পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/২৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२२४ বাংলায় ভ্ৰমণ প্রতাপাদিত্য চণ্ড ভৈরবের জন্য যে ত্রিকোণ মন্দির নির্মাণ করাইয়াছিলেন তাহার ধ্বংসাবশেষ এখনও বিদ্যমান। চণ্ড ভৈরব এখন যশোরেশ্বরীর মন্দিরের মধ্যে স্থানান্তরিত হইয়াছেন। কথিত আছে, চণ্ড ভৈরবের জন্য মহারাজ লক্ষ্মণ সেন একটি মন্দির নিৰ্ম্মাণ করাইয়াছিলেন। টেঙ্গা মসজিদের নিকটেই জঙ্গলাকীর্ণ একটি পরিত্যক্ত মন্দির দৃষ্ট হয়। কথিত আছে, মহারাজা মানসিংহ প্রতাপাদিত্যকে পরাজিত করিবার পর এই মন্দিরে শিব স্থাপন করিয়াছিলেন । চণ্ড ভৈরবের মন্দির, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সৌজন্তে টেঙ্গ মসজিদ হইতে উত্তর দিকে কিছু দূর অগ্রসর হইলে ঈশ্বরীপুরের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে ইছামতী নদীর ধারে জঙ্গলের মধ্যে একটি ধ্বংসাবশেষ দৃষ্ট হয়। এখানে ৪০টি পূৰ্ব্ব পশ্চিমে শায়িত কবর আছে। মুসলমানগণের কবর উত্তর দক্ষিণে শায়িত হয়, সেজন্য এগুলি খৃষ্ঠানদিগের কবর বলিয়া স্থিরীকৃত হইয়াছে। এই স্থানটি বাংলাদেশের সৰ্ব্বপ্রথম গীর্জার ধ্বংসাবশেষ। প্রতাপাদিত্যের অনুমতি পাইয়া জেসুইট সম্প্রদায় ১৫৯৯ খৃষ্টাব্দে এই গীর্জা প্রতিষ্ঠা করিয়া যীশুর গীর্জা নাম করণ করেন। এই বংসরই ব্যাণ্ডেলের ও চট্টগ্রামের গীর্জ নিৰ্ম্মিত হয়। স্পেনদেশীয় জেসুইট ভ্রমণকারী ডুজারিকের (Pierre Du Jarric) বিবরণ হইতে জানা যায় যে ঈশ্বরীপুরের গীর্জাই বাংলার প্রথম, চট্টগ্রামেরটি দ্বিতীয় এবং ব্যাণ্ডেলেরটি তৃতীয়। ১৬০০ খৃষ্টাব্দের ১লা জানুয়ারী তারিখে গীর্জা প্রতিষ্ঠার উৎসবে প্রতাপাদিত্য যোগ দিয়াছিলেন। এ গীর্জা বেশী দিন স্থায়ী হয় নাই; সন্দ্বীপ লইয়া আরাকানী ও পর্তুগীজদিগের বিরোধের জন্য যে গোলমাল উপস্থিত হয় তাহার ফলে ঈশ্বরীপুরের পাদরীগণ পলাইতে বাধ্য হন এবং গীর্জাট খৃষ্টানদিগের শত্ৰুগণ কর্তৃক অগ্নিদগ্ধ হয়। o o,