পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৩২ বাংলায় ভ্রমণ প্রধান মন্দির বা বিহারটি ঘিরিয়া পাহাড়পুরের বিরাট সমচতুভুজ সঙ্ঘারামটি অবস্থিত ; ইহার প্রতিটি ভুজ বাহিরে ৮২২ ফুট লম্বা। বৌদ্ধভিক্ষুদের এত বড় সঙ্ঘারাম ভারতে আর কোথাও নিৰ্ম্মিত হয় নাই। ইহাতে সারিসারি চারিটি ভুজে ১৮৯ কুঠুরী ও প্রবেশমুখে একটি বড় দালান আছে ; কুঠুরীগুলির সম্মুখে ৮৯ ফুট লম্বা একটি বারান্দা ঘুরিয়া গিয়াছে। এই কুঠুরীগুলির মধ্যে ৯২টিতে উচ্চ পূজার বেদী দৃষ্ট হয় ; একটি মহাবিহারের নিকট সঙ্ঘারাম মধ্যে এতগুলি পৃথক পূজার স্থান থাকিবার কি উদ্দেশ্য ছিল তাহা নিরূপিত হয় নাই । - পাহাড়পুর স্তপের কারুকার্য ( প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সৌজন্তে ) সঙ্ঘারামের পূর্বদিকে এবং ইহার বাহির প্রাচীর হইতে প্রায় ১০০ ফুট দূরে সত্যপীরের ভিটা নামক ক্ষুদ্র স্তৃপ খনন করিয়া তারার মন্দির পাওয়া গিয়াছে। ইহার সহিত দূরবর্তী কালে একটি গ্রাম্য কাহিনী যুক্ত হওয়ার ইহার সত্যপীরের ভিটা নাম হইয়াছে। কথিত আছে, এই স্থানের রাজা মহীদলনের কন্যা সন্ধ্যাবতীর পুত্র সত্যপীর একজন বিশিষ্ট ধাৰ্ম্মিক ও সাধু বলিয়া পরিচিত হইয়াছিলেন এবং একটি ভীষণ বন্যায় ইনি ভাসিয়া গিয়াছিলেন। সঙ্ঘারামের বাহিরের প্রাচীর হইতে ১৬০ ফুট দক্ষিণ-পূর্বে একটি প্রাচীন স্নানের ঘাট আবিষ্কৃত হইয়াছে। গ্রাম্যকাহিনী অনুসারে রাজকন্যা সন্ধ্যাবর্তী এই ঘাটে প্রত্যহ স্নান করিতেন । পাহাড়পুরে পালযুগের পূৰ্ব্বেকার নিদর্শন কিছু কিছু পাওয়া গেলেও ইহার মহাবিহার সঙ্ঘারাম প্রভৃতি পালযুগে খৃষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত।