পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূবৰ্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ Wり) জন্য মানসিক করিয়া থাকেন। ধামরাই গ্রামে চৈত্রমাসের শুক্লাত্রয়োদশী ও পরদিন মদন-চতুর্দশী তিথিতে মদনোৎসব ও কামদেবের পূজা হইয়া থাকে ; একটি কলাগাছ পুতিয়া এবং বহু লোক মিলিয়া ঢোল বাজাইয়া মুর করিয়া ছড়া আবৃতি করিয়া কামদেবের পূজা করা হয়। ছড়াটির প্রথম চার ছত্র নিয়ে প্রদত্ত হইল ;– এই থলিতে আয়রে কামা এই থলিতে আয় | ধবল পাঠ দিমু তোরে এই থলিতে আয়। লোচা বাচা দিমু তোরে এই থলিতে আয়। ভাঙ্গ ভুজনা দিমু তোরে এই থলিতে আয়। এ অঞ্চলে শূকর বলি দিয়া বনদুর্গা পূজার প্রথা আছে। কেহ কেহ ইহাকে বৌদ্ধ যুগের চিহ্ন বলিয়া মনে করেন। ধামরাই সূক্ষ্ম বস্ত্রের জন্য খ্যাত; এই স্থানে ১৮০০ খৃষ্টাব্দ পর্য্যন্ত ফরাসীদের একটি কুঠি ছিল। বাজাসন--সাভার হইতে ৫ মাইল উত্তর-পশ্চিমে ও ঢাকা হইতে ২১ মাইল দূরে নায়ার ও সুয়াপুর গ্রামন্বয়ের মধ্যে অবস্থিত প্রায় অৰ্দ্ধ মাইল ব্যাপিয়া বাজাসনের ভিটা নামে যে মৃত্তিকা স্তুপটি দৃষ্ট হয়, অনেকের মতে উহা সুপ্রসিদ্ধ বজ্রাসন বিহারের ধ্বংসাবশেষ। দ্বাদশ বৎসর ধরিয়া স্বনামধন্য দীপঙ্কর অতীশ এই বিহারে শিক্ষালাভ করেন। নাগাৰ্জ্জুন প্রবত্তিত মাধ্যমিক মহাযান সম্প্রদায়ের তান্ত্রিক সাধনায় বজ্রাসন নামে পরিচিত এক আসন আছে। মাণিকগঞ্জ—ঢাকা হইতে প্রায় ৩০ মাইল উত্তর-পশ্চিমে ; ইহা ঢাকা জেলার একটি মহকুমা । ইহার দক্ষিণে শিববাড়ী গ্রামে একটি অতি প্রাচীন শিব ও মনোহারিণী বালা ভৈরবী মুক্তি প্রতিষ্ঠিত আছেন। যোগী জাতীয় ব্যক্তিগণ এই শিবের পূজারীর কাজ করেন। শিবরাত্রির সময়ে এখানে বড় মেলা হয়। মাণিকগঞ্জ থানার অন্তর্গত খাবাশপুর গ্রামে নিম কাঠের নিমাইচাঁদ মহাদেব মুক্তি প্রতিষ্ঠিত আছেন। চৈত্র মাসে বিগ্রহটি লইয়া গ্রাম প্রদক্ষিণ করা হয় ও ১লা বৈশাখ একটি মেলা হয়। মাণিকগঞ্জ হইতে ঠিক ১৪ মাইল পশ্চিমে পদ্মা ও যমুনা বা ব্ৰহ্মপুত্রের সঙ্গম স্থলের নিকটে অবস্থিত আড়িচা স্টীমার স্টেশন। আসাম-সুন্দরবন সটীমার পথে উত্তর দিকে গোয়ালন্দের ঠিক পরের স্টেশন। এই পথেও মাণিকগঞ্জ আসা যায়। আড়িচার ঠিক্‌ উত্তরেই তেত্ততার রায়বংশীয় জমিদারগণ প্রসিদ্ধ। পদ্মা ও যমুনার মোহানা এ অঞ্চলে বাইশ কোদালিয়ার মোহানা নামে খ্যাত। কথিত আছে একবার বন্যার পর একটি কৃষক পরিবারের ২২টি লোক মিলিয়া জল নিবারণের জন্য জমি কাটিয়া পদ্মা ও যমুনার দিকে জলের পথ করিয়া দেয়; ক্রমে ২৩ বৎসরে এই কাটা জলপথ দুটি দিয়া পদ্মা ও যমুনা মিলিত হয়। ইহা হইতে বাইশ কোদালিয়া মোহানা নামের উৎপত্তি হয়। এই গ্রাম্য কাহিনীতে আধুনিক কালে ব্ৰহ্মপুত্রের গতি পরিবর্তন ও পদ্মার সহিত মিলনের কিছু ইঙ্গিত রহিয়াছে। তেজগাও—নারায়ণগঞ্জ হইতে ১৪ মাইল। ১৫৯৯ খৃষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত একটি পর্তুগীজ গিজর্জ এখানে আছে; গিজর্জাটি ব্যাণ্ডেলের প্রসিদ্ধ গিজর্জার অব্যবহিত পরেই প্রতিষ্ঠিত হয়। এই