পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/২৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ ২৫৯ ভগ্নাবশেষ ও ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত কতকগুলি কারুকার্য্য খচিত প্রস্তর স্তম্ভের ভগ্নাবশেষ দেখিতে পাওয়া যায় । বল্লাল টিবিটি প্রায় চারিশত ফুট লম্বা ও ২৫/৩০ ফুট উচ্চ। বৰ্ত্তমানে ইহা সরকারী রক্ষিত কীৰ্ত্তি বিভাগের অন্তর্গত। দূর হইতে টিবিটিকে একটি পাহাড়ের ন্যায় দখায়। এই ঢিবি খনন করিলে সেনরাজগণের সময়ের অনেক রহস্য প্রকাশিত হইতে পারে বলিয়া কেহ কেহ অনুমান করেন। এই ঢিবি উত্তর-পূৰ্ব্বদিকে ক্রমশঃ ঢালু হইয়া গিয়াছে। ইহার পশ্চিমদিকের বহু অংশ গঙ্গা-গর্ভসাৎ হইয়াছে। এই দিকে গঙ্গার একটি জলপূর্ণ খাত এখনও বিদ্যমান আছে । এই ঢিবি হইতে বহু প্রস্তর ও ইষ্টক আনীত হইয়া কৃষ্ণনগর রাজবাটীতে ব্যবহৃত হইয়াছিল। এখনও এই ঢিবির মধ্যে নানা মাপের ইষ্টক ও প্রস্তর দৃষ্ট হয়। কিছুকাল পূৰ্ব্বে জনৈক মুসলমান ভদ্রলোক এই স্থান খনন করিয়া কতকগুলি কাঠের বারকোষ, একটি বাক্সে রক্ষিত জীর্ণ শাল ও রেশমী কাপড় এবং কতকগুলি রৌপ্যমুদ্রা পাইয়াছিলেন। প্রত্নতত্ত্ববিদ ও ঐতিহাসিকগণের পক্ষে এই ঢিবিটি একটি বিশেষ দ্রষ্টব্য বস্তু। পূর্ব বর্ণিত দ্রষ্টব্যগুলি ছাড়া মায়াপুরে গোরকুণ্ড, নিতাইকুণ্ড, শ্রীধর অঙ্গন, মহাপ্রভুরঘাট, মধাইয়ের ঘাট, বারকোণ ঘাট, নগরিয়া ঘাট, জয়দেবের পাট, শিবের ডোব প্রভৃতি আরও বহু দ্রষ্টব্য স্থান আছে। বৰ্ত্তমানে মায়াপুর হইতে গঙ্গা প্রায় দুই মাইল দূরে সরিয়া গিয়াছে। তবে এককালে যে গঙ্গ এই স্থানের পাশ্ব দিয়া প্রবাহিত হইত, তাহা গঙ্গার পরিত্যক্ত খাতসমূহ দেখিলে স্পষ্টই বুঝিতে পারা যায়। মায়াপুরের পশ্চিম ও দক্ষিণদিকে বিস্তৃত উন্মুক্ত প্রান্তর ও যথাক্রমে গঙ্গা ও জলঙ্গী নদী। স্থানটি বিশেষ স্বাস্থ্যকর, -পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও অতাধিক লোক কোলাহল বিবর্জিত। এখানে গৌড়ীয় মঠের উদ্যোগে তারঘর ও ডাকঘর প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। গৌড়ীয় মঠ কর্তৃক পরিচালিত ‘দৈনিক নদীয় প্রকাশ” নামক একখানি সংবাদপত্র এই স্থান হইতে বাহির হয়। এখানে দাতব্য চিকিৎসালয় ও কয়েকটি ধৰ্ম্মশালা আছে। চৈতন্য মঠে সমাগত অতিথিবৰ্গকে অন্ন প্রসাদ দানের ব্যবস্থাও আছে : শ্ৰীগৌরাঙ্গের জন্মতিথি ফাল্গুনী পূর্ণিমা ( দোল পূর্ণিমা ) উপলক্ষে গৌড়ীয় মঠের তত্ত্বাবধানে শ্রীধাম নবদ্বীপ বা প্রাচীন নবদ্বীপ মণ্ডলের নয়টি দ্বীপ পরিক্রমার ব্যবস্থা করা হয় এবং ঐ পরিক্রমায় বহু ভক্ত যোগদান করেন। সমস্ত বৈষ্ণবপৰ্ব্বই এখানে মহাসমারোহের সহিত অনুষ্ঠিত হইয়া থাকে । যুড়াগাছা-কলিকাতা হইতে ৭৩ মাইল দূর। ইহা একটি প্রাচীন ও বদ্ধিষ্ণু গ্রাম। সুপ্রসিদ্ধ রস-সাহিত্যিক ৬ললিতমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় এই স্থানের অধিবাসী ছিলেন । এই স্থানে সৰ্ব্বমঙ্গলা দেবীর একটি মন্দির আছে । দেবগ্রাম—কলিকাতা হইতে ৮৭ মাইল দূর। ইহা একটি প্রাচীন পল্লী। এই স্থানে কয়েকটি ধ্বংসাবশেষের চিহ্ন ও উচ্চ ভূখণ্ড দৃষ্ট হয়। কেহ কেহ অনুমান করেন। যে সেন রাজগণের সময়ে এখানে একটি জয়-স্কন্ধাবার বা সেনানিবাস ছিল। পূৰ্ব্বে