পাতা:বাংলার গীতি কবিতা - চিত্তরঞ্জন দাশ.pdf/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(ለ b” বাঙ্গালার গীতি কবিতা বহিরাবরণ বলিয়া নির্দেশ করি। ভারতচন্দ্রের কালী ও শিবের রূপ বর্ণনায় ছন্দ ও শব্দ ঝঙ্কারের পরাকাষ্ঠা দেখা যায় । কিন্তু ভাব ও ছন্দে মাখামাখি হইয়। কল্পকলা রূপান্তরিত হইয়া ভাগবত সত্যে উপনীত হইতেছে ইহা ভারতচন্দ্ৰে নাই তাহা নয়, তবে অতি অল্প । রামপ্ৰসাদের কালীর রূপ বর্ণনাবহুল অনেকগুলি সঙ্গীত-এইরূপে ভারতচন্দ্রের কল্পকলার রাজ্যকে ছাড়াইয়া উদ্ধে উঠিতে পারে নাই। বরং ছন্দ ও শব্দ ঝঙ্কারে যেখানে রামপ্ৰসাদ ও ভারতচন্দ্ৰ প্ৰতিদ্বন্দ্বী ভাবে দণ্ডায়মানসেখানে অনেক স্থানেই রামপ্রসাদ হইতে ভারতচন্দ্ৰই শ্রেষ্ঠ । কিন্তু কাব্য ত শুধু ছন্দ আর শব্দ ঝঙ্কার নয়। কাজেই ভারতচন্দ্রের কাব্যের রাজ্য হইতে রামপ্ৰসাদের কাব্যরাজ্যের পরিসর অনেক উচ্চে-দূরে অবস্থিত ও বিস্তৃত । কৃষ্ণচন্দ্রীয় যুগের বাঙ্গালী নিশ্চিতই এ কথা জানিত । কিন্তু আমাদের আজ এ কথা আবার নূতন করিয়া বলিতে ও শুনিতে হইতেছে । ভারতচন্দ্ৰ—কালী, তারা, রাজরাজেশ্বরী, ভুবনেশ্বরী, ভৈরবী, ছিন্নমস্তা, ধূমাবতী, বগলা, মাতঙ্গী ও কমলা মুক্তির শাস্ত্ৰ-নির্দিষ্ট বৰ্ণনা দ্বারা তাহার অনুপম “অন্নদামঙ্গল আরম্ভ করিয়াছেন । ভারতচন্দ্রের কালী লোল জিহবা রক্তধারা মুখের দুপাশে ত্ৰিনয়ন অৰ্দ্ধচন্দ্ৰ ললাটে বিলাসে । ভারতচন্দ্রের শিব লক লক। ফণী জটা বিরাজ, তাক তক তকী রজনী রাজ ধক ধিক ধিক দহন সাজ, বিমল চপল গঙ্গিয় ।