পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ථL বাংলায় ভ্রমণ যোগিনী তন্ত্রে ও কালিকাপুরাণে কামরূপের মাহাত্ম্য অতি বিস্তৃতভাবে বর্ণিত আছে এবং কামর মণ্ডলে যে বহু মহাতীৰ্থ বিরাজিত তাহারও উল্লেখ আছে। এই সকল তীর্থের মধ্যে নীলাচ:ে উপর অবস্থিত কামপীঠের মাহাত্ম্যই আবার সবচেয়ে বেশী। কালিকা পুরাণে আছে, “তীর্থাস্তরে গবাং কোটিং বিধিবদ য: প্রযচছতি। একাহঞ্চ বসেদর তয়োস্তুল্যং ফলং লভে । ” অর্থাৎ, অন্যতীর্থে কোটি গো-দান করিলে যে ফল হয়, এখানে একদিন মাত্র বাস করিলে তাহার সম ফল হয় । কামাখ্যা মন্দিরের নিকটে ছিন্নমস্ত দেবীর মন্দির, নবগ্রহের মন্দির প্রভূতি আরও অনেকগু ছোট ছোট মন্দির আছে।, কামাখ্যা দেবীর মন্দির হইতে প্রায় এক মাইল দূরে নীলাচলের সবের্বা শিখরে ভুবনেশ্বরী দেবীর মন্দির অবস্থিত। মন্দিরের নিকটে দ্বারবঙ্গের মহারাজার একটি স্থা বাট আছে। এই স্থান হইতে চারিদিকের প্রাকৃতিক দৃশ্য অতি সুন্দর দেখায়। নীচে পাহা;ে পাদমূলে ব্ৰহ্মপুত্রের রজত ধারা, অদূরে ব্রহ্মপুত্র নদ মধ্যে বৃক্ষলতা সমাচছন্ন উমানন্দ দ্বীপ, উত্তরে স্থ ভুটানের সুনীল পবর্বতমালা ও তুষারাচছন গিরিহস্ত, পূবেব গৌহাটি শহর ও সমতল ভূমি ও দক্ষি খাসি পবর্বতমালার দৃশ্য সত্যই অতি মনোরম। বর্ষার পর তরুরাজির শ্যামলিমা আনিবৰ্বচনীয় হই উঠে । , কামাখ্যা গ্রামে কোন ধৰ্ম্মশালা নাই। এখানে পাণ্ডাদিগের গৃহেই যাত্রীদের আহার ও বাসস্থ উভয়ই মিলে। এখানকার পাণ্ডাদের সৌজন্যের কথা ভারত বিখ্যাত। বৰ্ত্তমানে কামাখ্যায় প্র তিনশত ঘর পাণ্ডার বাস। আসামের আহোমরাজার প্রথমে খাটি হিন্দু ছিলেন না ; এমন কি ইহান্ে মধ্যে অনেকেই হিন্দুধৰ্ম্মাবলম্বিগণকে উৎপীড়নও করিয়াছেন। রাজা প্রতাপসিংহ ১৬১১-৪ খৃষ্টাব্দে বৈষ্ণবদিগের উপর বহু অত্যাচার করিয়াছিলেন। ১৬৯২ খৃষ্টাব্দে রাজা গদাধর সিংহ বৈষ্ণবদিগকে উৎপীড়ন করিয়াছিলেন। কিন্তু তৎপুত্র রাজা রুদ্র সিংহ স্বয়ং বৈষ্ণবধৰ্ম্ম অবলম্বন করে এবং সুপ্রসিদ্ধ শাস্তিপুরের কৃষ্ণরাম ভট্টাচার্য্যের শিষ্যত্ব গ্রহণ করিয়া তাহাকে কামাখ্যা মন্দি:ে পুরোহিত নিযুক্ত করেন। কৃষ্ণরামের বংশধরগণ আসামে পাবর্বতীয়া গোসাই নামে পরিচিত। সমরণাতীত কাল হইতেই কামরূপ-কামাখ্যা তান্ত্রিক সাধনার সবর্ব শ্রেষ্ঠ কেন্দ্ররূপে সম্মানি এখানকার তান্ত্রিকগণের অসাধারণ কার্য্যকলাপ সম্বন্ধে অনেক অলৌকিক কাহিনী ভারতের সবর্ব প্রচলিত আছে। কামরূপ-কামাখ্যার গুণজ্ঞান বা তুকৃতাকের দোহাই আজিও বহু লোককে দি দেখা যায়। পূবেব লোকের ধারণা ছিল যে কামাখ্যায় গেলে কামরুপ-সুন্দরীরা লোককে ভেড়া করি রাখিয়া দেয়। তান্ত্রিক অভিচারের কেন্দ্ররপে কামাখ্যাকে লোকে পূবেৰ্ব ভীতি মিশ্ৰিত সন্ত্রমের দৃষ্টি দেখিত। কথিত আছে, যে স্বনামধন্য শঙ্করাচার্য্য কামাখ্যার তান্ত্রিকগণের মন্ত্রাভিচারের ফা রোগগ্রস্ত হইয়া প্রাণত্যাগ করেন। বাংলার লোকসাহিত্যে কাণ্ডুর বা কামাখ্যার গুণজ্ঞানের সম্বন্ধে । উল্লেখ আছে। মহাকবি ঘনরাম চক্ৰবৰ্ত্তীর “ধৰ্ম্মমঙ্গল” কাব্যে উল্লিখিত আছে যে মহাবীর লাউীে কামরূপ জয় করিতে গেলে মায়ানদ ব্ৰহ্মপুত্রের জলোচ্ছ্বাসে তাহার সমস্ত সেনাবাহিনী ভাসিয়া যা পরে স্বীয় উপাস্য দেবতা ধৰ্ম্মের প্রভাবে তিনি কাঙর (কামরূপ) রাজকে যুদ্ধে পরাস্ত করিতে সমর্থ | অম্বুবাচাই কামাখ্যার সবর্বপ্রধান উৎসব। অম্বুবাচী নিবৃত্তির সঙ্গে সঙ্গে মন্দিরের দ্বার খো হয়। এই সময়ে ভারতের বিভিন্ন প্রাস্ত হইতে আগত সহস্ৰ সহস্র নরনারীর আগমনে কামাখ্যাধ