পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/৩১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\3) o o বাংলায় ভ্রমণ -ممط---- খৃষ্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দীর প্রারম্ভেই মহম্মদ-ই-বখতিয়ায় খিলজী সেন রাজগণের নিকট হইতে গৌড় ও রাঢ় জয় করেন। মিনহাজ-উস্-সিরাজ বণিত ১১৯৪ খৃষ্টাব্দে মাত্র অষ্টাদশ অশ্বারোহীর সাহায্যে বখতিয়ার কর্তৃক নোদিয়া নগর অধিকার ও রাজা লক্ষ্মণসেনের কাপুরুষের ন্যায় পলায়ন কাহিনী আধুনিক ঐতিহাসিকগণ গ্রহণ করেন না, কারণ তৎকালে লক্ষ্মণসেন জীবিত ছিলেন না এবং অৰ্দ্ধ শতাব্দী পরে গৌড়রাজ মুগীসউদ্দীন যুজবক নোদিয়া বিজয় করিয়া সেই ঘটনা স্মরণার্থ নূতন মুদ্র বাহির করেন। কোন সময়ে কিরূপে মুসলমানগণ গৌড় জয় করিয়াছিলেন তাহা অজ্ঞাত। বখতিয়ার কর্তৃক লক্ষ্মণাবতী বা গৌড় অধিকারের পর প্রায় ১২৫ বৎসরকাল সেনবংশীয় রাজগণ পূর্ব ও দক্ষিণ বঙ্গের অধীশ্বর ছিলেন। পাঞ্জাবের উত্তর ও পূৰ্ব্বস্থিত হিমালয়ের অন্তর্গত কাশ্মীর, পুঞ্চ, সুকেত, মণ্ডী ও জুঙ্গার পাৰ্ব্বত্য রাজ্যের বর্তমান অধিপতিগণ বাংলার সেন রাজবংশ হইতে উদ্ভূত বলিয়া পরিচয় দিয়া থাকেন। মণ্ডী ও সুকেত রাজবংশের কুল পঞ্জিক হইতে জানা যায় যে লক্ষ্মণসেনের বংশধর মুরসেন ১২৫৯ বিক্রমাদে মুসলমানগণ কর্তৃক গৌড় হইতে বিতাড়িত হইয়া প্রয়াগে আসিয়া বাস করেন। তাহার মৃত্যুর পর তাহার পুত্র রূপসেন পাঞ্জাবে গমন করিয়া রূপর নামক স্থানে একটি রাজ্য স্থাপন করেন এবং ক্রমে ক্রমে মণ্ডী, সুকেত প্রভৃতি রাজ্য এই বংশের অধিকারে আসে । মহম্মদ-ই-বখতিয়ার খিলজী তিব্বত অভিযান হইতে ফিরিবার পথে দেবকোটে পরলোক গমন করিলে তাহার সহকারীদের মধ্যে প্রথম আলিমর্দন ও পরে গিয়াস উদ্দীন দিল্লীর অধীনে গৌড়ের সিংহাসনে আরোহণ করেন। তিনি ১১১১ হইতে ১২২৭ খৃষ্টাব্দ পর্য্যন্ত রাজত্ব করেন এবং বীরভূমের রাজনগর হইতে গৌড়ের মধ্য দিয়া দিনাজপুরের দেবকোট পৰ্য্যন্ত একটি রাজবত্ব নিৰ্ম্মাণ করেন। ইনি ঘাতক কর্তৃক নিহত হইলে পর পর কয়েকজন সুলতান দিল্লীর সম্রাট কর্তৃক মনোনীত হন। সম্রাট শম্স্-উদ্দীন আলতমাশের এক পুত্র নাসির-উদ্দীন গৌড়ের শাসনকৰ্ত্তা ছিলেন। ১২৩৭ খৃষ্টাব্দের সুলতানা রিজিয়ার মুদ্রায় প্রথম লখনেীতী টাকশালের নাম দৃষ্ট হয়। ১২৭৮ খৃষ্টাব্দে দিল্লীর সম্রাট গিয়াস্-উদ্দীন বলবনের সময়ে তুগ্রল খা মুগীস-উদ্দীন উপাধি লইয়া স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। সম্রাট তুগ্রলকে দমন করিবার জন্য যুদ্ধ যাত্রা করেন। তুগ্রল পরাজিত ও নিহত হন এবং সম্রাট বিদ্রোহীদিগকে দলে দলে ফাসী দিয়া এরূপ শিক্ষা দিয়াছিলেন যে কিছুকাল আর বিদ্রোহ দেখা দেয় নাই। সম্রাট পুত্র নাসির-উদ্দীন বগুড়া খা গৌড়ের শাসনকৰ্ত্তা নিযুক্ত হন। পরে আবার গৌড়ীয় সুলতানগণ সুবিধা পাইলেই দিল্লীর অধীনতা অস্বীকার করিতেন। গৌড়রাজ ফকর-উদ্দীন মবারক শাহ, ইখতিয়ার-উদ্দীন গাজী শাহ, আলাউদ্দীন আলি শাহ ও শম্স্-উদ্দীন ইলিয়াস শাহ নিজ নিজ নামে মুদ্রাঙ্কন করাইয়া দিল্লীর সম্রাট মহম্মদ-বিন-তোগলক শাহের রাজত্বের শেষ দিকে গৌড়ের স্বাধীনতার অকাট্য প্রমাণ দিয়াছেন। এ সময়ে গৌড়বঙ্গ যখন স্বাধীনতা অবলম্বন করিয়াছিল, মগধ বা বিহার দিল্লীর সম্রাটের অধীনতা মানিয়া চলিত। ১৩৪৭ খৃষ্টাব্দে শম্স্-উদ্দীন ইলিয়াস শাহ, স্বাধীনতা ঘোষণা করিয়া পুরাতন গৌড়ের ২০ মাইল উত্তরে পাণ্ডুয়া নগরীতে রাজধানী