পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ ১২৭ বিখ্যাত স্থান। সাস্তাহার জংশন হইতে একটি মাঝারি মাপের লাইন (মিটার গেজ) বগুড়া ও গাইবান্ধী হইয়া পাৰ্ব্বতীপুর-আজিমগাও লাইনের কাউনিয়া জংশন পর্য্যন্ত গিয়ছে। সান্তাম্বারের চারি মাইল পশ্চিমে অবস্থিত নওগ রাজসাচী জেলার অন্যতম মহকুমা। সান্তাহার সটেশন হইতে নওগাঁ পৰ্য্যন্ত ঘোড়ার গাড়ী বা মোটরবাসে যাওয়া যায় । নওগাঁর শহরে গাজার বড় বড় গুদাম দেখিতে পাওয়া যায়। নাওগ থানা এবং নিকটবর্তী বাদলগাছী ও মহাদেবপুর থানার কয়েকটি গ্রামে সরকারী তত্ত্বাবধানে গাজার চাষ হইয়া থাকে ; এই গাজার চাষের জন্যই নওগ একটি মহকুমার সদরে পরিণত হইয়াছে । নওগা হইতে ৫ মাইল দক্ষিণপশ্চিমে দুবলহাটী গ্রামে একটি প্রাচীন জমিদার বংশের বাস। কথিত আছে, এই বংশের প্রতিষ্ঠাতা জগৎরাম রায় বাণিজ্য ব্যপদেশে এই স্থান দিয়া নৌকাযোগে যাইবার সময়ে স্বপ্নাদিষ্ট হইয়। রাজরাজেশ্বরীর মূৰ্ত্তি প্রতিষ্ঠা করিয়া এই গ্রামেই বাস করিতে আরম্ভ করেন। এইরূপেই তাহার জমীদারীর সূত্রপাত হয়। নবাব সরকারে তাহার বাৎসরিক খাজনা ধাৰ্য্য হইয়াছিল ১১ কাহন কই মাছ। নওগ হইতে ১১ মাইল উত্তরপশ্চিমে বলি হার গ্রামেও একটি জমিদার বংশ আছেন। গ্রামের নিকটেই ৫০৷৬০টি পুষ্করিণী দৃষ্ট হয়। প্রবাদ, মহারাজ মানসিংহ যখন পাঠানদিগকে দমন করিতে বাংলায় আসেন তখন তাহার সৈন্যদল কর্তৃক এগুলি খনিত হইয়াছিল । সান্তাহার হইতে ১১ মাইল ও নওগা হইতে ৮ মাইল পশ্চমে “ভীমের জাঙ্গাল" ও "ভীম সাগর” দীঘি অবস্থিত। ভীমের জাঙ্গাল নামক তুর্গপাকারবং রাজপথ উত্তরবঙ্গের নানা স্থানে দৃষ্ট হয়। ইহা প্রসিদ্ধ জননায়ক মহাবীর দিব্যের ভ্রাতৃপুত্র ভীমের কীৰ্ত্তি বলিয়া প্রসিদ্ধ। দ্বাদশ শতাব্দীতে পালবংশীয় রাজা দ্বিতীয় মহীপাল অত্যন্ত অত্যাচারী হইয়া উঠায় বাংলার প্রজাপুঞ্জ র্তাহার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে এবং সম্মুখযুদ্ধে তাহাকে হত্যা করিয়া বিদ্রোহের নায়ক মহাবীর দিব্যকে তাহাদের রাজ নিৰ্ব্বাচিত করে । দিব্য অত্যন্ত কৰ্ত্তব্যনিষ্ঠার সহত এই গুরুভার পালন করেন । তাহার মৃত্যুর পর তাহার ভ্রাত রুদোকের পুত্র ভীম বরেন্দ্রীর সিংহাসন লাভ করেন। দিব্য ও ভীমের স্মৃতি বিজড়িত বহু কীৰ্ত্তি চিহ্ন উত্তরবঙ্গের নানাস্থানে দেখিতে পাওয়া যায় । ( “জয়পুরহাট” ও “বগুড়া” দ্রষ্টব্য।) মহীপালের পুত্র রামপাল অনন্ত সামন্ত চক্রের সহায়তায় ভীমকে যুদ্ধে নিহত করিয়া পিতৃভূমির পুনরুদ্ধার করেন। এই আখ্যায়িকা অবলম্বনে রামপালের মহাসন্ধিবিগ্রহিক প্রজাপতি নদীর পুত্র সন্ধাকর নন্দী “রামচরিতম্” নামক এক দ্ব্যর্থ সূচক সংস্কৃত কাব্য রচনা করেন। ইহার প্রত্যেক শ্লোকেরই ছুইভাবে অর্থ করা যাইতে পারে, এক অর্থে রামপালের ভীমকে নিধন করিয়া বরেন্দ্রী ভূমির উদ্ধার ও অপর অর্থে রাম চন্দ্র কর্তৃক রাবণকে বধ করিয়া সীতার উদ্ধার সাধন—এই তই প্রকার অর্থ ষ্ট