পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/২২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২০৮ বাংলায় ভ্রমণ কথিত আছে যে গয়েশ কাজী নামক জনৈক ব্যক্তি র্তাহার রাজ্য মধ্যে গো-হত্য করায় তিনি র্তাহার প্রাণদণ্ড দেন । এই সংবাদ নবাবের কর্ণগোচর হইলে তিনি র্তাহাকে দমন করিবার জন্য সেনাপতি গয়েশ-উদ-দীনের পরিচালনায় বহু সৈন্য প্রেরণ করেন। রঘুপতি ঘোষ, চণ্ডী ও কেশব সর্দার নামক তিনজন সেনানায়ক মুকুটরায়ের পক্ষে যুদ্ধ করিয়া তুই দিন পর্য্যন্ত নবাব সৈন্তকে হটাইয়। রাখেন। নবাব সৈন্ত ভ্ৰমে র্তাহারা স্বপক্ষীয় কয়েকজন পাঠানকে নরবলি প্রদান করেন। ইহাতে মুকুটরায়ের পক্ষীয় পাঠানেরা বিদ্রোহী হইয়া উঠেন। প্রধানতঃ এই কারণে ও কপোত-বিভ্রাটের ফলে (বারাসাত-বসিরহাট লাইট রেলওয়ের দেগঙ্গা স্টেশন দ্রষ্টব্য) মুকুটরায় পরাজিত ও ও বন্দী হন বলিয়া কথিত । মুকুটরায়ের কন্যা স্বীয় মৰ্য্যাদা রক্ষার জন্য অন্তঃপুরের নিকটবৰ্ত্তী একটি পুকুরে ডুবিয়া আত্মহত্যা করেন। এই পুষ্করিণীটি পরে "কন্যাদহ” নামে পরিচিত হয়। নলডাঙ্গা-- ঝিনাইদহ হইতে ৯ মাইল দক্ষিণে এবং যশোহর হইতে ১০ মাইল উত্তরে অবস্থিত নলডাঙ্গ একটি বিখ্যাত স্থান ! এখানে একটি পুরাতন জমিদার বংশের বাস। ইহারা নলডাঙ্গার রাজা নামে পরিচিত। নলডাঙ্গ রাজবংশের প্রতিষ্ঠিত মঠবাড়ীতে আটটি পুরাতন মন্দির এবং নিকটবর্তী গঞ্জনগর নামক স্থানে একটি বৃহৎ অট্টালিকা আছে। এই স্থানে একটি পঞ্চমুণ্ডি আসন ও কালীতলাদহ নামক একটি পুরাতন পুষ্করিণী আছে। প্রবাদ এই পঞ্চমুণ্ডি আসনে বসিয়া যে কেহ সাধনার চেষ্টা করিতেন, তাহাকেই অপদেবতার নিকটবৰ্ত্তী কালীতলাদহে ডুবাইয়া মারিত । অবশেষে ভৈরব ভট্টাচাৰ্য্য নামক জনৈক শক্তিশালী সাধক এই আসনে বসিয়া সিদ্ধিলাভ করেন। রাত্রিকালে এখনও কালীতলাদহ হইতে নাকি শঙ্খ, ঘণ্টা ইত্যাদির শব্দ শুনিতে পাওয়া যায়। নড়াইল—যশোহর হইতে মোটরবাসে অথবা দৌলতপুর কিম্বা খুলনা হইয়া স্টীমারযোগে যশোহর জেলার অন্যতম মহকুমা নড়াইলে যাওয়া যায়। যশোহর হইতে নড়াইল ২০ মাইল উত্তর-পূর্ব কোণে চিত্রা নদীর তীরে অবস্থিত। নড়াইলে রায় উপাধিধারী প্রাচীন জমিদার বংশের বাস। এই বংশের রামরতন রায় বা রতন বাবুর প্রতাপের কথা বাংলার প্রায় সৰ্ব্বত্র সুপরিচিত। জমিদার বাবুদের বাসভবন, সর্বমঙ্গলা দেবীর ও গোবিন্দজীর মন্দির এবং নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজ নামক দ্বিতীয় শ্রেণীর কলেজ এখানকার দ্রষ্টব্য বস্তু। নড়াইলের সরু চিড়া ও খেজুর গুড়ের সুগন্ধযুক্ত পাটালি বিখ্যাত। নড়াইল শহরের অন্তঃপাতী মহিষখোলা গ্রাম সুবিখ্যাত বৈষ্ণব সাধক wরাধারমণ চরণ দাস বাবাজীর জন্মস্থান । গৃহস্থাশ্রমে র্তাহার নাম ছিল রাইচরণ ঘোষ । “ নিতাই-গৌর রাধে-স্যাম ” এই মন্ত্র প্রচার করিয়া তিনি বৈষ্ণব সমাজে এক নূতন সম্প্রদায়ের প্রবর্তন করেন। “চরিত মুধা” নামক গ্রন্থে তাহার জীবনী বিস্তৃতভাবে বর্ণিত আছে । নবদ্বীপের রাধারমণ বাগে তাহার সমাজ বা সমাধি বিদ্যমান । সিঙ্গিয়া—কলিকাতা হইতে ৮৪ মাইল দূর। সিঙ্গিয়া স্টেশন হইতে প্রায় তিন মাইল পূর্বে ভৈরব নদের তীরে অবস্থিত শেখহাটী বা শাখহাটা একটি পুরাতন স্থান। কেহ কেহ অনুমান করেন যে সেন বংশীয় রাজা লক্ষ্মণসেন নবদ্বীপ পরিত্যাগ করিার