পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ববঙ্গ রেলপথে বাংলা দেশ SSS গটিয়াপাড়া ঘাট হইতে ৩৪ মাইল দক্ষিণ-পূৰ্ব্বে মধুমতী পার হইয়া যশোর জেলার অন্তর্গত ইত না একটি প্রাচীন গ্রাম। এই গ্রামের রায় বংশের পূর্বপুরুষ পরমানন্দ রায় ভূষণাধিপতি মুকুন্দরামের একজন সেনাপতি ছিলেন। ইহার পত্নী একটি অপূৰ্ব্ব কারুকার্যখচিত মঠ প্রতিষ্ঠা করেন। ইনি ঘোষবংশের কন্যা বলিয়া মঠটি “ঘোষদুহিতার মঠ” নামে পরিচিত। মঠের ইষ্টকলিপি হইতে জানা যায় যে ১৬১৮ খৃষ্টাবে “জগৎগুরু" শ্রীপতি নারায়ণের পরিতোষের জন্য ইহা প্রতিষ্ঠিত হয় । রাজবাড়ী কলিকাতা হইতে ১৪৬ মাইল দূর। গোয়ালন্দ মহকুমার সদর দপ্তর রাজবাড়ীতে অবস্থিত । স্টেশন হইতে ৪৷৫ মাইল দক্ষিণে হমদমপুর একটি প্রাচীন ও প্রসিদ্ধ গ্রাম। ইহার এক অংশ মূলঘর নামে পরিচিত। এখানে প্রসিদ্ধ সরযূপারীগ্রহবিপ্রবংশীয় আচার্যাদিগের বাটতে স্ফটিকনিৰ্ম্মিত অতি মনোরম সূর্যমূৰ্ত্তি ও দামোদর নামক নারায়ণমূৰ্ত্তি প্রতিষ্ঠিত আছেন । এই বিগ্রহের সেবার জন্য পূৰ্ব্বে রাজা সীতারাম রায় ও নাটোর জমিদারগণ ভূমি দান করিয়াছিলেন। মূলঘরে পূৰ্ব্বে সংস্কৃত চর্চা ছিল। কথিত আছে রাজা সীতারামের সময়ে সরযূপারী গ্রহবিপ্ৰগণ প্রথম এঅঞ্চলে আগমন করেন। ইহার জ্যোতিষশাস্ত্রে সুপণ্ডিত ছিলেন । হমদমপুরের এক মাইল পশ্চিমে পাঁচখুপিও একটি প্রাচীন গ্রাম। পূৰ্ব্বে পাচথপির কাছ দিয়া পদ্মা বঙ্কিত; এখনও মরাপদ্মার চিহ্ন নিকটে কিছু কিছু দৃষ্ট হয়। পাঁচখুপির উত্তরে রাধাগঞ্জ নামে তখন একটি বড় বন্দর ছিল এবং তথা হইতে মুঘল সৈন্তোর যাতায়াতের জন্য রাজাপুর পর্যন্ত একটি চওড়া রাস্ত ছিল। উহা পল্টনের রাস্ত নামে অভিহিত হইত। বাণীবহের নাওয়ার চৌধুরীগণের আদিবাস পাচথপিতে ছিল ; তথা হইতে তাহারা বাণীবহে উঠিয়া যান । পাচুরিয়া জংশন কলিকাতা হইতে ১৫১ মাইল দূর । এখান হষ্টতে একটি শাখা লাইন ১৫ মাইল দূরবর্তী ফরিদপুর পর্যন্ত গিয়াছে। ফরিদপুর—কলিকাতা হইতে ১৬৬ মাইল দূর। জেলার সদর শহর ফরিদপুর মরাপদ্মা নামে একটি খালের উপর অবস্থিত । ইহার পূর্বব দিকে মাদারতলা খাল ও পশ্চিমে ফরিদপুরের জেলা নামে আরও দুইটি খাল আছে। শহরের দক্ষিণ দিকে ঢোল সমুদ্র নামে একটি প্ৰকাণ্ড বিল আছে । বর্ষাকালে এই বিলের জল শহরের প্রান্তদেশ পর্য্যন্ত আসিয়া পৌছে । ফরিদ খা নামক এক ফকিরের নাম হইতে ফরিদপুরের নামকরণ ঠষ্টয়াছে বলিয়া কথিত। ফরিদখার দরগাহ কাছারীর উত্তরে দৃষ্ট হয়। পূর্বে এই শহরের কমলাপুরপাড়ার উত্তর পশ্চিমে পদ্মা বহিত এবং তাহার নিকটে বনমধ্যে একটি ডাকাতের দলের আডড ছিল । ইহার নেতৃত্ব করিত ছবদরা নামে একটি স্ত্রীলোক ; এই ডাকাতের দল দমন করিবার জন্য প্রথমে এখানে মহকুমার প্রতিষ্ঠা হয়, এবং পরে ইঙ্গ জেলার সদরে পরিণত হইয়াছে। ফরিদপুরে রাজেন্দ্র কলেজ নামে একটি দ্বিতীয় শ্রেণীর কলেজ আছে। পরলোক গত বিখ্যাত জননায়ক অম্বিকাচরণ মজুমদার মহাশয় ফরিদপুরের অধিবাসী ছিলেন। কয়েক বৎসর হইল পুরাতন ফরিদপুর সটেশনটির নাম পরিবর্তন করিয়া তাহার