পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলাৰ লাজপ্ৰানী কলিৰণত । অবস্থান ও আয়তন বাংলার রাজধানী কলিকাতা বাঙালীর শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বাণিজ্যের সর্বপ্রধান কেন্দ্র। ইহা গঙ্গ বা ভাগীরথী নদীর পূর্বতীরে ২৪ পরগণা জেলার পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত। শাসন কার্য্যের সুবিধার জন্য এই মহানগরীকে ১৪ পরগণা হইতে বিচ্ছিন্ন করিয়া একটি স্বতন্ত্র জেলারূপে গণ্য করা হয়। ভাগীরথী নদীর সাগর সঙ্গম হইতে ইহার দূরত্ব প্রায় এক শত মাইল । মিউনিসিপ্যালিটির এলাকাধীন কলিকাতা শহর বর্তমানে খাস কলিকাতা, কাশীপুর, চিৎপুর, মাণিকতলা, ইটালী, বালীগঞ্জ, আলিপুর, খিদিরপুর, ভবানীপুর ও কালীঘাট লইয়া গঠিত। ইহার পরিমাণফল প্রায় ৩০ বর্গ মাইল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে শহরতলী ধরিয়া “বৃহত্তর কলিকাতা” হুগলী জেলার ত্রিবেণী হইতে ২৪ পরগণা জেলার বজবজ পর্য্যন্ত ভাগীরথীর উভয় তীর লইয়া বিস্তৃত। এই অঞ্চলের জনবহুল শহরতলী, কল-কারখানা, বাধা ঘাট, বাগানবাটী, দেবালয়, জেটি ও ডক্‌ প্রভৃতি কলিকাতা মহানগরীরই অংশ বিশেষ। এই বিস্তীর্ণ ভূভাগ দৈর্ঘ্যে প্রায় ৪৫ মাইল ও বিস্তারে গঙ্গার উভয়কূলে এক মাইল হইতে দুই মাইলের মধ্যে। প্রাচীন কলিকাতা— কলিকাতা মহানগরীর প্রাচীন গৌরব বিশেষ কিছুই নাই। আড়াই শত বৎসর পূৰ্ব্বে এই স্থান একটি নগণ্য গণ্ডগ্রাম মাত্র ছিল। ইহার বহু স্থান তখন অস্বাস্থ্যকর জলাভূমি ও ঝোপ জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল। বাংলায় তথা ভারতে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে এই নগরীর প্রতিষ্ঠা ও অভু্যদয় ঘটিয়াছে। কলিকাতা নামের সর্ব প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ১৪৯৫ খৃষ্টাব্দে রচিত বিপ্রদাসের “মনসা মঙ্গল” কাব্যে। ষোড়শ শতাব্দীর শেষভাগে লিখিত "আইন-ই-আকবরী" গ্রন্থে রাজা টোডরমলের রাজস্ব তালিকায় মহাল কলিকাতার নাম পাওয়া যায়। মুকুন্দরামের চণ্ডীকাব্যে চিৎপুর, কলিকাতা ও কালীঘাটের উল্লেখ আছে। কলিকাতা নামের উৎপত্তি— কলিকাতা নামের উৎপত্তি সম্বন্ধে অনেক কিংবদন্তী প্রচলিত আছে। অনেকে বলেন, কালীক্ষেত্র বা কালীঘাট হইতে “ কলিকাতা” নাম হইয়াছে। কবিরামের গ্রন্থে "কিলকিলা” নামক গ্রামের উল্লেখ আছে। স্বৰ্গীয় রাজা রাধাকান্ত দেবের মতে উহ হইতেই কলিকাতা নাম হইয়াছে। কাহারও কাহারও মতে পূৰ্ব্বে এই স্থান কলিচুণ