পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূৰ্ব্ববঙ্গ রেলপথে বাংলা দেশ *S করিলেন । ইহাতে খ্ৰীত হইয়া রুদ্র বীরভদ্রকে শু্যামসুন্দর বিগ্রহ দান করিলেন। খড়দহের শামসুন্দর মন্দির ও গঙ্গাতীরবর্তী রাসমঞ্চ এখানকার প্রধান দ্রষ্টব্য। রাসযাত্রা, দোল পূর্ণিমা ও মাঘী পূর্ণিমা উপলক্ষে খড়দহে বিশেষ সমারোহ ও মেলা হয়। খড়দহের গঙ্গাতীরে পুরাতন বাংলা রীতিতে নিৰ্ম্মিত চব্বিশটি শিবমন্দির আছে। খড়দহ নিবাসী ধৰ্ম্মপ্রাণ জমিদার ৬প্রাণকৃষ্ণ বিশ্বাস এই মন্দিরগুলির প্রতিষ্ঠাতা। কথিত আছে, বহু অর্থ ব্যয়ে বিশ্বাস মহাশয় স্বীয় ভবনে লক্ষ শালগ্রাম শিলা সংগ্রহ করিয়াছিলেন । রামতোষণ বিদ্যারত্ব নামক জনৈক পণ্ডিতের সহায়তায় বিশ্বাস মহাশয় * প্রাণতোষিণী মহাতন্ত্র" নামে একখানি তন্ত্র-সংগ্রহ গ্রন্থ প্রকাশ করেন। রুদ্রব্রহ্মচারী কর্তৃক নিৰ্ম্মিত নন্দদুলাল বিগ্রহ খড়দহ হইতে পাঁচ মাইল দূরে অবস্থিত সাইবন নামক গ্রামে প্রতিষ্ঠিত আছেন। মাঘী পূর্ণিমার সময় সাইবনায় একটি বৃহৎ মেলা হয় ও সেই সময় খড়দহ হইতে এই স্থান পৰ্য্যন্ত মোটরবাস যাতায়াত করে। মাঘী পূর্ণিমার দিন গঙ্গার পশ্চিম পারস্থ বল্লভপুরের রাধাবল্লভ, খড়দহের শামসুন্দর ও সাইবনার নন্দদুলাল এই তিন বিগ্রহ দর্শন করা মহিলাগণের নিকট বিশেষ পুণ্যের কার্য্য বলিয়া বিবেচিত হয় । টিটাগড় কলিকাতা ইষ্টতে ১১ মাইল দূর । বহু পাটকল ও কাগজের কলের জন্য এই স্থান বিখ্যাত । স্টেশন হইতে প্রায় দেড় মাইল পশ্চিমে গঙ্গাতীরে বিশালাক্ষীর মন্দির অবস্থিত। মন্দিরটি আধুনিক হইলেও এই দেবী অতি পুরাতন । দেবী ত্রিনেত্র, পীতবর্ণ ও চতুভূজা। মন্দিরের নিকটেই গঙ্গাগর্ভে “বিশালক্ষীর দহ” নামে একটি অতি গভীর দহ আছে। স্থানীয় জনসাধারণের বিশ্বাস দেবীর পূজা না দিয়া নৌকা ছাড়িলে দেবী এই দহ মধ্যে নৌকা ডুবাইয়া দেন। বৈশাখমাসে দেবীকে গঙ্গাজলে স্নান করাইবার জন্য এখানে বহু নরনারীর সমাগম হয় । টিটাগড়ে রাণী রাসমণির কন্যা তারা ঠাকুরাণী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ঘাট, চাদনী, দ্বাদশ শিবমন্দির ও অন্নপূর্ণার মন্দির আছে। এখানে মহাষ্টমী ও অন্নপূর্ণ পূজার সময় বিশেষ সমারোহ হয়। - ঈস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানির আমলে টিটাগড়ে একটি ডকু এবং প্রায় তিন শত বিঘা জমি লইয়া একটি উদান ছিল। বৰ্ত্তমানে উহাদের কোন চিহ্ন নাই। বারাকপুর-কলিকাতা হইতে ১৪ মাইল দূর। ইহা ২৪ পরগণা জেলার একটি মহকুম। দমদমের সেনা নিবাস উঠিয়া যাওয়ায় ইহা এখন কলিকাতার নিকটবৰ্ত্তী একমাত্র সেনা নিবাস। এই সেনা নিবাস ১৭৭২ খৃষ্টাব্দে স্থাপিত হইয়াছিল। ১৮২৪ ং ১৮৫৭ খৃষ্টাব্দে এখানকার দেশীয় সিপাহীরা বিদ্রোহী হইয়াছিল। ১৮১৪ খৃষ্টাৰে রহ্মযুদ্ধের সময় একদল ভারতীয় সিপাহীকে স্থলপথে চট্টগ্রাম ও আরাকানের দিকে