পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/২৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

는 8는 • বাংলায় ভ্রমণ ইনি জলযুদ্ধে পারদর্শী বলিয়৷ খ্যাত ছিলেন। রাজা কীৰ্ত্তিনারায়ণের ৯ে প্রেমনারায়ণের মৃত্যুতে বস্তু বংশের পুরুষধারা লুপ্ত হয় এবং প্রেমনারায়ণের জাত গৌরীচরণ মিত্র সম্পত্তির অধিকারী হন। এই মিত্র বংশীয়গণ আজও মাধবপাশায় অবস্থান করিতেছেন। ১৭৯৯ খৃষ্টাব্দে বাকী খাজানার দায়ে বার্ল চন্দ্রদ্বীপ পরগণ বিক্রীত হইয়া এই পুরাতন বংশের হস্তচু্যত হয়। কচুয়া—বরিশাল পটুয়াখালি স্টীমার পথে পটুয়াখালির আগের স্টেশন বাগ বন্দর হইতে পূর্বে ১০ মাইল দূরে বেফল থানার নিকটেই তেতুলিয়া নদীর পশ্চিম কূলে কচুয়া গ্রাম। বাগা হইতে বোফল পর্য্যন্ত ভাল রাস্তা আছে। বাগা বালাম চাউলের কারবারের জন্য প্রসিদ্ধ। মেঘনার শাখা তেতুলিয়া নদী বাখরগঞ্জ জেলার পূর্বাংশ সুবৃহৎ দক্ষিণ সাহাবাজপুর দ্বীপটিকে জেলার অপরাংশ হইতে বিচ্ছিন্ন করিয়াছে। সাহাবাজপুর দ্বীপের পূর্বদিকে বিশাল মেঘনা প্রবাহিত, ইহার অপর পারে নোয়াখালি জেলা । কচুয়া মহারাজ দনুজমর্দনদেবের বংশীয় চন্দ্রদ্বীপ রাজগণের আদি বাসস্থান। এই স্থান হইতেই রাজা কন্দপনারায়ণ রাজধানী উঠাইয়া মাধবপাশায় লইয়া যান। পাণ্ডুয়ায় এবং পূর্ব ও দক্ষিণ বঙ্গের নানা স্থানে দনুজমর্দন দেবের অনেকগুলি রৌপ্য মুদ্র আবিষ্কৃত হইয়াছে। এই সকল মুদ্রা আবিষ্কারের ফলে তাহার রাজত্বকাল নির্ণীত হইয়াছে। র্তাহার সমস্ত মুদ্রাই ১৩৩৯ ও ১৩৪০ শকাব্দে (১৪১৭, ১৪১৮ খৃষ্টাব্দে) মুদ্রিত। মুদ্রাগুলি হইতে জানা যায় যে ১৪১৭ ও ১৪১৮ খৃষ্টাব্দে পাণ্ডুয়া বা ফিরোজাবাদ দনুজমর্দন দেবের অধিকারে ছিল। মহারাজ গণেশের পুত্র গৌড়রাজ জালাল উদ্দীন মহম্মদ শাহের মুদ্রা ফিরোজাবাদে ৮১৮, ৮১৯, ৮২২, ৮২৩, ৮২৮ ও ৮৩৪ হিজরায় মুদ্রিত হইয়াছিল ; কিন্তু ৮২০ এবং ৮২১ হিজরায় মুদ্রিত র্তাহার কোনও মুদ্রা পাওয়া যায় নাই। ঐতিহাসিকেরা এইরূপ অনুমান করেন যে ৮২০ ও ৮২১ হিজরায় অর্থাৎ ১৪১৭ ও ১৪১৮ খৃষ্টাব্দে দনুজমর্দনদেব পাণ্ডুয়ায় স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং জালাল উদ্দীন মহম্মদশাহ পরাজিত হইয়া তথা হইতে বিতাড়িত হন। স্বাধীনতার প্রতীক স্বরূপ দনুজমর্দনদেব নিজ নামে মুদ্রা প্রচলন করেন । র্তাহার মুদ্রার একদিকে বাংলা অক্ষরে নিজ নাম এবং অপরদিকে “চণ্ডীচরণ পরায়ণস্য” লিখিত আছে। দনুজমর্দন ব্যতীত খৃষ্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীর পরবর্তীকালে মুসলমান অধিকৃত আৰ্য্যাবর্তের কোনও স্থানে কোনও হিন্দু রাজা ভারতীয় লিপি ও ভাষায় স্বীয় নামে মুদ্রাঙ্কণ করিয়াছেন বলিয়৷ জানা যায় নাই। ইহা তাহার প্রতাপ ও সাহসিকতার পরিচায়ক। উত্তর বঙ্গে পাণ্ডুয়া হইতে দক্ষিণ ও পূর্ব বঙ্গ পৰ্য্যন্ত দনুজমর্দনদেবের অধিকারে ছিল। অনুমান হয় ১৪১৮ খৃষ্টাব্দে দনুজমর্দনদেবের মৃত্যু হইলে তাহার পুত্ৰ মহেন্দ্রদেব সিংহাসনে আরোহণ করেন। ইহার তুই এক বৎসর পরেই তিনি পাণ্ডুয়া বা ফিরোজাবাদ হইতে বিতাড়িত হন। ফিরোজাবাদে জালাল উদ্দীন মহম্মদ শাহের নামে ৮২২ হইতে ৮২৪ হিজরায় অর্থাৎ ১৪১৯ হইতে ১৪২১ খৃষ্টাব্দে অঙ্কিত রজত মুদ্রা পাওয়া গিয়াছে। দক্ষিণ ও পূর্ব বঙ্গে মহেন্দ্রদেবের ১৪১৮ হইতে ১৪২৩ খৃষ্টাব্দে মুদ্রিত অনেকগুলি রজত মুদ্রা পাওয়া গিয়াছে। পাণ্ডুয়া হস্তচু্যত হইবার পর দনুজমর্দনদেবের বংশের রাজ্য সীমা বাকল চন্দ্রদ্বীপেই পৰ্য্যবসিত হয় । বহুকাল তাহারা এ অঞ্চলে রাজত্ব করেন । 16a ¢