পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఇr . * * - & বাংলায় ভ্রমণ . . . ... عياسيا জন্য সম্রাট আকবরের নিকট হইতে “ সমরসিংহ ” উপাধি লাভ করেন। পরে তিনি বিশ্বাসঘাতকগণ কর্তৃক নিহত হইলে তাহার মহিষীর অভিযোগক্রমে আকবরের রাজস্বসচিব ও অন্যতম সেনাপতি তোডরমল্ল বিদ্রোহীগণকে যথোচিত দণ্ড প্রদান করেন এবং চতুৰ্ব্বেষ্টিত দুর্গে একটি দরবার করিয়া সেই স্থান হইতেই সৰ্ব্ব প্রথম আকবরের বঙ্গবিজয় ঘোষণা করেন। চতুৰ্ব্বেষ্টিত দুর্গকে পটভূমি করিয়া সুপ্রসিদ্ধ সাহিত্যিক রমেশচন্দ্র দত্ত র্তাহার “বঙ্গ বিজেতা” নামক উপন্যাস রচনা করেন। বর্তমানে এই তুর্গের কোনই চিহ্ন নাই, উহা যমুনাগর্ভে বিলীন হইয়াছে। প্রাচীন চতুৰ্ব্বেষ্টিত বা চৌবেড়িয়া এখন রাজার বাগান, ফুলবাড়ী ও সেহালা নামক তিনটি বিভিন্ন পল্লীতে বিভক্ত হইয়াছে। ফুলিয়া শান্তিপুর শাখায় রাণাঘাট হইতে ৯ মাইল এবং কলিকাতা হইতে ৫৪ মাইল দূর। ফুলিয়া “ ভাষা-রামায়ণ”-কার মহাকবি কৃত্তিবাসের জন্মস্থান । ১৪৪০ খৃষ্টাব্দের মাঘমাস রবিবার শুক্ল পঞ্চমীর দিন সরস্বতী পূজার শুভবাসরে বাণীর বরপুত্র মহাকবি কৃত্তিবাস জন্মগ্রহণ করেন। র্তাহার পিতার নাম বনমালী ও মাতার নাম মালিনী দেবী । ইহারা মুখটি ব্রাহ্মণ; এই বংশের নবাব প্রদত্ত উপাধি ছিল "ওঝা"। কৃত্তিবাসের সময়ে ফুলিয়া তাতি সমৃদ্ধ স্থান ছিল ; তখন ইহার দক্ষিণ ও পশ্চিম দিক দিয়া গঙ্গা প্রবাহিত হইত। আত্মপরিচয় প্রসঙ্গে কৃত্তিবাস লিখিয়াছেন, “গ্রামরত্ব ফুলিয়া জগতে বাখানি। " দক্ষিণে পশ্চিমে বতে গঙ্গ তরঙ্গিণী ॥ " গুরু গৃহে শিক্ষা সমাপনান্তে কুক্তিবাস পণ্ডিতরূপে প্রসিদ্ধি লাভ করেন। রাজপণ্ডিত হইবার আশায় তিনি গৌড়েশ্বরের সভায় গমন করেন এবং স্বরচিত পাঁচটি সংস্কৃত শ্লোক রাজার নিকট প্রেরণ করেন । রাজসভায় তিনি যথেষ্ট সম্মান লাভ করেন । গৌড়েশ্বরের ইচ্ছানুসারে তিনি গৃহে প্রত্যাগমন করিয়া বঙ্গভাষায় রামায়ণ রচনা করিতে আত্মনিয়োগ করেন । এই গৌড়েশ্বর কে ছিলেন, তদ্বিষয়ে যথেষ্ট মতভেদ আছে ; কেহ কেহ বলেন যে তাহিরপুরের রাজা কংসনারায়ণই কৃত্তিবাস বর্ণিত গৌড়েশ্বর, আবার কাহারও কাহারও মতে রাজা গণেশ ও এই গৌড়েশ্বর অভিন্ন। কৃত্তিবাস রচিত রামায়ণই বাংলা ভাষার আদি কাব্য বলিয়া অনেকের অভিমত। কৃত্তিবাস বাল্মীকির রামায়ণের যথাযথ অনুবাদ না করিয়া উহার আখ্যানভাগ অবলম্বনে মৌলিক মহাকাব্য রচনা করিয়াছেন । স্থানে স্থানে তিনি অন্যান্য পুরাণ হইতে বা কথকগণের প্রমুখাৎ শ্রুত হইয়া আখ্যান ভাগের মধ্যে নব নব বিষয়ের সন্নিবেশ করিয়াছেন। কৃত্তিবাস বর্ণিত শ্রীরামচন্দ্রের দুর্গাপূজা, হনুমান কর্তৃক রাবণের মৃত্যুবাণ হরণ, মহীরাবণ বধ ও লবকুশের যুদ্ধ প্রভৃতি সুপরিচিত বিষয়গুলি বাল্মীকির রামায়ণে দৃষ্ট হয় না । অধুনা কৃত্তিবাসী রামায়ণ নামে বাজারে যাহা বিক্রয় হয়, উচ্চাতে কৃত্তিবাসের আদি রচনার সন্ধান অতি অল্পই পাওয়া যায়। প্রায় আশী বৎসর পূৰ্ব্বে কলিকাতার সংস্কৃত কলেজে জয়গোপাল তর্কালঙ্কার নামক একজন অধ্যাপক ছিলেন। কৃত্তিবাসের আমলের প্রাচীন ভাষাকে সাধারণের স্থবোধ করিবার জন্য তিনি কৃত্তিবাসী রামায়ণের ভাষার প্রায় আমূল সংস্কার করেন। কৃত্তিবাসের নামে