পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ববঙ্গ রেলপথে বাংলা দেশ ১৬৫ - مصعباس سے সনদকৃফুএর মত দৃশ্যাবলী সম্মুখে বিরাজিত, তবে এভারেস্টকে প্রায়ই দেখা যায় না; কারণ মাকালু দিয়া ঢাকা পড়িয়া যায়। কিন্তু মাত্র ৩০ মাইল দূরে অবস্থিত কাঞ্চনজঙ্ঘা ও তাহার নিকটস্থ শিখরগুলি আরও বড় দেখায়। ফালুট কথাটি আসিয়াছে লেপচা ভাযায় “ফাক-লুট” হইতে, ইহার অর্থ খোলা-ছাড়ানো পাহাড়। এই নামের কারণ, এই পাহাড় শুষ্ক বৃক্ষহীন, কিন্তু ইহার নীচের পাহাড়গুলি ঘন জঙ্গলে পূর্ণ। দাৰ্জিলিং হইতে একদিনে জোড়পোথুরী, দ্বিতীয় দিনে তলু বাংলা, তৃতীয় দিনে সনদকফু ও চতুর্থ দিনে ফালুট পৌছান যায় এবং আট দিনে দার্জিলিং ফিরিয়া আসা যায়। ফালুট না যাইতে পারিলেও ছয় দিনে সনদকফু একবার দেখিয়া আসা উচিত। ঘুমের জোড়বাংলা বাজারের মধ্য দিয়া পুৰ্ব্বদিকে কালিম্পংএর রাস্তাটি গিয়াছে। রঙ্গরুন জঙ্গলের মধ্য দিয়া গিয়া ৬ মাইল পরে রাস্ত সরু হইয়া গিয়াছে এবং বাকী রাস্তাটুকু অশ্বপৃষ্ঠে বা পদব্রজে যাইতে হয় । এখান হইতে আরও ৮ মাইল গিয়া ঘুম হইতে ১৪ মাইল দূরবর্তী লোপচু বাংলায় পৌঁছান যায় ; এখান হইতে রঙ্গীত উপত্যক, ভূটান পাহাড় ও কালিম্পং মুন্দর দেখা যায়। লোপূচু হইতে অরণ্য মধ্যদিয়া ৫ মাইল নামিলে পশোক বাংলা। ইহা ছাড়িয়া অল্প দূর গেলে ২,৫০০ ফুট নিম্নে অবস্থিত রঙ্গীত ও তিস্তার সঙ্গম অতি সুন্দর দেখায় । . লোপ্ৰচু হইতে কালিম্পংএর রাস্ত ধরিয়া আর মাত্র ৭ মাইল যাইলে তিস্তা নদী দেখা যায়। ঘুম হইতে তিস্তা তীর পর্য্যন্ত ২১ মাইলে পথটি ৭,০০০ ফুট হইতে ৭০০ ফুটে নামিয়াছে। তিস্তার উপর এই স্থানে একটি সুন্দর বুলান সাকো আছে ; শিলিগুড়ি হইতে কালিম্পং আসিতে হইলেও এই সাকো পার হইতে হয় । এই সাকো পার হইয়া ভাল গাড়ীর রাস্তায় কালিম্পং ৯০ মাইল দূর, কিন্তু অশ্বপৃষ্ঠে, রিকশাতে বা পদব্রজে সোজা পাহাড়ে রাস্ত দিয়া মাত্র ৭ মাইল পড়ে। এই সাকো হইতে মাত্র ৩ মাইল উত্তরে তিস্তার পশ্চিমকুলে গ্রেট রঙ্গীত নদী আসিয়া মিশিয়াছে। ইহা দার্জিলিং জেলার মধ্যে একটি প্রসিদ্ধ রমণীয় স্থান। অরণ্যবেষ্টিত দুইটি পাৰ্ব্বত্য নদীর এই সঙ্গম স্থলটি সত্যই অতি মনোরম ৷ লক্ষ্য করিবার বিষয় দুইটি নদীর জলের রং সম্পূর্ণ বিভিন্ন। তিস্তার জল স্ফীত ও হুন্ধশুভ্র ও রঙ্গীতের জল স্বচ্ছ ও ঘোর সবুজ। এই রংঙের পার্থক্য সঙ্গমের পরেও বহুদূর পর্য্যন্ত দৃষ্ট হয়। তাহা ছাড়া রঙ্গীতের জল তিস্তার জল অপেক্ষা অনেক উষ্ণ । এই বর্ণ ও তাপের পার্থক্যের কারণ রঙ্গীত প্রধানতঃ নিম্ন হিমালয়ের বারিপাত হইতে পুষ্ট আর তিস্তা উচ্চ হিমালয়ের তুষার ধারা হইতে উদ্ভূত। - - দাৰ্জিলিং হইতে লেপচু, পশোক ও কালিম্পং যথাক্রমে ২, ৩ ও ৪ দিনে দেখিয়া ফিরিয়া আসা যায়। - . - দাৰ্জিলিং হইতে এই সকল ও অন্যান্য স্থান দেখিয়া আসিতে হইলে ডেপুটি কমিশনরের দপ্তর হইতে প্রকাশিত নোটস অন টুরস্ (Notes on Tours) দ্রষ্টব্য। তাহ ই" ডাকবাংলোর ব্যবস্থা এই দপ্তরেই করিতে হইবে।