পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গ রেলপথে বাংলা দেশ Σ Σ 5 আবদুলপুর জংশন—কলিকাতা হইতে ১৩৬ মাইল দূর। এই স্থান হইতে কটি শাখা লাইন রাজশাহী ও গোদাগাড়ী-কাটিহার শাখার আমনুর জংশন হইয়া ,ালদহ জেলার চাপাই-নবাবগঞ্জ পর্য্যন্ত গিয়াছে। এই শাখা পথে নন্দনগাছি সরদা রোড, রাজশাহী, খেতুর রোড ও চাপাই-নবাবগঞ্জ উল্লেখযোগ্য স্টেশন । ঈশ্বরদি জশন হইতে চপাই-নবাবগঞ্জ পর্য্যন্ত সরাসরি গাড়ী যাতাযাত করে। নন্দনগাছি—আবহ্বলপুর জংশন হইতে ১১ মাইল। এখান হইতে ৪ মাইল উত্তরে পুটিয় অবস্থিত। এখানে একটি প্রাচীন ও প্রসিদ্ধ জমিদার বংশের বাস। এই বংশের পূর্বপুরুষ বৎসাচাৰ্য্য খুষ্টীয় ষোড়শ শতাব্দীর শেষ ভাগে পুটিয়ার নিকটবৰ্ত্তী একটি গ্রামে ধৰ্ম্মসাধনায় লিপ্ত থাকেন; তাহার শাস্ত্রজ্ঞান এবং সাধু চরিত্রর কথা চারিদিকে খ্যাত ছিল। আকবরের সেনাপতি মহারাজ মানসিংহ যখন পাঠান সর্দারগণকে দমন করিবার জন্য এ অঞ্চলে আগমন করেন তখন তিনি বৎসাচার্যের সহিত সাক্ষাৎ করেন এবং তাহার বিদ্যাবত্তা ও তন্ত্রশাস্ত্রজ্ঞানে মুগ্ধ হইয়া পাঠান জায়গীরদার লস্কর খার জমিদারী তাহাকে অর্পণ করিতে চাহেন । বৎসাচার্য্য ইহা প্রত্যাখ্যান করিলে মানসিংহ তাহার পুত্ৰ পীতাম্বরকে ইহা অর্পণ করেন , পীতাম্বরের মৃত্যুর পর তাহার ভ্রান্ত নীলাম্বর এই জমিদারীর উত্তরাধিকারী হন এবং সম্রাট জাহাঙ্গীরের নিকট হইতে রাজা উপাধি লাভ করেন । এই জমিদারী এখন পাচ আনী, চার আনী, এক আনী প্ৰভৃতি কয়েকটি তরফে বিভক্ত । জমিদারগণের প্রতিষ্ঠিত শিবসাগর নামক সুন্দর একটি পুষ্করিণীর তীরে ভুবনেশ্বর মহাদেবের একটি চমৎকার সুউচ্চ পঞ্চরত্ন মন্দির আছে । গোবিন্দ সরোবর নামক আর একটি জলাশয়ের ধারে দোলমণ্ডপ এবং ইহার সম্মুখে পাচ আনী রাজবাটীতে গোবিন্দদেবের সুন্দর কারুকার্যখচিত ইষ্টক-নিৰ্ম্মিত মন্দির আছে । পুটিয়ার মহারাণী শরৎসুন্দরী দেবী দান এবং পুণ্যকাৰ্য্যে বহু অর্থ ব্যয় করিয়াছিলেন । ১৮৭৭ খৃষ্টাব্দে তিনি সরকারের নিকট হইতে মহারাণী উপাধি লাভ করেন । পুটিয়ার ১২ মাইল উত্তরে তাহিরপুর গ্রামে আর একটি অতি প্রাচীন জমিদার বংশের বাস। নাটোর স্টেশন হইতেও তাহিরপুর যাওয়া যায়। সেখান হইতেও এইস্থান প্রায় ১১ মাইল উত্তর-পশ্চিমে, তবে পথে একটি খেয়া পার হইতে হয় । কথিত আছে, তাহিরপুর জমিদারবংশের প্রতিষ্ঠাতা বারেন্দ্র ব্রাহ্মণ কামদেব ভট্ট খৃষ্টীয় পঞ্চদশ শতাব্দীর প্রথমভাগে একজন পাঠান জায়গীরদারকে পরাজিত করিয়া তাহার সম্পত্তি অধিকার করেন। কামদেব ভট্টের বংশীয়গণের মধ্যে রাজ কংসনারায়ণই সৰ্ব্বপ্রধান। ইনি খ্রীয় পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষভাগে এবং ষোড়শ শতাব্দীর প্রথমভাগে এ অঞ্চলে প্রবল গ্রতাপে রাজত্ব করিয়াছিলেন । তিনি মগদিগের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করিয়াছিলেন এবং বীরভূ ইয়াদের অন্যতম ছিলেন বলয়। কথিত । র্তাহার পিতামহ উদয়নারায়ণ প্রসিদ্ধ রাজা গণেশের সময়ে রাজা উপাধি পাইয়াছিলেন। কংসনারায়ণ বাংলায় আধুনিকালের ই গাংসবের প্রবৰ্ত্তক বলিয়া প্রসিদ্ধ । এই সম্বন্ধে কিংবদন্তী প্রচলিত আছে যে বুদ্ধ বসে রাজা কংসনারায়ণ একটি মহাযজ্ঞ সম্পাদন করিবার মনস্থ করিলে তখনকার দিনে