পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পুর্ববঙ্গ রেলপথে বাংলা দেশ পূর্ববঙ্গ রেলপথ খুলিবার পূর্বে বাংলা দেশে একমাত্র নদী পথেই দূরস্থ স্থানে যাইতে হইত। ১৮৪৮ খৃষ্টাব্দের পূৰ্ব্বে কলিকাতা ও গৌহাটির মধ্যে বড় বড় নৌকাতেই বাতায়াত করিতে হইত, ইহাতে ৬৭ সপ্তাহ লাগিত। ১৮৪৮ খৃষ্টাব্দে ঈস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানি কলিকাতা ও গৌহাটির মধ্যে স্টীমার চালাইবার ব্যবস্থা করেন। ১৮৬০ খৃষ্টাব্দে সরকারের সহিত চুক্তিবদ্ধ হইয়া ইণ্ডিয়া জেনারল ন্যাভিগেশন কোম্পানি কলিকাতা এবং আসাম উপত্যকার মধ্যে দুইখানি স্টীমার চালাইতে থাকেন; ছয় সপ্তাহ অন্তর স্টীমার ছাড়িত। তখন হইতে সরকারী স্টীমার উঠাইয়া লওয়া হয়। ইহাই পূর্ববঙ্গ ও আসামের স্টীমার পথগুলির সূত্রপাত। বেশী দিন নয়, একশত বৎসর পূৰ্ব্বেও এ দেশে রেলের কথা কেহ শুনে নাই। ১৮২৫ খৃষ্টাব্দে ইংলণ্ডে প্রথম রেল চলিয়াছিল। ভারতবর্ষে প্রথম রেল খোলা হয় ১৮৫৩ খৃষ্টাব্দে ১৬ই এপ্রিল অর্থাৎ এখন হইতে ৮৬ বৎসর পূর্বে। বোম্বাই হইতে মাত্র ১৪ মাইল দূর "থান" সটেশনে গিয়া এই লাইন শেষ হয়। বর্তমানে ভারতবর্ষে প্রায় ৫৮ হাজার মাইল পথ রেলে বাধা পড়িয়াছে। প্রতি বৎসর প্রায় ৫৮ কোটি যাত্রী ও ১ হাজার কোটি টন ( ১ টন—২৭০ মণ , মাল রেলে যাতায়াত করে। বোম্বাই-থান লাইন খোলার চার বৎসর পরে (১৮৫৭) “ঈস্টর্ণ, বেঙ্গল রেলওয়ে কোম্পানি" কলিকাতা হইতে কুষ্ঠিয় পর্যন্ত ১১১ মাইল রেল পথ খুলিবেন স্থির করেন। এই কোম্পানির সহিত সরকারের চুক্তি হয় যে র্তাহার কুষ্ঠিয়াতে পুল বাধিয়া ঢাকা পৰ্য্যন্ত লাইন লইয়া যাইবেন। তখন পদ্মা কুষ্ঠিয়ার ধার দিয়া প্রবাহিত ছিল। ১৮৬১ খৃষ্টাব্দে এই লাইনে প্রথম গাড়ী চলে। তখন কুষ্ঠিয়াই পূৰ্ব্ববঙ্গ রেলের শেষ সীমা ছিল। ইতিমধ্যে পদ্মা দূরে সরিয়া যায় এবং পুল বাধা অসম্ভব হয়। ১৮৭১ খৃষ্টাব্দে রেল গোয়ালন্দ পর্যন্ত বিস্তৃত হয় ও সেখান হইতে স্টীমারে করিয়া ঢাকা এবং পূর্ববঙ্গের অন্যান্য স্থানে যাইবার ব্যবস্থা হয় । 3. য়া লাইনের পরেই কলিকাতা-ক্যানিং লাইন খোলা হয়। ১৮৪৬ খৃষ্টাব্দ হইতে আশঙ্কা হইতেছিল যে ভাগীরথীতে পলি পড়ায় কলিকাতার বন্দর বেশীদিন চলিবে না, সেই জন্য কলিকাতা হইতে বন্দর সরাইয়া ক্যানিং শহরে লইয়া যাওয়া স্থিরীকৃত হয়। ফলে “কলিকাতা ও সাউথ, ঈস্টর্ণ রেলওয়ে কোম্পানি” নামে একটি ব্যবসায়ীসঙ্গ