পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ × o (* অবস্থানকালে ঐ দেশীয় একটি চিকিৎসক-কন্যার পাণিগ্রহণ করেন এবং ব্ৰেজিলের সেনাদলে যোগদান করেন। নিজ কাৰ্য্যকুশলতায় তিনি অচিরে লেফট্‌ন্তান্ট পদে উন্নীত হন। ১৮৯৯ খৃষ্টাব্দে ব্ৰেজিলে রাষ্ট্রবিপ্লবের সময়ে তিনি সাধারণ তন্ত্রের পক্ষে বিশেষ সাহসের সহিত যুদ্ধ করেন। সেজন্য বিদেশী হইয়াও কর্ণেল পদ প্রাপ্ত হন। ১৯০৫ খৃষ্টাব্দে ২২এ সেপ্টেম্বর তিনি পরলোক গমন করেন। এখনও তাহার বংশীয়গণ ব্ৰেজিলে বাস করিতেছেন । মাজদিয়া স্টেশন হইতে ২০ মাইল দূরবর্তী কোটচাঁদপুর পর্য্যন্ত রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট একটি মোটরবাস সার্ভিস আছে। কোটচাঁদপুর যশোহর জেলার একটি বিখ্যাত বাণিজ্যস্থান। এক সময়ে ইহা দেশী চিনির কারবারের জন্য প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছিল। বাণপুর- কলিকাতা হইতে ৬১ মাইল দূর। এই স্থানের নিকটবর্তী মটিয়ারি গ্রামে কৃষ্ণনগর রাজবংশের প্রথম রাজধানী ছিল। এই বংশের প্রতিষ্ঠাতা ভবানন্দ মজুমদারের পৌত্র রাঘব এই স্থান হইতে বৰ্ত্তমান কৃষ্ণনগরে রাজধানী স্থানান্তরিত করেন। প্রাচীন রাজবাটীর ভগ্নাবশেষ আজিও মাটিয়ারিতে দৃষ্ট হয়। কথিত আছে, ভবানন্দ কাশীর অন্নপূর্ণমন্দির নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন। এখানে পীর মল্লিক গস নামক একজন মুসলমান সাধুর সমাধি আছে। অম্বুবাচীর সময় পীরের মৃত্যুতিথি উপলক্ষে এখানে একটি বৃহৎ মেলা হয়। মাটীয়ারি অতি প্রাচীন গ্রাম। কবিকঙ্কণ চণ্ডীতে শ্ৰীমন্ত সদাগরের সিংহল যাত্রার প্রসঙ্গে এই গ্রামের উল্লেখ দেখিতে পাওয়া যায়। দর্শন:- কলিকাতা হইতে ৭৫ মাইল। সম্প্রতি এখানে একটি প্রকাণ্ড চিনির কল স্থাপিত হইয়াছে । চুয়াডাঙ্গা-কলিকাতা হইতে ৮৪ মাইল দূর। স্টেশন হইতে চুয়াডাঙ্গা শহর প্রায় তিন মাইল দূর। ইহা নদীয়া জেলার একটি মহকুমা এবং ধান ও চাউলের একটি বিখ্যাত গঞ্জ । এই স্থান হইতে দুই মাইল পশ্চিমে উজিরপুর নামক গ্রামে একটি পুরাতন দীঘি ও অট্টালিকার ধ্বংসাবশেষ দৃষ্ট হয়। চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে নামিয়া নদীয়া জেলার অন্যতম মহকুমা মেহেরপুর যাইতে হয়। চুয়াডাঙ্গ হইতে মেহেরপুর পশ্চিমদিকে অবস্থিত এবং মোটরবাস যোগে ১৮ মাইল দূর। স্টেশনের পশ্চিমে অল্প দূর যাইয়া মাথাভাঙ্গা নদী খেয়া নৌকায় পার হইতে হয় । ভৈরব নদের তীরে অবস্থিত মেহেরপুর একটি প্রাচীন স্থান । কেহ কেহ বলেন যে, এই স্থানে মিহির ও খনার বাস ছিল এবং মিহিরের নাম হইতেই নাকি মিহিরপুর বা মেহেরপুর নাম হইয়াছে। মেহেরপুরের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে বলরাম হাড়ীর আখড়া ও গোয়াল চৌধুরীদিগের মন্দিরাদি প্রধান। বলরাম হাড়ী “বলরামভজ” নামক ধৰ্ম্মসম্প্রদায়ের প্রবর্তক। এই সম্প্রদায় অনেকটা মৰ্ত্তভঙ্গ সম্প্রদায়ের অনুরূপ। এই সম্প্রদায়েও জাতিভেদ নাই। বলরামের শিষ্যগণ তাহাকে স্ত্রীরামচন্দ্রের অবতার বলিয়া বিশ্বাস করেন। বলরাম প্রথম জীবনে জনৈক