পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূবৰ্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ ○○ গজালি গাছের প্রাধান্য হেতু এই বনভূমি গড়গজালি নামেও অভিহিত হয়। এই বনে বাঘের অভাব নাই। পূবেৰ্ব এই বনে হাতী পাওয়া যাইত। এই জঙ্গলে ভালো মধু ও মোম পাওয়া যায়। ভাওয়াল পরগণার অন্তর্গত সুবৃহৎ বেলাই বিলের বর্গফল ৮ বগ মাইল ; পূবেৰ্ব ইহা একটি নদী ছিল এবং স্থানীয় ভূস্বামী খটেশ্বর ঘোষ ইহা হইতে ৮০টি খাল কাটিলে ইহা ক্রমে বিলে পরিণত হয় বলিয়া কথিত । স্থানীয় লোক সঙ্গীতেও এই ঘটনা স্থান পাইয়াছে। যথা—— খাইডা ডোস্কা ছিল রাজা মহাতেজ কায়েতের কুলে। নানা স্থানে স্থানে শুভক্ষণে পুস্করিণী কাটিল । বেলাই বিল শুষ্ক করি নিজ প্রতাপ দেখাইল । ভাই অদ্ভুত কাহিনী। ভাওয়ালের অন্তর্গত নাগরী গ্রামে ১৬৬৪ খৃষ্টাব্দুে স্থাপিত পর্তুগীজদের একটি গির্জা আছে। রাজেন্দ্রপুর—নারায়ণগঞ্জ হইতে কিঞ্চিদধিক ৩৭ মাইল। ভাওয়ালের জঙ্গল মধ্যে অবস্থিত এই স্থান হইতে বহু পরিমাণে জ্বালানি কাঠ চালান যায়। স্টেশনের নিকটেই রাজাবাড়ী নামক স্থানে চগুলি রাজাদের বলিয়া কথিত একটি প্রাসাদ ও দুর্গ প্রাকারের ভগ্নাবশেষ দৃষ্ট হয়। প্রবাদ প্রতাপ ও প্রসন্ন রায় নামে চণ্ডালরাজা এই স্থানে রাজত্ব করিতেন। অনেকে অনুমান করেন ইহারা সম্ভবতঃ বৌদ্ধধৰ্ম্মাবলম্বী ছিলেন। তাঁহাদের প্রাসাদের নিকটেই তাঁহাদের প্রতাপান্বিতা ভগিণী মোগগী প্রতিষ্ঠিত “মোগগীরমঠ” এখনও দেখিতে পাওয়া যায। স্টেশন হইতে ১০ মাইল পশ্চিমে তুরাগ নদীর তীরে বোয়ালী গ্রাম ; তথা হইতে ৪ মাইল উত্তর-পশ্চিমে ডাকুরাই গ্রামে চোলসমুদ্র নামে একটি বৃহৎ ও গভীর দীঘি আছে। কথিত আছে, দীঘি খনিত হইলে রাজা উহার গভীরতা দেখিবার জন্য একজন ঢুলীকে দীঘির তলে নামাইয়া দেন। কিন্তু উহা এত গভীর যে দুলী বহু জোরে ঢোল বাজাইলেও তাহার আওয়াজ দীঘির পাড়ে পৌছায় নাই ; সেজন্য ইহার নাম হয় ঢোলসমুদ্র। ঢোলসমুদ্রের পাড়ে মঠের চালা নামে একটি প্রকাণ্ড উচচভূমি দৃষ্ট হয় ; ইহা একটি বৌদ্ধচৈত্যের চিহ্ন বলিয়া কেহ কেহ অনুমান করেন। ঢোলসমুদ্রের নিকটেই কোটামণির পুকুর ও পাল বংশীয় বলিয়া কথিত যশোপাল নামে একজন স্থানীয় রাজার প্রাসাদাদির ভগ্নাবশেষ অবস্থিত। স্টেশন হইতে পাঁচ মাইল পূবর্বদিকে বানার বা লাক্ষ্য নদীর তীরে কাপাসিয়া একটি পুরাতন স্থান ; এখানে বহু পরিমাণে উৎকৃষ্ট কাপাস তুলা উৎপন্ন হইত। কাপাসিয়ার নিকট নদীর উপর দুর দুরিয়া গ্রামে অৰ্দ্ধচন্দ্রাকৃতি একটি বৃহৎ গড়ের ভগ্নাবশেষ অবস্থিত ; ইহার বহিঃপ্রাকার সবর্বশুদ্ধ প্রায় দুই মাইল। গড়ের অপর পারেও কিছু কিছু ভগ্নাবশেষ দেখিয়া মনে হয় এই স্থানে পূবেৰ্ব একটি বড় নগর ছিল। মুসলমান আক্রমণের সময়ে ১২০৪ খৃষ্টাব্দে গড়টি রাণী ভবানী নামে