পাতা:বাংলা লিরিকের গোড়ার কথা.pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলা লিরিকের গোড়ার কথা >@ এই সহজধর্মকেই তো আমরা স্পষ্ট করেই দেখতে পাই । সহজধর্মের প্রভাব তো প্রতিভাত হচ্ছে বাংলা লিরিকের গোড়া থেকে শেষ পর্যন্ত । আর তারই দৌলতে তো বাংলাদেশে দোল-দুর্গোৎসব পাশাপাশি চলেছে। শাক্ত ও বৈষ্ণব মনের স্বখে একত্র বাস করতে সক্ষম হয়েছে । ■ தும் মুসলমানী আমল আসতেই ধরা পড়ে গেল, বিশুদ্ধ ব্রাহ্মণ্যধর্ম বাংলাদেশের লোকদের কাধে স্থায়ীভাবে ভর করতে পারে নি । কি ভদ্রলোকদের আর কি নিম্নস্তরের লোকদের কারোরই নয়। অবশ্য গোড়াতেই তেমন কিছু হয় নি । কিন্তু মুসলমান আক্রমণের প্রথম ধাক্কার ঝড়ঝাপটা থেমে যাওয়ার পর, অরাজকতার হাত থেকে মুক্তি পেয়ে লোকে একটু থিতিয়ে বসতেই যেখানে যত লৌকিক গ্রাম্য দেবদেবী ছিলেন তারা সবাই গা-ঝাড়া দিয়ে একে একে বাইরে বেরিয়ে পড়তে লাগলেন । তাদের স্তবস্তুতি করে বিস্তর খণ্ডকাব্য রচনা হয়ে গেল । সঙ্গে সঙ্গে চেষ্টাও চলতে লাগল এইসব গ্রাম্য দেবদেবীকে জাতে তুলে নিয়ে বৈদিক ও পৌরাণিক দেবদেবীর সঙ্গে এক-আসনে বসানোর । এ-চেষ্টা এখনও চলেছে, থামে নি । মুসলমানী আমলেই আবার বাংলা লিরিকের প্রসার ঘটল । যদিও ব্রাহ্মণ্য ইতিহাস-পুরাণে এর কোনো হদিশ পাওয়া যায় না, তবুও রাধাকৃষ্ণের প্রণয়রহস্তের কথা বাংলাদেশের লোকসমাজে অনেকদিন ধরেই প্রচলিত ছিল । এ-দেশের লোকের কাছে এই প্রণয়কেলির কথা যেমন সহজে বোধগম্য তেমনি সহজেই উপভোগ্যও বটে । সুতরাং এই সময়ের কবিরা যেসব গান বাধতে লাগলেন তার বিষয়বস্তু যে এই রাধাকৃষ্ণের প্রণয়লীলাকেই নিয়ে হল, তাতে আর আশ্চর্য হবার কি আছে ? இ. ૨