পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8b- বাংলায় ভ্রমণ লোকের মুখে মুখে ফিরে। কথিত আছে যে তিনি নাকি প্রতিজ্ঞ করিয়াছিলেন যে লক্ষ টাকা উপার্জন না করিয়া সন্দেশ খাইবেন না, এবং কাৰ্য্যতঃ সেই প্রতিজ্ঞা রক্ষাও করিয়াছিলেন। টাকা রোড—কলিকাতা হইতে ৪২ মাইল দূর। এখানে নামিয়া ২৪ পরগণা জেলার অন্যতম বিখ্যাত স্থান টাকী যাইতে হয়। টাকীর জমিদারগণ যশোহররাজ প্রতাপাদিত্যের খুল্লতাত রাজা বসন্ত রায়ের বংশধর। এই বংশের স্বগীয় কালীনাথ মুন্সী মহাশয় দানশীলতার জন্য প্রসিদ্ধ ছিলেন। কথিত আছে জনৈক ব্রাহ্মণের ফঁাসির হুকুম হইলে কালীনাথ প্রায় লক্ষ টাকা ব্যয় করিয়া তাহার জীবন রক্ষা করিয়াছিলেন। হাসনাবাদ—কলিকাতা হইতে ৪৩ মাইল দূর। এই স্থানটি ইছামতী নদীর তীরে অবস্থিত ও সুন্দরবন অঞ্চলের একটি বিখ্যাত গঞ্জ । কোম্পানির আমলে এখানে একটি লবণের কারখানা ছিল। শ্রীরামপুর কলেজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও বাংলা মুদ্রাযন্ত্রের প্রবর্তক বিখ্যাত শিক্ষাব্রতী পাদরি কেরি সাহেব এক সময়ে গুরু ঋণভারে প্ৰপীড়িত হইয়া হাসনাবাদের নিমক-কুঠিতে সপরিবারে আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছিলেন। এই স্থানে তিনি ৪০ একর জমি লইয়া চাষ আবাদ আরম্ভ করেন ও একখানি পর্ণ কুটার নিৰ্ম্মাণ করিয়া তাহাতে বসতি করেন। প্রায় এক বৎসরকাল এখানে অবস্থান করিবার পর তাহার ভাগ্য পরিবর্তন হয় ও তিনি কোম্পানির অধীনে একটি কাৰ্য্য পাইয়৷ ১৭৯৪ খৃষ্টাব্দের জুন মাসে সপরিবারে মালদহে চলিয়া যান। সেকালে হাসনাবাদে ব্যান্ত্রের বড় উপদ্রব ছিল। নিমক-কুঠির কুঠিয়াল শর্ট সাহেবের ও কেরির বন্দুক থাকায় বাস্ত্রভীতি অনেকটা নিবারিত হয় এবং দলে দলে বহুলোক আসিয়া হাসনাবাদে বসতি স্থাপন করে। হাসনাবাদ হইতে নৌকাযোগে সুন্দরবনের বহু স্থানে যাওয়া যায়।