পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলার রাজধানী কলিকাতা ৩৫ এসিয়াটিক সোসাইটি-ইহাও ময়দানের নিকটে পার্ক সট টের সংযোগস্থলে অবস্থিত। ইহা এদেশের সর্বাপেক্ষ প্রাচীন শিক্ষা-পরিষদ। ১৭৮৪ খৃষ্টাব্দে বখ্যাত মনীষী স্তর উইলিয়ম জোন্স কর্তৃক ইহা প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে বহু প্রসিদ্ধ ব্যক্তির মর্শ্বরমূৰ্ত্তি ও প্রতিকৃতি আছে । ইহার গ্রন্থাগারে হস্তলিখিত প্রায় ১৬,০০০ সংস্কৃত ও ৫,০০০ ফারসি পুথি এবং বহু প্রাপ্য প্রাচীন গ্রন্থাদি আছে। এই সমিতির উদ্যোগেই যাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়। অনেক প্রাচীন লোকে এই জন্য যাদুঘরকে এখনও “ সোসাইটি” নামে অভিহিত করেন। (SS) আলিপুরের চিড়িয়াখানা—ইহা আদিগঙ্গার তীরে খিদিরপুর ব্রীজের নিকটে অবস্থিত। ইহা একাধারে একটি মনোরম উদ্যান ও পশুশাল। ভারতবর্ষে এতবড় পশুশালা আর নাই । ১৮৬৭ খৃষ্টাব্দে ইহা প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে বাস্ত্র, হস্তী, গণ্ডার, ভল্লুক, বানর প্রভৃতি আমাদের দেশের জন্তু ব্যতীত আফ্রিকার সিংহ, জলহস্তী (হিপে), জিরাফ, জেব্রা, ওরাংওটা’, কাঙ্গারু ও নানাদেশের তুল্লভ পশুপক্ষী সযত্বে রক্ষিত আছে । অপরাহ্লে বেল প্রায় ৩টার সময় সিংহ, ব্যাঘ্র প্রভৃতি জানোয়ারকে র্কাচ মাংস খাইতে দেওয়া হয় এবং উহা দেখিবার জন্য ঐ সময়ে বিস্তর লোকের সমাগম হয়। রবিবার ভিন্ন অন্য দিন বেলা ১০টা হইতে সূৰ্য্যাস্ত পৰ্য্যন্ত চিড়িয়াখানায় জন প্রতি এক অনা করিয়া দর্শনী লাগে । (১২) বেলভেডিয়র—ইহা চিড়িয়াখানার সম্মুখেই অবস্থিত । বড়লাট কলিকাতায় আসিলে এইখানে অবস্থান করেন। ১৮৫৮ হইতে ১৯১২ খৃষ্টাব্দ পর্য্যস্ত ইহা ছোট লাটের বাসভবন ছিল। কথিত আছে ১৭০০ খৃষ্টাব্দে আওরঙ্গজেবের পৌত্র আজিম্ উস, শান কর্তৃক ইহা নিৰ্ম্মিত হয়। ইহা তৎকালীন সুবেদারের মৃগয়া-ভবন ছিল বলিয়া প্রসিদ্ধি আছে । (১৩) খিদিরপুরের ডকৃ—ইহাও কলিকাতার একটি প্রধান দ্রষ্টব্য। গঙ্গ হইতে খাল দিয়া এই ডকে ইচ্ছামত জল সরবরাহ করা হয় । এখানে সৰ্ব্বদাই নানা । দেশীয় বড় বড় জাহাজকে মাল বোঝাই ও মাল খালাস করিতে দেখা যায়। এখানে চারটি শুষ্ক বা জলহীন ডক আছে। এই ডকগুলিতে জাহাজ আনিয়া পরে সমস্ত জল বাহির করিয়া দিয়া ইহাকে শুষ্কখতে পরিণত করা হয় এবং তথায় জাহাজগুলির মেরামত কাৰ্য্য চলে। ডকের মুখে গঙ্গার উপর একটি ঘড়িসংযুক্ত উচ্চ আলোকস্তম্ভ আছে। খিদিরপুরের দক্ষিণ হইতে মেটিয়াবুরুজ পর্যন্ত ছোট ছোট জাহাজ মেরামতের অনেকগুলি ডক্‌ আছে | নিকটেই গার্ডেনরচে বেঙ্গল নাগপুর রেলওয়ের বড় দপ্তর বা প্রধান কার্যালয় অবস্থিত । • * { . (১৪) কালীঘাট--হিন্দু দর্শকগণের নিকট কালীঘাট কলিকাতার সর্বপ্রধান দ্রষ্টব্য। কালীঘাট একটি মহাপীঠ, এখানে সতীর দক্ষিণ পদের চারিটি অঙ্গুলি পড়িয়াছিল ; দেবীর নাম কালিকা, ভৈরব নকুলেশ্বর। দেবীর মন্দিরের অনতিদূরে নকুলেশ্বরের মন্দির। কালীঘাটের প্রান্ত দিয়া আদিগঙ্গা প্রবাহিতা। কালীঘাটের কালীর মূৰ্ত্তি পাষাণময়ী।