পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/৩৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ ○>> অঙ্কিত আছে। এই দরগাহে ও ভারতের নানা স্থান হইতে ফকির দরবেশ আসিয়া থাকেন । ছোট দরগাহ হইতে কিছু উত্তরে সোনা মসজিদ অবস্থিত। ইহার অপর নাম কুতবসাহী মসজিদ। এই মসজিদটি মুরিদখানার উত্তরদিকে অবস্থিত। ইহারও এখন ভগ্নদশা। পূর্বে ইহার দশটি গুম্বজ ছিল, এখন একটিও নাই। তবে ভগ্ন জীর্ণ দ্বার, স্তম্ভ, মিম্বর এখনও এই স্থানে দেখা যায়। কষ্টি প্রস্তরের একটি স্মৃতিফলকে লিখিত আছে যে, এই মসজিদ মুখছম উবেদ কাজি ৯৯০ হিজিরায় (১৫৮৪ খৃঃ) ইহা নিৰ্ম্মাণ করান। এই মসজিদের উত্তর-পূর্ব দিকে একলাখী নামক স্ববৃহৎ সমাধি সৌধ অবস্থিত। ইহার উপর একটি প্রকাগু গুম্বজ আছে। ইহার দক্ষিণ দিকস্থ কষ্টি পাথরের প্রধান প্রবেশ দ্বারের পার্শ্বস্থ প্রস্তরে হিন্দু মূৰ্ত্তি খোদিত আছে; পরস্তু দ্বারের পাষাণ চৌকাঠে বৌদ্ধ মূৰ্ত্তি আছে। তাহাতে মনে হয়, কোন হিন্দু বা বৌদ্ধ মন্দিরের ভগ্নাবশেষ হইতে তোরণটি সংগৃহীত হইয়াছিল। হিন্দু ও বৌদ্ধ স্থাপত্যের নিদর্শন একলাখীর বহু প্রস্তরখণ্ডে দৃষ্ট হয়। প্রস্তরের দেওয়ালে লতা পাতা পুষ্পাদি খোদিত। ইহার ইষ্টকের গাথুনি অতি চমৎকার, তদুপরি নক্সার কাজ আরও স্বন্দর, ঠিক গৌড়ের চিকা মসজিদের মত। প্রস্তরনিৰ্ম্মিত দ্বারশীর্ষে গণেশ মূৰ্ত্তি পাষাণে খোদিত। পূৰ্ব্বে চারটি মিনার ছিল, এখন ঐগুলি ধ্বংসমুখে পতিত। এই সৌধে রাজা গণেশের পুত্র যন্ত্র বা জলাল-উদ্দীনের, তাহার পত্নীর ও পুত্র মুলতান শৰ্মস্-উদ্দীন আহম্মদ শাহের সমাধি আছে। একলাখী বাংলার পাঠান সুলতানদের স্থপতি-শিল্পের অতি উৎকৃষ্ট নিদর্শন। ইহা নিৰ্ম্মাণ করিতে এক লক্ষ মুদ্রা ব্যয় হইয়াছিল। তখনকার কালের লক্ষ টাকা বড় সামান্ত নহে। বোধ হয় এক লক্ষ মুদ্রা ব্যয় হইয়াছিল বলিয়া ইহার নাম 'একলাখী হইয়াছে। স্থানীয় মুসলমানগণ ইহাকে “একলক্ষ্মী” মসজিদ নামে