পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>bペ বাংলায় ভ্রমণ \, ধপধপির দক্ষিণরায়ের মূৰ্ত্তিটি যোদ্ধবেশধারী ও অতি বীরত্ব-ব্যঞ্জক। ইহা । পরিধানে কাষায় বস্ত্র, গলে উত্তরীয়, মস্তকে উষ্ণীষ, কণে সুবর্ণ কুণ্ডল, প্রকো ্যে সুবর্ণবলয়, পৃষ্ঠদেশে বানপূর্ণ তুণীর ও ধন্থ, হস্তে নালিকা ও উন্মুক্ত কৃপাণ এবং কোমরবন্ধে শাণিত ছুরিকা। এইরূপ বীরবেশধারী বিগ্রহ বাংলার আর কোথাও নাই । দেখিলে মনে হয় সুন্দরবনের দেবতার এই অপরূপ রূপ-সজ্জা স্থানোপযোগীই বটে। এই দেবতার স্বতন্ত্র কোন ধ্যান নাই। গণেশের ধ্যানে ইহার পূজা হইয়া থাকে। বাতরোগ-গ্রস্ত বহু রোগী ও র্তাহাদের আত্মীয় স্বজন এই দেবতার কুপা লাভের জন্য এখানে আগমন করেন। প্রতি শনি ও মঙ্গলবারে এখানে ছোটখাট মেলা হয় এবং মাঘ মাসের ১লা তারিখে সমস্ত দিবস ধরিয়া মহাসমারোহে দেবতার পূজা ও এতদুপলক্ষে বাতের ঔষধ লইবার জন্য বহু যাত্রীর সমাগম হয় । - ধপধপির অদূরে প্রাচীন ভাগীরথীর গর্ভে "কালীদহ” ও “শিঙ্গদহ” নামে দুইটি দহ দেখা যায়। প্রবাদ, সিংহল যাত্রাকালে শ্ৰীমন্ত সদাগর এই কালীদহেই নাকি কমলে কামিনী দর্শন করিয়াছিলেন । “দ্বারীর জাঙ্গল” নামে একটি প্রাচীন রাজপথের ভগ্নাবশেষও এখানে দেখিতে পাওয়া যায়। এই পথ দিয়াই শ্রীচৈতন্যদেব পুরী যাত্রা করিয়াছিলেন । দক্ষিণ বারশত কলিকাতা হইতে ২৬ মাইল দূর । এখানে একটি কালী মন্দির এবং “আছামহেশ” নামে একটি প্রাচীন শিবলিঙ্গ বিদ্যমান আছেন । কথিত আছে, পিতার অন্বেষণে সিংহল যাত্রাকালে শ্ৰীমন্ত সদাগর এই শিবের অর্চনা করিয়াছিলেন। শ্ৰীমন্ত সদাগর একশত বার এই শিবকে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান করিয়াছিলেন বলিয়া এই স্থানের নাম “বারাশত” হয়—এইরূপ একটি প্রবাদও প্রচলিত আছে এবং এই জেলার অন্ততম মহকুমা সদর বারাসাতের সহিত পার্থক্য করিবার জন্য ইহার “দক্ষিণ" বিশেষণ মিলিয়াছে। এখানকার শিবের মন্দিরটি খুব প্রাচীন। কয়েকটি সিড়ি বাহিয়া নীচে নামিয়া মন্দির গর্ভে শিবকে দর্শন করিতে হয়। মন্দিরের নিকটে একটি পুষ্করিণী আছে। বর্ষাকালে পুষ্করিণীটির জল বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মন্দির অভ্যন্তরস্থ শিবলিঙ্গের কুগুটি জলপ্লাবিত হইয়া যায়। ভূনিম্ন দিয়া গর্ভ মন্দিরের সহিত এই পুষ্করিণীটির যোগাযোগ আছে বলিয়াই এইরূপ সংঘটিত হয় । “আছা মহেশ” এই অঞ্চলের একটি বিখ্যাত দেবস্থান । শিবরাত্রির সময় এখানে বহু জনসমাগম হয়। অচলানন্দ তীর্থস্বামী নামক একজন সাধুর সমাধি এই গ্রামে আছে। বহড়--কলিকাতা হইতে ২৮ মাইল দূর। ইহাও একটি প্রাচীন গ্রাম। এই স্থানের প্রাচীন নাম “বড় ক্ষেত্র”। এখানকার জমিদার বস্তুদিগের প্রতিষ্ঠিত শামসুন্দর জীউর মন্দিরের কারুকার্য অতি সুন্দর । এই বংশীয় দেওয়ান নন্দকুমার বসু মহাশয় উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম পাদে প্রায় তিন লক্ষ টাকা ব্যয়ে বৃন্দাবনে গোবিন্দর্জ, মদনমোহনজী ও গোপীনাথজীর জন্য নূতন মন্দির নির্মাণ করিয়া দেন। এই বংশী রায় বাহাইর বৈকুণ্ঠনাথ বসু কতকগুলি নাটক ও প্রহসন রচনা করিয়া খ্যাতি লাট করেন। সঙ্গীত শাস্ত্রেও বৈকুণ্ঠনাথের বিশেষ পারদশিত ছিল। ခိဒ္ဓိ ဂ္ယီဈေ..