। শৈশবে মাতাপিত। হারাইয়া তিনি তাহার মাতুল সাধক সৈয়দ আহম্মদ কবীরের নিকট মক্কাতে অবস্থান করিতেন। বয়োপ্রাপ্তি হইলে মাতুলের নিকট তিনি ধৰ্ম্মসাধনার দীক্ষা গ্রহণ করেন। কথিত আছে একদিন একটি হরিণ ব্যাঘ্র কর্তৃক আক্রান্ত হইয়া ভীত হইয়া কবীরের কুটিরে আসিয়া উপস্থিত হয়। শাহজলাল চপেটাঘাতে ব্যাঘ্রকে তাড়াইয়া হরিণকে আশ্রয় দিলেন। ইহা দেখিয়া তাহার মাতুল