পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/৩০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ ९>{ ত মান করেন। গৌড়সারঙ্গ গৌড়ী প্রভৃতি রাগ রাগিণীর নাম হইতে পুরাকালে এই স্থানের সংস্কৃতিগত উৎকর্ষের প্রমাণ পাওয়া যায়। দিল্লী ও উত্তর ভারতের গৌড় ব্রাহ্মণ সম্প্রদায় বলিয়া থাকেন যে র্তাহারা বংশ পরম্পরায় শুনিয়া আসিতেছেন যে র্তাহাদের তাদি পুরুষ গৌড় হইতে মহারাজ জন্মেজয়ের সর্পযজ্ঞ উপলক্ষে আমন্ত্রিত হইয়া আসিয়া উত্তর ভারতে বাস স্থাপন করেন । খৃষ্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীতে গুপ্ত বংশীয় নৃপতিগণের অধঃপতন ও ক্ষমতা লোপের সহিত বাংলায় স্থানীয় শাসকগণ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যের স্বাধীন রাজা হইয়া পড়েন। যুক্ত প্রদেশের বড়বাকি জেলার হড়াদ গ্রামে আবিষ্কৃত শিলালিপি হইতে জানা যায় যে খৃষ্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীর মধ্য ভাগে মৌখরী বংশীয় রাজা ঈশান বৰ্ম্ম সমুদ্রতীর পর্য্যন্ত বিস্তৃত গৌড় রাজ্য জয় করিয়াছিলেন ; ইহা হইতে অনুমিত হয় যে গৌড় তখন স্বাধীন ছিল। শিলা লিপিতে গোড়গণকে “সমুদ্রাস্ত্রয়ান” বলা হইয়াছে। “ইহা হইতে বোধ হয় সূচিত হইতেছে যে গৌড়গণ নৌবলে বলীয়ান ছিলেন।” ফরিদপুর জেলায় আবিষ্কৃত চারি খানি তাম্র লিপি হইতে জানা যায় এই যুগে দক্ষিণবঙ্গে ধৰ্ম্মাদিত্য, গোপচন্দ্র ও সমাচারদেব নামে রাজা ছিলেন । ধৰ্ম্মাদিত্যের তাম্রশাসনে দেখা যায় তাহার সময়ে গৌড়ের অংশবিশেষের শাসক ছিলেন মহারাজ স্থাণু দত্ত। ইহার পর রাজা শশাঙ্ক খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে গোঁড়াধিপতি হইয়াছিলেন; কিন্তু তাহার রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণে। (পূর্ব ভারত রেলপথের ব্যাগুেল-বারহাড়োয় শাখার চিরোতী স্টেশন দ্রষ্টব্য)। কহলন মিশ্র প্রণীত “রাজ তরঙ্গিনীতে” বর্ণিত আছে খৃষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীর প্রথম দিকে কাশ্মীরের অধিপতি ললিতাদিত্য মুক্তপীড় কান্তকুঞ্জের পরাক্রান্ত রাজা যশোবন্তকে পরাস্ত করিয়া মগধ পৰ্য্যন্ত অধিকার করিলে গৌড়পতি বহু হস্তী উপহার দিয়া তাহার সহিত মিত্রতা স্থাপন করেন; তাহার নিমন্ত্রণে গোড়পতি কাশ্মীরে যাইলে, পরিহাসপুর বা বর্তমান পরসপোর নগরের পরিহাসকেশব মন্দিরে বিগ্রহের সম্মুখে ললিতাদিত্য প্রতিজ্ঞ করেন যে তিনি অতিথির কোনও ক্ষতি করিবেন না, কিন্তু প্রতিজ্ঞ৷ তিনি রক্ষা করিতে পারেন নাই এবং ত্রিগামী নামক স্থানে গৌড়পতিকে হত্যা করেন । এই বাৰ্ত্তা শুনিয়া গৌড় হইতে একদল যোদ্ধা প্রতিশোধ লইবার জন্য কাশ্মীর গমন করিয়া পরিহাসকেশবের মন্দির অবরোধ করেন এবং ভ্রমবশতঃ পরিহাসকেশবের পরিবর্তে রাম স্বামীর রজতবিগ্ৰহ ধ্বংস করিয়া যুদ্ধে প্রাণ দান করেন। অনুমিত হয় ইহার বৌদ্ধ ছিলেন। খৃষ্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীতে কহলনের সময়েও কাশ্মীরে গৌড়বাসিগণের বীরত্বের খ্যাতি ছিল এবং রাম স্বামীর মন্দির শূন্ত পড়িয়াছিল। কহলন গৌড়বাসিগণকে গৌড়রাক্ষস বলিয়াছেন। রাজতরঙ্গিনীতে আরও লিখিত আছে, যে ললিতাদিত্যের পৌত্র কাশ্মীর রাজ বিনয়াদিত্য জয়াপাড় দিগ্বিজয়ে বাহির হইলে সেই সুযোগে তাহার শু্যালক জৰ্জ্জ কাশ্মীর সিংহাসন অধিকার করেন ; জয়াপীড় তখন নিজ সৈন্য দিগকে বিদায় দিয়া ছদ্মবেশে গৌড় রাজ্যের অন্তর্গত জয়ন্ত নামক সামন্তরাজের অধীন পৌণ্ডবৰ্দ্ধন নগরে উপস্থিত হন। র্তাহার *খ প্রকাশ হইলে রাজা জয়ন্ত র্তাহার একমাত্র কন্যা কল্যাণীদেবীকে জয়াপীড়ের সহিত বিবাঙ্গ দেন। জয়াপীড় গৌড়ের পাঁচজন নরপতিকে হারাইয়া শ্বশুরকে গৌড়ের সর্বময় *ধর করিতে সাহায্য করিয়াছিলেন। কহলন মিশ্র বর্ণিত কাশ্মীর রাজ ললিতাদিত্য টিপাড় ও বিনয়াদিত্য জয়াপীড়ের গৌড়ের সহিত সংশ্লিষ্ট ঘটনাবলী সত্য কিনা সে