পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〉ミ● বাংলায় ল্যাণ পণ্ডিতগণ ব্যবস্থা দিয়াছিলেন যে তিনি সামন্তরাজা বিধায় বিশ্বজিৎ ও রাজসূয় যজ্ঞ করিবার অধিকারী নহেন এবং কলিতে অশ্বমেধ বা গোমেধ যজ্ঞও নিষদ্ধ। সে জন্য র্তাহারা কংসনারায়ণকে রামচন্দ্রের ন্যায় শারদীয় দুর্গোৎসব করিবার পরামর্শ দান করেন। কংসনারায়ণের পুরোহিতবংশীয় সুপণ্ডিত রমেশ শাস্ত্রী প্রভৃতি বহু আয়াস স্বী গর করিয়া পূজার পদ্ধতি বা বিধি প্রস্তুত করিয়াছিলেন এবং সাড়ে আট লক্ষ টাকা ব্যয় করিয়া সাড়ম্বরে কংসনারায়ণ তুর্গাপূজা করিয়াছিলেন । ইহাতে চারিদিকে কংসনারায়ণের নাম প্রচারিত হয়। ইহাতে নিকটবৰ্ত্তী ভাতুরিয়া পরগণার ভূম্যধিকার রাজা জগৎনারায়ণ ঈর্ষান্বিত হইয়া নয় লক্ষ টাকা ব্যয়ে হর্গাপূজার প্রবর্তক সুরথ রাজার হায় শুকাল বসন্তকালে বহু ধুমধামের সহিত পূজা সম্পন্ন করেন, কিন্তু তথাপি কংসনারায়ণের অকালের শারদীয়া পূজা বাংলার চারিদিকে প্রচলিত হইল এবং মুকালের বাসন্তী পূজার বিশেষ চলন হয় নাই। কথিত আছে, ইহা লক্ষ্য করিয়া জগৎনারায়ণ দুঃখ করিলে তাহার পুরোহিত নাকি তাহাকে বলিয়াছিলেন যে কংসনারায়ণের পূজার উদ্দেশ্ব ছিল ধৰ্ম্মসাধন এবং তাহার ছিল ঈর্ষা ও দাম্ভিকতা প্রকাশ এবং সেই অনুপাতেই দুজনে ফললাভ করিয়াছেন। যাহা হউক শারদীয়া ও বাসন্তীপূজা তদবধি বাংলাদেশে অন্তষ্ঠিত হুইতেছে এবং ভারতের অপর কোন স্থানেই এই ধরণের পূজার ব্যবস্থা নাই । কথিত আছে রাজা কংসনারায়ণই বারেন্দ্র ব্রাহ্মণগণকে কুলীন, কাপ ও শ্রোত্রিয় এই তিন শ্রেণীতে বিভক্ত করেন। অষ্টাদশ শতাব্দীতে কংসনারায়ণের বংশের পুত্রশাখা লুপ্ত হইলে, কন্যাশাখা হইতে তাহিরপুরের বর্তমান রাজবংশের আরম্ভ হয়। সরদা রোড—আবদুলপুর জংশন হইতে ১৫ মাইল দূর । এই স্থান হইতে ৩ মাইল দক্ষিণে গঙ্গাতীরবর্তী সরদা বা সরদহে যাইতে হয়। তথায় বাংলার পুলিশ বিভাগীয় কৰ্ম্মচারিগণের জন্য একটি ট্রেণিং কলেজ আছে। যে বাড়ীতে কলেজটি অবস্থিত পূৰ্ব্বে উহা ঈস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানির রেশমকুঠি ছিল। পদ্মাতীরবর্তী এই কলেজটির অবস্থান অতি মনোরম । কলেজের পাশেই তখনকার দিনের একটি ছোট গোরস্থান আছে ; ফরাসীভাষায় উৎকীর্ণ একটি সমাধিস্তম্ভ হইতে জানিতে পারা যায় যে ১৮৩৭ খৃষ্টাব্দে একটি ফরাসী শিশু এখানে সমাহিত হইয়াছিল। সরদার নিকটেই পদ্মা হইতে বড়াল নদী উঠিয়াছে ; এই নদীর অপর পারে চারঘাট গ্রাম এ অঞ্চলের একটি বাণিজ্যকেন্দ্র। নদী পারাপারের জন্য এখানে একটি খেয়া "مما চারঘাট হইতে ১১ মাইল দক্ষিণপূৰ্ব্বে বাঘা গ্রাম ; প্রধান লাইনের গোপালপুর টশন হইতেও এখানে আসা যায় ; পশ্চিমে ১২।১৩ মাইল পথ । এই গ্রামে একটি সুন্দর প্রাচীন মসজিদ আছে। ইহার শিলালিপি পাঠে জানা যায় যে গৌড়রাজ নসরৎশাহ ১৫২৩ খৃষ্টাব্দে এই মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। মসজিদটি একটি প্রকাও পুষ্করিণীর ধারে অবস্থিত। ইহা গৌড়ের তৎকালীন মসজিদ প্রভৃতির ধরণে নিৰ্ম্মিত ।