পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ $ (&\ჭ) এইবার সহজে পর্বতগাত্রের উপরে উঠিবার অপর অবলম্বন প্রথম রিভাসটি reverse) আসিয়া পড়িবে ; ইহার সাহায্যে ট্রেণ প্রথমে সম্মুখে অগ্রসর হইয়া পরে কিছু পিছু হটিয়া আবার সম্মুখে চলিয়া ক্রমশঃ উচ্চ হইতে উচ্চতর পথ ধরিয়া উপরের দিকে উঠতে থাকে। প্রথম রিভাসটির পরই শিলিগুড়ি হইতে ২০ মাইল দূরবর্তী তিনধারিয়া স্টেশন। সমুদ্রপৃষ্ঠ হইতে তিনধারিয়ার উচ্চতা ২,৮২২ ফুট। এখানে দাজিলিং-হিমালয়ান রেলওয়ের গাড়ী ও ইঞ্জিনের কারখানা অবস্থিত। পূৰ্ব্বদিকে প্ল্যাটফরমের অপর ধারে ভূটানের রুক্ষ্ম পৰ্ব্বতশ্রেণী এবং কিছু দক্ষিণদিকে তিস্তা ও মহানদী বাংলার সমতল ভূমিতে প্রবাহিতা দেখা যায়। গয়াবাড়ীর নিকটবৰ্ত্তী দৃষ্ঠ তিনধারিয়া ছাড়িয়া যথাক্রমে ২ নং রিভাস্, ৪ নং চক্র ও ৩ নং রিভাস পার হইয়া শিলিগুড়ি হইতে ২৪ মাইল দূরবর্তী গয়াবাড়ী স্টেশন। ইহা সমুদ্রপৃষ্ঠ হইতে ৩,৪৮০ ফুট উচ্চ। গয়াবাড়ীর পরই ৪নং বা শেষ রিভাসটি পড়ে। এখানকার পাথর লক্ষ্য করিবার বিষয় ; ভূতত্ত্ববিদগণ ইহার নাম দিয়াছেন “সিকিম নাইস” । কাছেই প্রসিদ্ধ পাগলাঝোরার নিকট জল লইবার জন্য গাড়ী থামে। মধ্যে মধ্যে হঠাৎ অধিক বারিপাতের জন্য ইহা ফাপিয়া ফুলিয়া উন্মত্ত বেগে বহিতে থাকে ; এই জন্য ইঙ্গা পাগলা ত্যাখ্যা পাইয়াছে। এখানে ছয় ঘণ্টার মধ্যে চৌদ্ধ ইঞ্চি পর্য্যন্ত বারিপাত হইতে দেখা গিয়াছে। পাগল ঝোরা প্রথম প্রথম রেলপথের অনেক ক্ষতি করিয়াছিল ; এখন তাহাকে শৃঙ্খলিত করিয়া অনেকটা আয়ত্তের মধ্যে আনা হইয়াছে। এই উদাম ও খেয়ালী জলধারাটিকে বন্ধননিপীড়িত দেখিয়া কবি সত্যেন্দ্রনাথ ব্যথিত হইয়াছিলেন।