পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কলিকাতা ও হাওড়ার সহিত লাইট রেলওয়ের দ্বারা ংযুক্ত প্রসিদ্ধ স্থান সমূহের সংক্ষিপ্ত বিবরণ। (ক) বারাসাত-বসিরহাট লাইট রেলওয়ে কলিকাতার বেলগাছিয়া (ট্রাম ডিপোর নিকট) হইতে মার্টিন কোম্পানির এই ছোট মাপের রেলপথটি ৪৩ মাইল দূরবর্তী ২৪ পরগণা জেলার সুন্দরবন অঞ্চলের হাসনাবাদ পৰ্য্যন্ত গিয়াছে। রেল স্টেশনটি বেলগাছিয়ায় অবস্থিত হইলেও উহার নাম শামবাজার। এই স্থান হইতে ১৮ মাইল দূরবর্তী বেলিয়াঘাট ব্রীজ হইতে এই রেলপথের এক শাখা ৯ মাইল দূরবর্তী পূৰ্ব্ববঙ্গ রেলপথের খুলনা শাখার বারাসাত জংশনে গিয়া মিলিত হইয়াছে। এই রেলপথে হাড়োয়াখাল, দেগঙ্গ, ধানকুড়িয়া গাইন গার্ডেন, আড়বালিয়া, শীকরা-কুলীনগ্রাম, বসিরহাট, দণ্ডীরহাট, টাকী রোড ও হাসনাবাদ উল্লেখযোগ্য স্টেশন। হাড়োয়াখল কলিকাতা হইতে ১১ মাইল দূর । হাড়োয়ায় বিখ্যাত । পীর গোরাচাদ বা গোড়াই গাজীর সমাধি অবস্থিত। প্রতি বৎসর ফাঙ্কন মাসের ১২ই তারিখে গোড়াই গাজীর মৃত্যু তিথিতে এখানে মুসলমানগণের একটি বৃহৎ মেলা হয়। গোড়াই গাজী সম্বন্ধে সঠিক বিবরণ জানা যায় নাই। জনশ্রুতি যে তিনি একজন বিখ্যাত ধৰ্ম্মপ্রচারক ছিলেন ও র্তাহার অদ্ভূত ক্ষমতা ছিল। ইসলাম ধৰ্ম্ম প্রচারের জন্য তিনি বালাগু পরগণার রাজা চন্দ্রকেতুর রাজধানী দেউলিয়ায় উপস্থিত হন ও র্তাহাকে মুসলমান হওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। চন্দ্রকেতু স্বধৰ্ম্ম পরিত্যাগ করিতে স্বীকার না করায় তিনি র্তাহাকে স্বীয় অদ্ভূত ক্ষমতা প্রদর্শনপূর্বক বশীভূত করিতে চেষ্টা করেন। কথিত আছে তাহার প্রভাবে একটি লৌহখণ্ড একটি সুপক্ক কদলীতে পরিণত হয় ও একজন মৃতব্যক্তি পুনৰ্জ্জীবন প্রাপ্ত হয়। ইহা দেখিয়াও কিন্তু চন্দ্রকেতুর মন টলিল না। তিনি গোড়াই গাজীর কথায় কর্ণপাত করিলেন না। চন্দ্রকেতুর সহিত আটিয়া উঠিতে না পারিয়া গোড়াই গাজী সুন্দরবনের হাতিয়াগড় অঞ্চলে ইসলামধৰ্ম্ম প্রচার করিতে গমন করেন। সেখানে তখন রাজা মহীদানন্দ রাজত্ব করিতেছিলেন। র্তাহার দুই পুত্র অকানন্দ ও বকানন্দ মহাবীর ছিলেন। র্তাহাদের সহিত গোড়াই গাজীর সংঘর্ষ উপস্থিত হইল। এই যুদ্ধে বকানন্দ গোড়াই গাজীর হস্তে নিহত হইলেন, কিন্তু গোড়াই গাজীও গুরুতররূপে আহত হইয়া ক্ষতস্থানে লাগাইবার জন্য র্তাহার অনুচরের নিকট একটি পান চাহিলেন । হাতিয়াগড়ে তখন পান না মিলায় আহত গোড়াই গাজী রণক্ষেত্র পরিত্যাগ করিয়া কুলটি-বিহার নামক গ্রামে আসিয়া এক নির্জন স্থানে শয়ন করিয়া রছিলেন। কালুঘোষ নামক জনৈক গোয়ালার গাভী আসিয়া প্রত্যহ তাহার মুখে ইন্ধধার বর্ষণ করিয়া যাইত। কথিত আছে, যে অন্তের অলক্ষিতে সপ্তাহকাল এইরূপে ছন্ধ পান করিতে পারিলে তিনি নাকি সুস্থ হইয়া উঠিতে পারিতেন। কিন্তু সপ্তম দিনে কালু ঘোষ গাভীর অনুসরণে আসিয়া এই ব্যাপার প্রত্যক্ষ করায় গোড়াই গাজী বুঝিলেন