পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Qや বাংলায় ভ্রমণ গড়ভবানীপুরে একমাত্র মণিনাথ মহাদেব নামক শিবের মন্দির প্রাচীন যুগের সাক্ষ্য স্বরূপ দাড়াইয়া আছে। রাজবাটীর কোনরূপ চিছু এখন আর দেখিতে পাওয়া যায় না। পেড়ো-বসন্তপুরে এখনও একটি গড়ের ধ্বংসাবশেষ দৃষ্ট হয়, উহা ভারত চন্দ্রের গড় নামে পরিচিত। কয়েক বৎসর হইল মহাকবি ভারত চন্দ্রের জন্ম স্থানে “রায় গুণাকর ভারত চন্দ্র ইনষ্টিটুইশন” নামে একটি উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। আমতা—হাওড়াঘাট হইতে ২৮ মাইল দূর। আমতায় একটি মুনসেফ আদালত আছে। শহরটি দামোদর নদের তীরে অবস্থিত এবং একটি বিখ্যাত বাণিজ্য কেন্দ্র। দামোদরের প্লাবন হইতে শহর রক্ষা করিবার জন্য উচু বাধ দেওয়া আছে। আমতার মেলাই চণ্ডীর মন্দির অতি প্রসিদ্ধ। কাহারও কাহারও মতে ইহা একটি পীঠস্থান । জনশ্রুতি যে পূৰ্ব্বকালে মেলাই চণ্ডী দেবী দামোদর নদের অপর পারে জয়ন্তী নামক গ্রামে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। বর্ষাকালে দামোদরের প্লাবনের জন্য লোকে দেবীর পূজা দিতে যাইতে পারিত না । অতঃপর দেবী একদিন তাহার সেবায়েতকে স্বপ্নে দর্শন দিয়া বলেন যে তিনি স্থান পরিবর্ত করিবেন । পুরোহিত পরদিন প্রাতঃকালে একটি বটবৃক্ষ মূলে দেবীর প্রতিমা দেখিতে পান এবং সেই দিন হইতে সেই স্থানেই তাতার পূজা করিতে থাকেন। জনৈক বণিকের লবণ বোঝাই কয়েক খানি নৌকা দামোদর গর্ভে ডুবিয়া যায়, বণিক মানত করেন যে যদি দেবীর বরে লবণশুদ্ধ তাহার নৌকাগুলির পুনরুদ্ধার হয় তবে তিনি দেবীর জন্য একটি মন্দির নিৰ্ম্মাণ করিয়া দিবেন। দেবীর প্রভাবে বণিকের প্রার্থন পূর্ণ হইলে তিনি তাহার জন্য একটি সুন্দর মন্দির নিৰ্ম্মাণ করিয়া দেন । এই মন্দিরটি জেলার মধ্যে সৰ্ব্বাপেক্ষা প্রাচীন মন্দির বলিয়া বিবেচিত হয়। ইহার গাত্রে উৎকীর্ণ একটি লিপি হইতে জানা যায় যে ১৬৪৯ খুষ্টাব্দে (১০৫৬ বঙ্গাব্দে) ইহা নিৰ্ম্মিত হয় । মেলাই চণ্ডীর বিগ্রহ প্রস্তর নিৰ্ম্মিত। মূৰ্ত্তিটি ৩০ ফুট উচ্চ। এই মন্দিরের নিকটে যে শিব মন্দিরটি আছে উহা কলিকাতা হাটখোলার অধিবাসী মদনমোহন দত্ত কর্তৃক প্ৰতিষ্ঠিত। আমতার নিকটবর্তী নারিট গ্রাম সুবিখ্যাত পণ্ডিত কলিকাতা সংস্কৃত কলেজের ভূতপূর্ব অধ্যক্ষ স্বৰ্গীয় মহামহোপাধ্যায় মহেশচন্দ্র ন্যায়রত্ন, সি, আই, ই, মহাশয়ের জন্মস্থান। প্রধানতঃ ইহারই চেষ্টায় হাওড়া-আমতা রেলপথ খোলা হয়। এখানে “ন্যায়রত্ন ইনষ্টিটিউশন” নামে উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয় আছে। বড়গাছিয়া জংশন চাঁপাডাঙ্গ শাখা লাইনে জগৎবল্লভপুর, ইছানগরী ও চাঁপাডাঙ্গ উল্লেখযোগ্য স্টেশন। *