পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/৩২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Φ ο Ρ" ংলায় ভ্রমণ একজন ভিস্তি র্তাহার প্রাণ রক্ষা করে। কিন্তু তাহার পত্নী ৪ সহস্র মুঘল কুলবধুর সহিত বন্দী হইয়াছিলেন বলিয়া কথিত। শেরশাহ মগধ ও গৌড় রাজ্য পুনরায় অধিকার করিয়া ফরদউদ্দীন মজঃফর শেরশাহ নাম গ্রহণ করিয়া গৌড় সিংহাসনে আরোহণ করেন। পরে হুমায়ুনের সহিত র্তাহার পুনরায় যুদ্ধ হয় এবং হুমায়ুন পরাজিত হইয়া পলায়ন করিতে বাধ্য হন এবং শেরশাহ তাহার সাম্রাজ্য লাভ করেন । শেরশাহের মৃত্যুর পর গৌড়ে তাহার শাসনকৰ্ত্তা মহম্মদ খাঁ সূর ১৫৫২ খৃষ্টাব্দে স্বাধীনতা ঘোযণা করেন। ইনি ১৫৫৫ খৃষ্টাব্দে ছাপরামে এর যুদ্ধে হিমু কর্তৃক পরাজিত ও নিহত হইলে তাহার পুত্র গিয়াসউদ্দীন বাহাদুর শাহ গৌড় সিংহাসনে আরোহণ করেন। ইহার কিছু পরে মগধের সুলভান সুলেমান কররাণী গৌড়ের অধিকার প্রাপ্ত হন। ইনি পুরাতন মালদহের সোনা মসজিদ নিৰ্ম্মাণ করেন এবং গৌড়ের অস্বাস্থ্যকরতার জন্য গৌড়ের দক্ষিণ-পশ্চিমে গৌড় ও রাজমহলের মধ্য পথে গঙ্গার চরে তাড়া নামক স্থানে ১৫৬৪ খৃষ্টাব্দে রাজধানী স্থানান্তরিত করেন। সুলেমান কররাণীর মৃত্যুর পর তাহার জ্যেষ্ঠ পুত্র বায়াজিদ এবং তাহার পর অপর পুত্র দাউদ শাহ সিংহাসনে আরোহণ করেন। সুলেমান বা বায়াজিদ নিজ নামে মুদ্রাঙ্কন করিতে সাহস করেন নাই, কিন্তু দাউদ শাহ আরবী ও হিন্দি ভাষায় নিজ নামে মুদ্রা বাহির করিয়া সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে রাজত্ব করিতে আরম্ভ করেন এবং বহু সৈন্ত সংগ্ৰহ করিয়া সম্রাট আকবরের রাজা আক্রমণ করেন । রাজা তোড়রমল্ল ও খানখানান মুনিম খাঁ তাহাকে দমন করিতে প্রেরিত হন। দাউদ ভীত হইয়া গৌড় পরিত্যাগ করেন। মুঘল সৈন্ত বিনা বাধায় রাজধানী তাড়া অধিকার করে। ঐ সময়ে কোচরাজ নরনারায়ণ “গৌড়পাশা” দাউদ শাহের বিরুদ্ধে আকবর বাদশাহকে সাহায্য করিয়াছিলেন। মুঘলদল দাউদের পশ্চাদ্ধাবন করিয়া তাহাকে সপ্তগ্রাম হইতে হটাইয়া সুবর্ণরেখা নদীর নিকটে একরোই বা মুঘলমারী গ্রামে যুদ্ধ করিতে বাধ্য করে। দাউদ পরাজিত হইয়া কটকে পলায়ন করেন এবং তথায় আত্মসমর্পণ করিয়া ওড়িষ্যার জায়গীর পদ প্রাপ্ত হন। এই সময়ে ১৫৭৫ খৃষ্টাব্দে অনুমান হয় ম্যালেরিয়া মহামারীতে গৌড় নগরী শ্মশানে পরিণত হয়। এই বৎসর গৌড়ের মুঘল শাসনকর্তা খানখানান মুনিম খা তাড়ায় দেহত্যাগ করিলে দাউদ নিজ রাজ্য পুনরাধিকারের চেষ্টা করেন। রাজমহলের নিকট দাউদ ১৫৭৬ খৃষ্টাব্দের ১২ই জুলাই পরাজিত ও বন্দী হন। তাহাকে হত্যা করিয়া তাহার ছিন্ন মস্তক আকবরের নিকট প্রেরিত হইয়াছিল। বলিতে গেলে দাউদ শাহ গৌড়ের শেষ স্বাধীন রাজা। রাজা মানসিংহের সময় পৰ্য্যন্ত বাংলার সুবাদারগণ র্তাড়ায় অবস্থান করিতেন। আওরঙ্গজেবের সহিত যুদ্ধের সময় তাহার ভ্রাতা শাহ সুজা ১৬৬০ খৃষ্টাব্দে তাড়ায় বর্ষাকাল অতিবাহিত করিয়াছিলেন। ১৫৯২ খৃষ্টাব্দে মানসিংহ রাজমহলে রাজধানী স্থানান্তরিত করেন। র্তাড়ার কোনও চিহ্নমাত্র এখন নাই । ইহা নদীগর্ভে সম্পূর্ণ বিলীন হইয়াছে। দাউদ শাহের মৃত্যুর পরও আফগান প্রধানগণ গৌড় ও মগধে স্বাধীনতা রক্ষা করিবার চেষ্টা করিয়াছিলেন এবং পূর্ববঙ্গ আরও ৫০ বৎসর মুঘল আধিপত্য স্বীকার করে নাই। - প্রাচীন গৌড়ের দ্রষ্টব্য স্থানগুলির বিবরণ নিম্নে লিপিবদ্ধ হইল ।