পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&b. बां६लांग्न वंशं* অল্প করিতেন। সম্রাট শাহজাহান এবং আওরঙ্গজেব ঢাকাই ম্যুলিন দিল্লীর অন্তঃপুরে ব্যবহার করিবার ব্যবস্থা করেন এবং যাহাতে মসৃলিন ভারতবর্ষ হইতে বাহিরে যাইতে না পারে, সে জন্য রাজকীয় আদেশও প্রদান করিয়াছিলেন। ঢাকার মালিনের নানা নাম ছিল" বুন (হিলি শব্দ, অর্থসূক্ষ্ম—ইহা মাকড়সশর জালের মত ছিল), সৰ্বন (ইরানীয় শব্দ, অর্থ সান্ধী শিশির—সিক্ত করিয়া

ঘাসের উপর বিছাইয়া দিলে ইহার অস্তিত্বই বুঝা যাইত না, শিশির বলিয়া ভ্রম হইত), আবরোয়ান, (ইরাণীয় শবদ, অর্থ জল স্রোত, জলের মধ্যে একেবারে মিলাইয়া যাইত), সঙ্গতি, সরবতি, রং, সরকার আলি আলবাল্লে, তনজের, তরন্দাম, নয়নস্থক, সরবন্দ, কুমলী, বদন খাস, মলমল খাস, খাস । (সবৰ্বশ্রেষ্ঠ খাসা নাম জঙ্গলখাসা) ইত্যাদি নানা প্রকার ডুরে কাপড় ছিল ; তাহাদের নাম, রাজকোট, কাগজাহি, পাদশাহীদার, কলাপাত প্রভৃতি। বিভিন্ন রঙের মসৃলিন চারখানা নামে অভিহিত হইত ; ইহাও নানারূপ ছিল, যথা নন্দনশাহী, আনারদান, সাকুতা, কৰুতরখোপা, পাছাদার প্রভৃতি। বুট ও ফুলতোলা মসৃলিন কসিদা নামে অভিহিত, ইহাও নানা প্রকারের, যথা কাটাউরমী, নৌবত্তি, আজিজুল্লা, দোছাক প্রভৃতি। বিচিত্র কারুকার্য্য খচিত মসলিন বা জামদানীও নানা প্রকারের, যথা তোরাদার, কারেলা, বুটিদার, তেরছা, জলবার, পান্নাহাজার, মেল, দুবলীজাল, ছড়িয়াল, সাবুরগা ইত্যাদি। মসৃলিন ছাড়া বাফত নামে একপ্রকার সুন্দর মোটা গাত্রবস্ত্ৰও নানা প্রকারের হইয়া থাকে, যথা, হাম্মাম, ডিমটি, সাল, জঙ্গলখাসা, গলাবন্দ প্রভূতি । ১৭৫৩ খৃষ্টাব্দে নানা দেশের জন্য ঢাকায় ২৮,৫০,০০০ টাকার মসৃলিন প্রভৃতি বস্ত্র বিক্রীত হইয়াছিল বলিয়া জানা যায়। এখনও বাংলার সবর্বত্র ঢাকাই শাড়ী ও ধুতির বিশেষ আদর আছে। মসলিনের জন্য প্রত্যুষে সূর্য্যোদয়ের আগে সূক্ষ্য সূতা কাটার রীতি ছিল। চরকার দ্বারা অপেক্ষাকৃত মোট সূতা ও ডলনকাঠি বা টাকুর সাহায্যে সূক্ষ্য সূতা কাটা হইত। খাদি আন্দোলনের পর হইতে আমাদের আদিম কালের টাকু বা টেকে তকৃলি নামে পরিচিত হইতেছে। ইহা সত্যই দ:র্থের কথা | মসৃলিন ও অন্যান্য সূক্ষ্য বস্ত্ৰ ধৌত করিবার জন্য ঢাকার এখনও নাম আছে। সূক্ষ্য বস্ত্র বুইলে সূত্রগুলি স্থানচ্যুত হইলে “ কাটা করিয়৷ ” ইহাদিগকে স্থাপিত করিতে হয়। ঢাকা ভিন্ন অন্য কোথাও এই পদ্ধতি চলিত নাই বলিয়া আজও অনেকে ঢাকাই শাড়ী ঢাকায় ধুইতে পাঠান। ঢাকার কুমদীগরগণ শঙখ দ্বারা বস্ত্রাদি মাজৰ্জনা করিয়া উজজল ও মস্থণ করিতে সুদক্ষ ; ঢাকাই শঙ্খ-করা বস্ত্রের খ্যাতি আছে। ঢাকার রিফুল্লাগরদিগেরও সূক্ষ্মকার্য্যের জন্য নাম আছে। ঢাকায় মসলিন প্রভৃতি বস্ত্রে রেশম ও জরির কাজ অতি সুন্দর হইয়া থাকে; এই কাজ জরদজী নামে খ্যাত | ঢাকায় রূপার তারের কাজ (ফিলিগ্রী) শঙখশিল্প ও ঝিনুকের বোতাম, মাথার ফুল, ঘড়ির চেন প্রভূতির খ্যাতি আছে। শাখের কাজের জন্য মাদ্রাজ, বোম্বাই, সিংহল মলয়দ্বীপ প্রভৃতি স্থান হইতে বহু পরিমাণে সামুদ্রিক শঙখ আনিতে হয় ; তিনকোড়ী, পাট, জাহাজী, ধলা, বাড়বাকী, সুরতী ও আলাটিলা এই কয় প্রকার শঙখ উৎকৃষ্ট। প্রতি বৎসর প্রায় লক্ষ টাকার শঙখ আমদানী হয় ও পাঁচ লক্ষ টাকার কারুকার্য্যখচিত শাখা, চুড়ী, বালা, মালা, কানের ফুল, আংটি, বোতাম, ঘড়ির চেন প্রভূতি ভারতের নানা স্থানে প্রেরিত হয়।