পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& S. বাংলায় ভ্রমণ সপরিবারে আরাকান রাজের আশ্রয় গ্রহণ করেন এবং আরাকানেই তাহার মৃত্যু হয়। মীর জুমলা বাংলার সুবাদার নিযুক্ত হইয়া রাজধানী ১৬৬০ খৃষ্টাব্দে আবার ঢাকায় আনয়ন করেন। মীর জুমলার মৃত্যুর পর ১৬৬৪ খৃষ্টাব্দে সম্রাজ্ঞী মমতাজমহলের ভ্রাতা ও নুরজাহানের ভ্রাতুপুত্র শায়েস্তা খাঁ বাংলার সুবাদার নিযুক্ত হন। তাহার সময়ে ঢাকা উন্নতির চরম শিখরে আরোহণ করে। সুদীর্ঘকাল শাসন করিয়া ১৬৮৯ খৃষ্টাব্দে তিনি অবসর গ্রহণ করেন এবং অল্পকাল পরেই আগ্রায় পরলোক গমন করেন। অতঃপর বাহাদুর খাঁ, ইব্রাহিম খ ও আওরঙ্গজেবের পৌত্র আজিম উশ্বসান ঢাকায় সুবাদার নিযুক্ত হন। ১৭৪০ খৃষ্টাব্দে আজিম উশসানের সহিত দেওয়ান মুর্শিদ কুলী জাফর খার মনোমালিন্য হেতু মুর্শিদকুলী খাঁ রাজধানী মুর্শিদাবাদে লইয়া যান এবং আজিম উশসান বিহারের সুবাদার নিযুক্ত হন। তখন হইতে ঢাকার শাসনভার নায়েব নাজিমদের উপর অপিত হয়। ইসট ইণ্ডিয়া কোম্পানি দেওয়ানী পদ পাইলে তৎকালীন ঢাকার নায়েব নাজিম নবাব জসারৎ খাঁর শাসন ক্ষমতা লুপ্ত হয় এবং তিনি মাসোহারা প্রাপ্ত হন। ১৮৪৩ খৃষ্টাব্দে গাজী উদ্দীন হায়দার বা পাগলা নবাবের মৃত্যুর পর তাহার সন্তানাদি না থাকায় নবাব নাজিমের পদ উঠিয়া যায়। দেনার দায়ে তাহার সম্পত্তি বিক্রীত হইয়া যায় ; তাহার একটি হাওদা নবাবপুরের বসাকগণ ক্রয় করেন এবং জন্মাষ্টমীর মিছিলের সময়ে উহা এখনও বাহির করা হয়। তারিখ-ই-চাকা অনুসারে ঢাকা নগরীর চরম উন্নতির সময়ে পশ্চিমে জাফরাবাদ হইতে পোস্তগোলা পৰ্য্যন্ত ১০ মাইল ও উত্তরে টঙ্গ নদী পৰ্য্যন্ত ১৫ মাইল বিস্তৃত ছিল এবং ইহার লোকসংখ্যা ছিল ৯,০০,০০০। ১৬৬৬ খৃষ্টাব্দে টাভাণিয়ার ঢাকায় আগমন করেন। ১৯০৫ হইতে ১৯১২ খৃষ্টাব্দ পর্য্যন্ত ঢাকা পূবর্ব-বঙ্গ ও আসাম নামক নবগঠিত ও অল্পকালস্থায়ী প্রদেশের রাজধানী ছিল। ঢাকার বর্তমান সুপ্রসিদ্ধ নবাব বংশের সহিত পুরাতন ঢাকার নায়েব-নাজিম প্রভূতিদের কোনই সম্পর্ক নাই। দিল্লীর সম্রাট মহম্মদ শাহের সময়ে খাজা আবদুল হাকিম নামে এক ব্যক্তি কাশ্মীরের মুবাদার ছিলেন। ১৭৩৯ খৃষ্টাব্দে নাদের শাহ যৎকালে দিল্লী নগরী ধংস করেন সে সময়ে খাজা আবদুল হাকিম তথায় উপস্থিত ছিলেন এবং তথা হইতে পলাইয়া শ্রীহট্টে গিয়া বাসস্থাপন করেন। তাহার মৃত্যুর পর তাহার ভ্রাতা মৌলবী আবদুল্লা ঢাকায় আসিয়া ব্যবসায়ে আত্মনিয়োগ করেন এবং প্রভূত অর্থ উপার্জন করেন। এইরূপে ঢাকার নবাব বংশের আরম্ভ হয় বহু দিন পর্য্যন্ত ইহার চামড়া ও সোনার কারবার করিয়া পরে ভূসম্পত্তি অর্জন করেন এবং ক্রমে বাংলার অন্যতম প্রধান ভূম্যধিকারী হন। এই বংশের নবাব স্যার আবদুল গনি, স্যার আহসান উল্লা ঢাকা শহরের উন্নতিকল্পে বহু অর্থ দান করিয়াছিলেন। ঢাকায় ইহাদের নাম সমরণীয় হইয়া। আছেT এখনও ইহারা বৎসরে কম করিয়া ৬৫,০০০ হাজার টাকা ধৰ্ম্ম ও সেবা কার্য্যে ব্যয় করিয়া থাকেন। মুঘলদের সময়ে মগের ঢাকা ২/৩ বার লুণ্ঠন করে। পলাশী যুদ্ধের পর সন্ন্যাসী বিদ্রোহের ○* সময় ১৭৬৩ খৃষ্টাব্দে ঢাকা নগরী লুঠিত হয়। / ঢাকা নামের উৎপত্তি সম্বন্ধে নানারূপ মত আছে। ঢাকার অধিষ্ঠাত্রীদেবী ঢাকেশ্বরী হইতে ঢাকা নাম হইয়াছে বলিয়া অনেকে মনে করেন ; কিন্তু ঢাকেশ্বরী হইতে ঢাকা বা ঢাকা হইতে ঢাকেশ্বরী নাম হইয়াছে তাহা বলা শক্ত। কিংবদন্তী যে সতী দেহ বিষ্ণুচক্রে বিচ্ছিন্ন হইলে তাঁহার