পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/২৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨G 8 ংলায় ভ্রমণ আমঘাট স্টেশনের নিকটে প্রাচীন সুবর্ণ বিহারের ধ্বংসাবশেষ অবস্থিত । অনেকে অনুমান করেন যে পূৰ্ব্বে এই স্থানে একটি বৌদ্ধ বিহার ছিল এবং বৌদ্ধ ধৰ্ম্মাবলম্বী পাল রাজবংশ কর্তৃক ইহা প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। সুবর্ণ বিহার নামটিই এই মতের সৰ্ব্বাপেক্ষা প্রধান পোষক। এই ধ্বংসাবশেষ প্রায় দুই বিঘা জমি লইয়া বিস্তৃত এবং প্রায় ১০ হাত উচ্চ। ইহা ইষ্টক ও প্রস্তর খণ্ডের দ্বারা সমাচ্ছন্ন। এই স্তৃপ হইতে বহু ইষ্টকাদি লইয়া স্থানীয় অধিবাসিগণ গুহ নিৰ্ম্মাণ প্রভৃতি কাৰ্য্যে লাগাইয়াছে। প্রবাদ যে, প্রাচীন কালে এখানে সুবর্ণ নামে একজন কুম্ভকার জাতীয় রাজা বাস করিতেন। শত্রু কর্তৃক আক্রান্ত হইয়া তিনি সপরিবারে মৃত্তিকা নিম্নস্থ নিরাপদ গৃহে প্রবেশ করেন এবং পরে দৈব দুর্ঘটনা বশতঃ নির্গমনের পথ না পাইয়া সেখানেই চিরদিনের জন্য সপরিবারে সমাহিত হন। বর্তমানে সুবর্ণ বিহারের ধ্বংস স্তৃপের উপর গৌড়ীয় মঠ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক একটি মন্দির নিৰ্ম্মিত হইয়া উহার মধ্যে রাধা-কৃষ্ণ বিগ্রহ নিত্য সেবা প্রাপ্ত হইতেছেন। নবদ্বীপঘাট-কৃষ্ণনগর সিটি হইতে ৮ মাইল দূর। গঙ্গা ও জলঙ্গী নদীর সঙ্গম স্থলের উপর এই স্থান অবস্থিত। এখানে নামিয়া গঙ্গার পশ্চিম পারস্থ শহর নবদ্বীপ ও পূৰ্ব্বপারস্থ (জলঙ্গী নদীর উত্তর পারে একটি দ্বীপের উপর অবস্থিত) মায়াপুরে যাইতে হয়। (পূৰ্ব্ব ভারত রেলপথের ব্যাণ্ডেল-বারহাড়োয় শাখার “নবদ্বীপধাম” স্টেশন দ্রষ্টব্য)। এই স্থানটির প্রকৃত নাম স্বরূপগঞ্জ । ইহা প্রাচীন নবদ্বীপ মণ্ডলের গোক্রম দ্বীপের অন্তর্গত। ইহার নিকটবৰ্ত্তী “মুরভিকুঞ্জ” ও “স্বানন্দ মুখদকুঞ্জ” বৈষ্ণবগণের দ্রষ্টব্য স্থান। স্বানন্দ স্থখদকুঞ্জে গৌড়ীয় মঠের প্রতিষ্ঠাতা ঠাকুর ভক্তিবিনোদের ভজনস্থলী ও সমাধি মন্দির বিরাজমান। ভক্তিবিনোদ ঠাকুরের শিষ্য শ্ৰীল গৌরকিশোর দাস বাবাজীর ভজন কুটীরও এই কুঞ্জ মধ্যে অবস্থিত। নবদ্বীপঘাট হইতে নৌকাযোগে জলঙ্গী বা খড়িয়া নদী পার হইয়া পদব্রজে বা গরুর গাড়ীতে করিয়া মায়াপুরে যাইতে হয়। ইহাকে স্থানীয় কেহ কেহ মিঞাপুর বলিয়৷ থাকেন। স্টেশন হইতে মায়াপুরের দূরত্ব প্রায় দুই মাইল। নবদ্বীপঘাটের ঠিক পূর্ববর্তী স্টেশন মহেশগঞ্জে নামিয়াও পদব্রজে মায়াপুরে যাওয়া যায়। এই পথের দূরত্ব এক মাইলের কিছু বেশী । বহু পণ্ডিত, ভক্ত ও পুরাতত্ত্ববিদের মতে মায়াপুরই প্রাচীন নবদ্বীপ এবং এই স্থানই শ্রীচৈতন্যদেবের প্রকৃত জন্মস্থান। প্রাচীন ইতিহাস ও বৈষ্ণব গ্রন্থ প্রভৃতিতে উল্লিখিত আছে যে নবদ্বীপ গঙ্গার পূর্বতটে অবস্থিত। গঙ্গার পশ্চিম তীরে অবস্থিত শহর নবদ্বীপকে তাহারা প্রাচীন নবদ্বীপ মণ্ডলের অন্তর্গত কোলদ্বীপ বা কুলিয়া-পাহাড়পুর হইতে অভিন্ন মনে করেন । র্তাহাদের মতে প্রাচীন নবদ্বীপ নগর গঙ্গার ভাঙ্গনে নদীসাৎ হইবার উপক্রম হইলে এই স্থানের অধিবাসিগণ পশ্চিমপারস্থিত কুলিয়ার চরে গিয়া বসবাস করেন এবং সেই স্থানেই কালক্রমে বৰ্ত্তমান নবদ্বীপ শহর গড়িয়া উঠে। তাহারা আরও বলেন, যে সেনবংশীয় নৃপতি বল্লাল নবদ্বীপ বা নদীয়ায় গঙ্গাবাসের জন্য যে একটি