পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

X o Wუ বাংলায় ভ্রমণ ধনীর বাটতে চৌকীদারের কার্য্য করিতেন। একবার মনিব কর্তৃক চোর অপবাদ দেওয়ার ফলে তাহার মনে বৈরাগ্যের উদয় হয় এবং তিনি সংসার ত্যাগ করিয়া যোগ সাধনায় আত্মনিয়োগ করেন । সাধনাবলে তিনি অলৌকিক শক্তির অধিকারী হইয়াছিলেন বলিয়া তাহার ভক্তগণের বিশ্বাস। প্রায় এক শত বৎসর পূর্বে বলরামের মৃত্যু হয়। মেহেরপুরের নিকট ভৈরব নদের তীরে তাহার সমাধির উপর নিৰ্ম্মিত মঠ বহু দূর হইতে লোকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। চৌধুরী উপাধিধারী গোপজাতীয় জমিদারগণ এক সময়ে মেহেরপুরে প্রাধান্য লাভ করিয়াছিলেন । র্তাহাদিগের দ্বারা নিৰ্ম্মিত বহু মন্দিরের মধ্যে একটি শিব ও একটি কালী-মন্দির আজিও বর্তমান আছে। কথিত আছে, বর্গির আক্রমণে বাধা দিতে গিয়া এই বংশ সপরিবারে ধ্বংস হয়। মেহেরপুরের মিউনিসিপ্যাল অফিস প্রভৃতি ইমারত গোয়াল চৌধুরীদিগের বাটীর ভগ্নস্তুপের ইষ্টকের দ্বারা নিৰ্ম্মিত। - মেহেরপুরের রসকদম্ব ও ক্ষীরের মিঠাই প্রসিদ্ধ। আলমডাঙ্গা– কলিকাতা হইতে ৯৪ মাইল দূর । ইহা নদীয়া জেলার একটি বিখ্যাত গঞ্জ । নদীয়া জেলার উত্তরে জলাঙ্গীর উৎপত্তির প্রায় ১০ মাইল পূৰ্ব্বদিকে পদ্মা হইতে বাহির হইয়া মাথাভাঙ্গা নদী আলমডাঙ্গ স্টেশনের প্রায় ৫ মাইল পশ্চিমে আসিয়া দুইভাগে বিভক্ত হইয়াছে ; কুমার নামে শাখাটি পূৰ্ব্বমুখে গিয়া আলমডাঙ্গ৷ স্টেশনের কিছু উত্তরে লাইনের নীচে দিয়া গিয়া নদীয়া, যশোহর ও খুলনা জেলার মধ্য দিয়া প্রবাহিত হইয়াছে। অপর শাখাটি মাথাভাঙ্গ নামেই লাইনের পশ্চিম দিয়া দক্ষিণে চলিয়া গিয়াছে। এককালে গঙ্গার প্রধান ধারা মাথাভাঙ্গ দিয়া ৰহিত । ( পাবনা দ্রষ্টব্য। ) আলমডাঙ্গর ৪ মাইল উত্তর-পূৰ্ব্বে গোস্বামী-দুর্গাপুর নামক গ্রামে রাধারমণের একটি অতি পুরাতন মন্দির আছে। এখানে কাৰ্ত্তিক পূর্ণিমা তিথি হইতে এক পক্ষ স্থায়ী একটি বৃহৎ মেলা হয়। কথিত আছে, পূৰ্ব্বে এই স্থানে গভীর জঙ্গল ছিল এবং সেই জঙ্গলের মধ্যে কমলাকান্ত গোস্বামী নামে একজন সুদর্শন তরুণ সন্ন্যাসী বাস করিতেন। একদিন একদল দস্থ্য স্থানান্তরে দস্তাবৃত্তি করিয়া এই বনের মধ্যে আসিয়া আশ্রয় গ্রহণ করে। দ্রুতগতিতে ছুটিয়া আসার জন্য তাঙ্গারা অত্যন্ত তৃষ্ণাৰ্ত্ত হইয়া পড়ে এবং সম্মুখে সন্ন্যাসকে দেখিতে পাইয়া তাঙ্গার নিকট পানীয় জল চাহে । সন্ন্যাসী অস্তুত ক্ষমতাবলে স্বীয় ক্ষুদ্র কমণ্ডলু হইতে জল দিয়া সমগ্র দসু্যদলের পিপাসা নিবৃত্তি করেন। দমু্যদলের লুষ্ঠিত দ্রব্যের মধ্যে একটি রাধারমণ (কৃষ্ণ) বিগ্রহ ছিল। সন্ন্যাসীর অদ্ভুত ক্ষমতা দর্শনে মুগ্ধ হইয়া তাহারা সেই বিগ্রহটি তাঙ্গকে দান করে। সন্ন্যাসীও বিগ্রহটিকে যথাবিধি পূজা করিতে থাকেন। এই ঘটনার কিছুকাল পরে জয়দিয়ার রাজা মুকুটরায় স্বীয় তরুণী কন্যা দুর্গাবতীকে সঙ্গে লইয়া শিকারে বহির্গত হন এবং এই অরণ্য মধ্যে সন্ন্যাসীর সাক্ষাৎ পান । তরুণ সন্ন্যাসীর সুন্দর মূৰ্ত্তি ও গাম্ভীৰ্য্য দর্শনে রাজা বিশেষ মুগ্ধ হন এবং রাজকন্যা তাহার প্রতি আকৃষ্ট হন । সন্ন্যাসীও রাজকন্যার রূপ দর্শনে প্রীতিলাভ করেন। রাজা উভয়ের মনোভাব বুঝিতে পারিয়া তাহাদের বিবাহের আয়োজন করেন এবং এই অরণ্যমধ্যে একটি সুন্দর নগর নির্মাণ করিয়া উহার নাম দেন গোস্বামীতুর্গাপুর। গোস্বামী-দুর্গাপুরের বর্তমান মন্দিরে যে শিলালিপি আছে তাহা হইতে জানা