পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলায় ভ্রমণ واسb বসিয়াই দেখিতে পাওয়া যায়। মন্দিরটি যে স্থানে অবস্থিত উহা চতুদিকের ভূমি হইতে অনেক উচ্চ। এই মন্দিরের ছাদ চৌচালার আকারে নিৰ্ম্মিত। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লাল ইটের দ্বারা গঠিত ও অপূৰ্ব্ব কারুকার্য্যময় এই মন্দিরটি বর্তমানে সরকারী “রক্ষিত-কাত্তির” অন্তর্গত । কবে কাহার দ্বারা এই মন্দির স্থাপিত হইয়াছিল তাহা নিণীত হয় নাই । ইহা অন্ততঃ ৫০০ শত বৎসরের পুরাতন হইবে । মন্দিরের নিকটে প্রত্যুম্ন সরোবর নামে একটি অতি পুরাতন দীঘি আছে। জমিদারগণের প্রাচীন দলিলাদিতে প্রত্যুম্ন হ্রদ ও প্রত্যুম্ননগরের উল্লেখ আছে। স্মাৰ্ত্ত রঘুনন্দন মুক্তবেণীর স্থান নিঠুদণ করিতে গিয়া প্রত্যুম্ন নগরের নাম করিয়াছেন। অনেকে অনুমান করেন যে অতি প্ৰাচীনকালে চাকদহ প্রছামনগর নামে একটি বিশাল নগরের অন্তর্গত ছিল। জনশ্রুতি যে শ্রীকৃষ্ণের পুত্র প্রত্যুম্ন চক্রতীর্থে সিদ্ধিলাভ করিয়া এই স্থানে স্বীয় নামে একটি নগর স্থাপন করেন। আবার কাহারও কাহারও মতে প্রত্যুম্ন রায় নামক জনৈক হিন্দু নরপতি এই নগরের প্রতিষ্ঠাতা। শিমুরালি হইতে চাকদহ পর্যান্ত স্থানে স্থানে বহু উচ্চ ভিট ও পৃষ্করিণী দুষ্ট হয়। এই সকল স্থান খনন করিলে বহু পুরাতন কীৰ্ত্তির সন্ধান পাওয়া যাইতে পারে বলিয়া অনেকের অভিমত। প্রসিদ্ধ “ কুলাৰ্ণবতন্ত্র ” প্রণেতা তান্ত্রিক পণ্ডিত নন্দকুমার বিদ্যালঙ্কার মহাশয় পালপাড়ার অধিবাসী ছিলেন । ১৮৪২ খৃষ্টাব্দে লর্ড বিশপ হিবর র্তাহার রোজনামচায় এই পণ্ডিতের নাম উল্লেখ করিয়াছেন । রাণাঘাট জংশন—কলিকাতা হইতে ৪৫ মাইল দূর । ইহা চণী নদীর তীরে অবস্থিত ও নদীয়া জেলার অন্যতম মহকম। প্রবাদ, বহু পূর্বে এখানে রণা নামক একজন দস্তু সর্দার বাস করিত । রণার ঘাটি বা আডড হইতে “ রাণাঘাট” নাম হইয়াছে অনেকে এইরূপ অনুমান করেন। এখানে সিদ্ধেশ্বরী নামে এক কালী আছেন, এই কালী রণা দস্থার প্রতিষ্ঠিত বলিয়া কথিত। রাণাঘাটে পাল চৌধুরী জমিদারগণের বাস। ইহাদের পূর্ব পুরুষ কৃষ্ণপান্তি অতি মহৎ ও সদাশয় লোক ছিলেন। কথিত আছে, ওয়ারেন হেসটিংস্ ইহাকে রাজা উপাধিতে ভূষিত করিতে চাহিলে ইনি তাহা গ্রহণ করিতে স্বীকৃত হন নাই এবং কৃষ্ণনগরের মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র প্রদত্ত “পাল-চৌধুরী” উপাধিতে সন্তুষ্ট ছিলেন। ইনি ১৭৪৯ খৃষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৮০৯ খৃষ্টাব্দে পরলোক গমন করেন। রাণাঘাটে একটি মেডিকাল মিশন আছে। নদীয়ার ভূতপূর্ব কলেক্টর মনরো সাহেব ইহার প্রতিষ্ঠাতা। রাণাঘাট শহরের উপকণ্ঠে দয়াবাড়ী নামক স্থানে একটি বৃহৎ চিকিৎসালয় ও একটি বিদ্যালয় আছে। রাণাঘাটের পাস্তুয়া খুব বিখ্যাত । রাণাঘাট হইতে ৪ মাইল দক্ষিণ-পূর্বদিকে চূর্ণ নদীর উভয়তীরে হরধাম ও আনন্দধাম নামে কৃষ্ণনগর রাজবংশীয়গণের দুইটি আবাসস্থল আছে। হরধাম মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায় কত্ত্বক স্থাপিত হয়। ইহার অট্টালিকা প্রভৃতি এখন ধ্বংসোন্মুখ । এখানে চিন্ময়ী নামে এক প্রাচীন কালী আছেন । - রাণাঘাট জংশন হইতে পূৰ্ব্ববঙ্গ রেল পথের এক শাখা কৃষ্ণনগর ও মুর্শিদাবাদ হইয়া লালগোলা ঘাট পর্যন্ত এবং তথা হইতে খেয়া জাহাজে গঙ্গা পার হইয়া গোদাগাড়ীঘাট হইতে মাঝারি মাপের লাইনে মালদহ হইয়া কাটিহার পর্য্যন্ত গিয়াছে। দ্বিতীয় একটি