পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/৩১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ \రి 6 (t -- ~ সমৃদ্ধি ছিল। ১৪৭৮ খৃষ্টাব্দে তাহার মৃত্যুর পর তাহার পুত্র শমস্-উদ্দীন ইউসফ শাহ সিংহাসন লাভ করেন। তাহার সময়ে শ্রীহট্ট বিজিত হয়। র্তাহার নামের শিলালিপি শ্রীহট্টে আবিষ্কৃত সৰ্ব্বাপেক্ষ পুরাতন আরবী ভাষায় উৎকীর্ণ শিলালিপি। তাহার সময়ে রাঢ়ে পাণ্ডুয়ার হিন্দু রাজ্য বিজিত হইয়াছিল। পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষ ভাগে গৌড়ে সুলতানদিগের হাব শী ক্রীতদাসগণ অত্যন্ত ক্ষমতাশালী হইয়া উঠেন এবং রাজ অনুগ্রহে প্রধান প্রধান পদে অধিষ্ঠিত হন। এই হাব শী খ্ৰীতি হইতে ইলিয়াস শাহের বংশের পতন হয় । এই বংশের শেষ রাজা জলালউদ্দীন ফতে শাহ কে নিহত করিয়া হাব শী ক্রীতদাস বারবগ সিংহাসন অধিকার করিলে জলালউদ্দীনের অনুরক্ত হাব শী কৰ্ম্মচারী মালিক আদিল বারবগকে হত্যা করিয়া নিহত রাজার শিশুপুত্রকে সিংহাসনে স্থাপন করিতে চেষ্টিত হন । কিন্তু জলালউদ্দীন ফতে শাহের পত্নী বলেন র্তাহার পুত্র সাবালক না হওয়া পৰ্য্যন্ত কোন যোগ্য ব্যক্তি রাজ্য শাসন করিবেন। তখন উজীর খাজাহান কর্তৃক আহুত মন্ত্রণ সভায় রাজ্যের প্রধানগণ মিলিত হইয়া মালিক আদিলকে অনুরোধ করিলে তিনি সৈফউদ্দীন ফিরোজ শাহ নাম লষ্টয়া রাজ্যভার গ্রহণ করেন। সুলতান সৈফউদ্দীন ফিরোজ শাহ, ন্যায়নিষ্ঠ ও দানে মুক্তহস্ত ছিলেন। গৌড়ের ফিরোজ মিনার ইনি নিৰ্ম্মাণ করাইয়াছিলেন। ১৪৮৬ খৃষ্টাব্দে গৌড় সিংহাসনে উঠিয়া ১৪৯০ খৃষ্টাব্দে তিনি পরলোক গমন করেন। ইহার পর কিছু কাল ধরিয়া গৌড় সিংহাসনের অবস্থা অনিশ্চিত ও শোচনীয় হইয়া উঠিয়াছিল। রিয়াজ-উসসলাতীন এ সময়ের কথা লিখিয়াছেন যে, যে রাজাকে যে হত্যা করিত সেই রাজা বলিয়া সম্মানিত হইত। পর্তুগীজ ঐতিহাসিক ফরিয়া-দ-সেীজ বলিয়াছেন গৌড়ে পুত্র পিতৃসিংহাসন পায় না, প্রভু-হত্যাকারী ক্রীতদাসই সিংহাসনের অধিকারী হয়। তারিখ-ইফেরেস্ত বিদ্রুপ করিয়াছেন যে প্রভুকে হত্যা না করিলে কেহ গৌড় সিংহাসনের অধিকারী হয় না । ইহার পর ১৪৯৪ খৃষ্টাব্দে হাব শী রাজাদের অত্যাচারে প্রজাবৃন্দ বিদ্রোহী হইলে সুলতান শস্ত্ৰউদ্দীন মজাফর শাহ নিহত হন এবং রাজ্যের প্রধানগণ কর্তৃক আলাউদ্দীন হুসেন শাহ রাজা নির্বাচিত হইয়াছিলেন । ইনি আরব দেশ হইতে আগত ও সৈয়দবংশীয় ছিলেন। হুসেন শাহের রাজ্যপ্রাপ্তির সহিত পালরাজ বংশের প্রতিষ্ঠাতা প্রথম গোপালদেবের নির্বাচনের বেশ মিল দেখিতে পাওয়া যায়। কথিত আছে, হুসেন শাহ সিংহাসন আরোহণ করিলে তাহার সৈন্যগণ গৌড় লুণ্ঠন করে ; এই অপরাধে তিনি বার হাজার সৈত্যের প্রাণদণ্ড দিয়াছিলেন। হুসেন শাহ রাজা হইয়াই হাব শী ক্রীতদাসগণকে দূর করেন এবং পুরাতন বনিয়াদী আফগান ও হিন্দুগণকে উচ্চ রাজপদে নিযুক্ত করেন। বস্থ বংশীয় পুরন্দর র্থ তাহার উজীর ছিলেন, স্বপ্রসিদ্ধ বৈষ্ণব-প্রধান রূপ ও সনাতন প্রথম জীবনে হুসেন শাহের অধীনে উচ্চ রাজকাৰ্য্যে নিযুক্ত ছিলেন। সনাতন তাহার “দবারখাস” (প্রাইভেট সেক্রেটারী) ও রূপ “ সাকর মল্লিক” বা রাজস্ব বিভাগের প্রধান কৰ্ম্মচারী ছিলেন। ইহাদের ভ্রাতা অনুপ টাকশালের অধ্যক্ষ ছিলেন। অমুপের গত্র জীবগোস্বামী পরবর্তী কালে বৈষ্ণব জগতে বিশেষ প্রসিদ্ধি লাভ করেন। মালাউদ্দীন হুসেন শাহ ওড়িষ্যা, আসাম ও বিহার অধিকার করেন। দিল্লীর সম্রাট 20