পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ごげ तां६जांग्न बगs অতি প্রাচীনকালে মহীরাং দানব নামে একজন রাজা রাজত্ব করিতেন। ইহাকে অসুর বংশ রাজাদের আদিপুরুষ বলা যাইতে পারে। এই বংশে নরকাসুর কিরাত-বংশীয় কামরূপের রাজ ঘটককে পরাজিত করিয়া কামরুপের সিংহাসন লাভ করেন। নরকাসুরের নাম পুরাণ ও ত৷ে উল্লিখিত আছে। নরকাসুর কামরূপের রাজধানী বর্তমান গৌহাটিতে স্থাপন করিয়াছিলেন। সে সময়ে গৌহাটির নাম ছিল প্রাগৃজ্যোতিষপুর। নগরের চারিদিকে পরিখা ও প্রাচীর নির্মাণ করিয়া তিনি নগরকে সুরক্ষিত করিয়াছিলেন। গৌহাটির কাছে একটি ছোট পাহাড় এখনও নরকাসুরের পাহাড় নামে পরিচিত। ঐতিহাসিকযুগে খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে বঙ্গরাজ শশাঙ্ক কামরূপ জয় করিয়া বঙ্গরাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন। প্রসিদ্ধ চৈনিক পৰ্য্যটক যুয়ান চোয়াং সেই সময়ে ভারত ভ্রমণে আসেন এবং কামরূপ দর্শন করেন। একাদশ শতাব্দীতে কামরূপ পালরাজগণ কর্তৃক বিজিত হয় এবং ষোড়শ শতাব্দীতে কোচরাজ-সেনাপতি চিলারায়ও কামরুপ জয় করেন। বাংলার স্বাধীন মুসলমান রাজারা এককালে গৌহাটি পর্য্যন্ত জয় করিয়াছিলেন। সুলতান শম্যউদ্দীন ইলিয়াস শাহের পুত্র সিকন্দর শাহ ১৩৬৭ খৃষ্টাব্দে কামরুপে আসিয়া একটি টাকশাল প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন, তখন মুসলমানেরা আসামের নাম দিয়াছিলেন চাউলের দেশ। সিকন্দরের পুত্র গিয়াহ-উদ-দীন আজমৃ শাহ্ গৌহাটিতে একটি দুর্গ নিৰ্ম্মাণ করাইয়াছিলেন। গৌহাটিতে আবিষ্কৃত একখানি আরবী শিলালিপি হইতে এই কথা জানিতে পারা গিয়াছে। শিলালিপিখানি এখন গৌহাটিতে কামরূপ অনুসন্ধান সমিতির চিত্রশালায় আছে। গৌহাটিতে মুঘলদিগের সহিত আসামের আহোমবংশীয় রাজাদের অনেকবার যুদ্ধ হইয়াছিল। আহোম রাজগণের বীরত্ব কাহিনী আজও আসামের ঘরে ঘরে পরিকীৰ্ত্তিত। বাংলার শাসনকর্তা ইতিহাস প্রসিদ্ধ নবাব মীরজুযূল আসাম আক্রমণ করিতে যাইয়া ঘরগাও পৰ্য্যন্ত অগ্রসর হইয়াছিলেন, কিন্তু বন্যা ও বৃষ্টির জন্য এব খাদ্যদ্রব্যাদির অভাবে তাঁহাকে ব্যর্থ মনোরথ হইয়া ফিরিয়া আসিতে হইয়াছিল। ১২০৫ খৃষ্টাবে মুহম্মদ খিলজিরও (বক্তিয়ার খিলজির পুত্র) এইরূপভাবে আসাম অভিযান ব্যর্থ হইয়াছিল। জয়ধুভ সিংহ, চক্ৰধর সিংহ এবং গদাধর সিংহ মুঘলদের নিকট হইতে কুড়িটি কামান কাড়িয়া লইয়াছিলেন এই সকল কামানে পুরাতন অসমীয়া অক্ষরে রাজার নাম ও তারিখ এবং কামানটি যে মুসলমানদে নিকট হইতে কাড়িয়া লওয়া হইয়াছিল এই সকল কথা সংস্কৃত ভাষায় লেখা আছে। খৃষ্টাব্দে অষ্টাদশ শতকের শেষভাগে আহম্রাজা গৌরীনাথ সিংহ বৈষ্ণব প্রজাদের বিদ্রোহের জন্য পুরাত রাজধানী গড়গাও ছাড়িয়া গৌহাটিতে পলাইয়া আসিয়াছিলেন। অবশেষে ইংরাজদের সাহাযে ১৬৯২ খৃষ্টাব্দে নবেম্বর মাসে গৌরীনাথ গৌহাটি ফিরাইয়া পান। বদনচন্দ্র বড়ফুকন নামক একজ রাজকৰ্ম্মচারীর সহায়তায় ১৮১৬ খৃষ্টাব্দে ব্ৰহ্মদেশ হইতে আগত সৈন্য আসাম অধিকার করে ইংরাজদের সহিত ব্ৰহ্ম দেশের রাজার যুদ্ধ বাধিলে ইংরাজ সৈন্য ১৮২৪ খৃষ্টাব্দের ২৮এ মচি তারিখে গৌহাটি দখল করে এবং সেই সময় হইতে ইহা ইংরাজদের অধিকারে আছে। গৌহাটির তিনদিকে অনেকগুলি ছোট ছোট পাহাড় আছে এবং ইহার উপরে আহোমূ-রাজাদে নিৰ্ম্মিত অনেকগুলি পুরাতন দেবমন্দির এখনও দেখিতে পাওয়া যায়। গৌহাটির খেয়া ঘাটের নিকটে শুক্লেশ্বরের মন্দির অবস্থিত। মন্দিরের নিয়ে পাষাণ গা:ে খোদিত বিষ্ণু, দুর্গা, গণেশ, সূৰ্য্য প্রভৃতির সুন্দর মুক্তি দৃষ্ট হয়। গৌহাটি শহরের পূর্ব প্রাে একটি অনুচচ পাহাড়ের উপর নবগ্রহ মন্দিরে সূৰ্য্য চন্দ্র প্রভূতি নয়টি গ্রহের পূজার ব্যবস্থা আছে।