পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 বাংলায় ভ্রমণ (গ) দমদম—পূর্বে এখানে ছাউনি ছিল। উড়োজাহাজে উঠানামার জন্য এখানে একটি প্রকাণ্ড এরোড্রোম আছে। (ঘ) দক্ষিণেশ্বর—শিয়ালদহ হইতে ট্রেণ ও মোটর বাস যোগে দক্ষিণেশ্বরে যাওয়া যায়। ট্রেণে গেলে সুবিখ্যাত ওয়েলিংডন ব্রিজের নিকটে দক্ষিণেশ্বর স্টেশনে নামিতে হয়। রেল স্টেশন ও বাস স্ট্যাগু হইতে দক্ষিণেশ্বরের সুবিখ্যাত কালীবাড়ী মাত্র দুই তিন মিনিটের পথ। কালীবাড়ী গঙ্গর ঠিক উপরেই অবস্থিত। বাঁধাঘাট, চাদনী ও দ্বাদশ শিবমন্দিরযুক্ত এই কালীবাড়ীর দৃশ্ব গঙ্গাবক্ষ হইতে অতি সুন্দর। কলিকাতা , জানবাজারের পুণ্যশীলা রাণী রাসমণি এই কালীবাড়ীর প্রতিষ্ঠা করেন। মহামানব । রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের সাধন পীঠ হিসাবে বর্তমানযুগে এই কালীবাড়ী তীর্থের গৌরব | অর্জন করিয়াছে। রামকৃষ্ণদেবের বাস-কক্ষটিতে র্তাহার শয্যা ও ব্যবহৃত দ্রব্যাদি সুসজ্জিত করিয়া রাখা আছে। রামকৃষ্ণদেবের সাধন বেদী ও পঞ্চবটী এখানকার অন্যতম দ্রষ্টব্য। কালীমন্দিরের চূড়ার সংখ্যা নয়টি, ইহার সম্মুখে নাটমন্দির ও উত্তরদিকে রাধাকৃষ্ণের মন্দির অবস্থিত। মন্দির প্রাঙ্গনের বিস্তৃত স্থান লালরঙের টালির দ্বারা আবৃত। দক্ষিণেশ্বরে যাত্রীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাইতেছে। কালীবাড়ী হইতে কিছু দূরে দক্ষিণেশ্বর গ্রামের মধ্যে রামকৃষ্ণ সঙ্ঘ কর্তৃক পরিচালিত আদ্যাপীঠ ও তৎসংলগ্ন মাতৃআশ্রম, বালক-আশ্রম প্রভৃতি বিদ্যালয়গুলি দক্ষিণেশ্বরের অপরাপর দ্রষ্টব্য। (ঙ) ওয়েলিংডন ব্রিজ-দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ীর ঠিক পার্শ্বে এই প্রকাণ্ড রেলওয়ে সেতুটি অবস্থিত। ইহার চলিত নাম বালী ব্রিজ । ১৯২৭ খৃষ্টাব্দের জানুয়ারী মাসে ইহার নিৰ্ম্মাণ আরম্ভ হইয়া ১৯৩১ খৃষ্টাব্দে শেষ হয় এবং ভারতের তৎকালীন বড়লাট লর্ড ওয়েলিংডন ইহার উদ্বোধন করেন। র্তাহারই নামানুসারে ইহার নামকরণ হয় ওয়েলিংডন ব্রিজ। গঙ্গাগর্ভে অবস্থিত ৩৫০ ফুট অন্তর সাতটি স্তম্ভের উপর ইহা নিৰ্ম্মিত। ভারতবর্ষের মধ্যে ইহা একটি বিখ্যাত রেলওয়ে সেতু। প্রায় চারি, কোটি টাকা ব্যয়ে ইহা নিৰ্ম্মিত। ইহার উপর দুইটি বেলওয়ে লাইন ছাঙ্গ তুই দিকে মোটরগাড়ী প্রভৃতি যাতায়াতের পথ ও পদচারীদের জন্য ফুটপথ আছে। গ্রীষ্মকালের বৈকালের দিকে অনেকে ইহার উপর বেড়াইতে যান। পদচারদিগকে এই সেতু অতিক্রম করিতে হইলে দুই পয়সা মাশুল দিতে হয় । (চ) ওয়েলিংডন রীচ বালী ব্রিজের কিঞ্চিৎ দক্ষিণে গঙ্গাগর্ভে জলের উপর বিমান যান অবতরণ করিবার জন্য একটি স্থান আছে, উহা ওয়েলিংডন রীচ নামে পরিচিত । (ছ) বেলুড়মঠ —ভাগীরথীর পশ্চিমতীরে দক্ষিণেশ্বরের অনতিদূরে বেলুড়মঠ অবস্থিত। রামকৃষ্ণ পরমহংসের প্রধান শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দ এই স্থানে রামকৃষ্ণ মিশনের প্রধান কাৰ্য্যালয় স্থাপন করেন। সম্প্রতি এখানে একটি প্রস্তর মণ্ডিত বৃহৎ মন্দির নিৰ্ম্মিত হইয়া তন্মধ্যে রামকৃষ্ণদেবের চিতাভষ্মেব উপর সুন্দর মৰ্ম্মরমূৰ্ত্তি প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। বাংলাদেশে এত বড় মন্দির আর নাই। নিকটেই স্বামী বিবেকানন্দের সমাধি মন্দির অবস্থিত। ( পূৰ্ব্বভারত রেলপথের "বেলুড়" স্টেশন দ্রষ্টব্য। ) <>음응3~